Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

দাহ করতে ধরে আনতে হল বাবাকে

ময়না-তদন্তের রিপোর্টের ভিত্তিতে এ বার প্রশ্ন উঠেছে শিশুটির মৃত্যুর কারণ নিয়ে। কারণ ময়না-তদন্তের রিপোর্ট বলছে, কোনও সাধারণ দুর্ঘটনা নয়, শ্বাসরোধের চেষ্টা হওয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়ে শিশুটি।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

দীক্ষা ভুঁইয়া ও প্রকাশ পাল
শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৭ ০১:২১
Share: Save:

পৃথিবীর আলো দেখেছিল মাত্র ২৫ দিন হয়েছিল। তার পরেই ‘দুর্ঘটনায়’ আহত হয়ে তার ঠাঁই হয় আরজিকর হাসপাতালের শিশু বিভাগে। চিকিৎসা চলাকালীনই দশ দিনের মাথায় সেখানে মারা যায় শিশুটি। কিন্তু অভিযোগ, বাবা-মা এবং পরিবারের লোকজন থাকা সত্ত্বেও চার দিন ধরে শিশুটির দেহ পড়েছিল হাসপাতালের মর্গে। শেষে পুলিশ গ্রামে গিয়ে তার বাবাকে খুঁজে এনে শিশুটির দেহ তুলে দেয় পরিবারের হাতে। কিন্তু ময়না-তদন্তের রিপোর্টের ভিত্তিতে এ বার প্রশ্ন উঠেছে শিশুটির মৃত্যুর কারণ নিয়ে। কারণ ময়না-তদন্তের রিপোর্ট বলছে, কোনও সাধারণ দুর্ঘটনা নয়, শ্বাসরোধের চেষ্টা হওয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়ে শিশুটি। গলায় সে চিহ্নও রয়েছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, চলতি মাসের ১ তারিখে আরজিকর থেকে ফোন আসে একটি ২৫ দিনের শিশুকে তার দিদিমা হাসপাতালে ভর্তি করে গিয়েছেন। ভর্তির সময়ে দিদিমা জানিয়েছিলেন, পড়ে গিয়ে নাতির চোট লেগেছে। তার পর থেকে দিদিমাকে আর দেখা যায়নি। শিশুটিকে দেখতে আসেননি বাবা-মাও। তবে ভর্তির সময়ে দেওয়া নাম-ঠিকানার ভিত্তিতে পুলিশ হুগলির চণ্ডীতলা থানার গরলগাছায় দিদিমার খোঁজ পায়।

কিন্তু খবর পাঠিয়েও কেউ না আসায় উত্তর বন্দর থানার পুলিশ যায় সেই গ্রামে। সেখানেও প্রথম ক’দিন বাড়ি তালাবন্ধ দেখে ফিরে আসে পুলিশ। পরে বাবার খোঁজ মেলায় শিশুটির দেহ তাঁর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু শিশুটির চোট লাগার কারণ নিয়ে কোনও তদন্ত না করিয়েই কী করে বাবার হাতে তুলে দিল পুলিশ, প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়ে। পুলিশের কাছ থেকে কোনও সদুত্তর না মিললেও শিশুর মৃত্যুর পিছনে রহস্য রয়েছে বলে জানিয়েছে ওই গ্রামের বাসিন্দারা। তাঁরা জানিয়েছেন, শিশুটির মা মানসিক ভারসাম্যহীন। বাড়িতে একা থাকলে বেরিয়ে যান এ দিক-ও দিক। পরে এক যুবকের সঙ্গে বিয়ে হয় এবং তাঁরই সন্তান এই শিশুপুত্র। কিন্তু স্বামী শিশুটির মাকে ঠিক মতো দেখে না বলেই অভিযোগ। তাঁদের সন্দেহ, শিশুটির মৃত্যুও স্বাভাবিক নয়। কিন্তু অভিযোগ জানানোর মতো সামাজিক-অর্থনৈতিক কোনও সামর্থ্যই নেই তাঁদের।

পরে খোঁজ মেলে শিশুর দিদিমারও। পুলিশ জানায়, নাতির মৃত্যুর কথা বলতেই কেঁদে ফেলেন তিনি। ওই মহিলার দাবি, মেয়ের সঙ্গে নাতিকে নিজের কাছে এনে রেখেছিলেন। কিন্তু নাতির মৃত্যু হয়েছে জামাইয়ের কারণেই। জামাই নাতিকে শ্বাসরোধ করে মারতে গিয়েছিল বলেও জানান তিনি। পুলিশের কাছে কি দায়ের হয়েছে তেমন কোনও অভিযোগ? পুলিশ সূত্রের খবর, দিদিমা তরফে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। ময়না-তদন্তের রিপোর্ট কি শিশুটির দিদিমার কথার সঙ্গে মিলেছে? পুলিশ এখনই সে বিষয়ে কোনও উত্তর দিতে রাজি নয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE