মণ্ডপের সাজগোজ শেষ। ভোরের আলো ফুটলেই বাজতে শুরু করবে বিয়ের সানাই। কিন্তু তার আগেই প্রতিবেশীর ফোনের সূত্র ধরে প্রগতি ময়দান থানা এলাকার মল্লিকপাড়ায় পৌঁছে গেল পুলিশ ও এক বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। রুখে দিল আরও এক নাবালিকার বিয়ে। ঘটনাচক্রে গত ৭ মার্চ এই থানা এলাকাতেই আর এক নাবালিকার বিয়ে রুখেছিল পুলিশ। তবে সে বার খোদ বিয়ের কনেই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার দফতরে ফোন করে বিয়ে রোখার আর্জি জানিয়েছিল।
কী হয়েছিল এ দিন ?
ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সূত্রের খবর, বুধবার দুপুরে তাঁদের হেল্পলাইনে একটি ফোন আসে। পুরুষকণ্ঠে কেউ জানান, ধাপার মল্লিকপাড়ায় ১৬ বছরের একটি মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছে। বিয়ের সব প্রস্তুতি সারা। ওই সংস্থা খবর পাঠায় কলকাতা শিশুকল্যাণ সমিতির কাছে। বিষয়টি শুনে সমিতির চেয়ারম্যান অমিত ভট্টাচার্য আর দেরি করেননি। সঙ্গে সঙ্গে তিনি খবর দেন প্রগতি ময়দান থানায়।
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটির কো-অর্ডিনেটর দিলীপ বসু জানান, পুলিশ পৌঁছনোর আগে প্রথমে তাঁদের কর্মীরা গিয়ে বিয়েবাড়ির চারপাশ ‘রেকি’ করে আসেন। রাত আটটা নাগাদ পুলিশ গিয়ে ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে। রাতে মেয়েটিকে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার আশ্রয়ে রাখা হয়। তবে এই ঘটনায় বুধবার রাত পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি।
কলকাতা শিশুকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান অমিত ভট্টাচার্য বলেন, “মেয়েটিকে আমরা উদ্ধার করতে পেরেছি। আগামী সোমবার সমিতির সামনে তাকে হাজির করানোর জন্য আমরা ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে নির্দেশ দিয়েছি।” শিশুকল্যাণ সমিতি সূত্রের খবর, গত মাসে একই এলাকা থেকে উদ্ধার করা মেয়েটি এখনও হোমে রয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন উদ্ধার হওয়া নাবালিকা মেয়েটির বাড়িতে তার মা ও দাদা আছেন। তাঁরাই বিয়ে ঠিক করেছেন। তবে পরিবারটির আর্থিক অবস্থা খুব একটা ভাল নয়। সেই কারণেই এ ভাবে সাবালক হওয়ার আগে মেয়েটির বিয়ে ঠিক করা হয়েছিল কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, পাত্র ওই এলাকারই বাসিন্দা। তার সম্পর্কে বিশদ জানতে ওই কিশোরীর মা ও দাদাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। কথা বলা হচ্ছে মেয়েটির সঙ্গেও।
শিশুকল্যাণ সমিতি সূত্রের খবর, কলকাতার মধ্যে প্রগতি ময়দান থানা এলাকা থেকেই বেশির ভাগ নাবালিকার বিয়ের খবর মিলছে। কেন ওই এলাকায় এমন হচ্ছে, তা জানতে সমাজকল্যাণ দফতরের সঙ্গে কথা বলবে সমিতি। নাবালিকা-বিয়ে রুখতে ওই এলাকায় বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে সচেতনতা প্রসারের কাজে লাগানোরও পরিকল্পনা রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy