Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
সুলংগুড়ি

পাট্টা বিলিতে উদ্যোগী প্রশাসন

সামনে বিধানসভার ভোট। তার আগে নিউটাউনের জ্যাংরা-হাতিয়ারা পঞ্চায়েতের সুলংগুড়ির বাসিন্দাদের পাট্টা বিলির উদ্যোগ নিচ্ছে রাজ্যের উদ্বাস্তু ও পুনর্বাসন দফতর। প্রায় আড়াই হাজার বাসিন্দাদের সেখানে পাট্টা দেওয়া হবে। পাট্টার জন্যে স্থানীয় বিধায়কের দেওয়া শংসাপত্রও এসে গিয়েছে।

বদলাবে ছবিটা। — শৌভিক দে

বদলাবে ছবিটা। — শৌভিক দে

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৫ ০০:৪৬
Share: Save:

সামনে বিধানসভার ভোট। তার আগে নিউটাউনের জ্যাংরা-হাতিয়ারা পঞ্চায়েতের সুলংগুড়ির বাসিন্দাদের পাট্টা বিলির উদ্যোগ নিচ্ছে রাজ্যের উদ্বাস্তু ও পুনর্বাসন দফতর। প্রায় আড়াই হাজার বাসিন্দাদের সেখানে পাট্টা দেওয়া হবে। পাট্টার জন্যে স্থানীয় বিধায়কের দেওয়া শংসাপত্রও এসে গিয়েছে। পাট্টা বিলির ৯০ শতাংশ কাজ এগিয়ে গিয়েছে বলেই দাবি উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের। সব কিছু ঠিক চললে সেই পাট্টা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত দিয়ে সুলংগুড়ির মানুষের হাতে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন নিউটাউনের বিধায়ক তথা বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্ত।

দেশভাগের পরে বাংলাদেশ থেকে উদ্বাস্তু এসে সুলংগুড়িতে বসতি তৈরি করেছিলেন। অভিযোগ, বাম জমানায় একাধিক বার সেখানে বাসিন্দাদের পাট্টা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। এমনকী ২০০৫ সালে পা়ট্টার জন্য তাঁদের থেকে স্থানীয় সিপিএম নেতারা টাকাও নিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। সেই রশিদও দেখিয়েছেন স্থানীয় মানুষ।

উত্তর ২৪ পরগনা জেলার উদ্বাস্তু ও পুনর্বাসন বিভাগের অফিসার ইন চার্জ সৌমেন পাল বলেন, ‘‘ওই কলোনিতে কে কোথায় বসবাস করেন, তার মানচিত্র তৈরির কাজ শেষ। এখন কে কোন জায়গায় রয়েছেন তার প্রমাণপত্র খতিয়ে দেখার কাজ চলছে। সব কিছু ঠিক চললে মাস তিনেকের মধ্যেই পাট্টা বিলির কাজ শুরু করা সম্ভব হবে।’’

বাগজোলা (নিম্ন) খালের ধার ঘেঁষে নিউটাউন আর ভিআইপি রোডের মাঝে রয়েছে ওই কলোনি। বসবাসকারী সিংহভাগ নিম্নবিত্ত বলে জানিয়েছে প্রশাসন। তাঁদের অভিযোগ, ভোট এলেই পাট্টার ‘কুমির ছানা’ দেখাত সিপিএম। ভোট মিটে গেলে আর নেতারা চিনতেন না।

স্থানীয় জ্যাংরা-হাতিয়ারা (২) পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূল শিবশঙ্কর গায়েনের অভিযোগ, ‘‘সিপিএম নেতারা বাসিন্দাদের থেকে পাট্টা দেওয়ার জন্য টাকা নিয়েছিলেন। কিন্তু মাত্র ৫০ টাকা করে রশিদ দেওয়া হয়েছিল। কয়েক লক্ষ টাকা সিপিএম ওই ভাবে আত্মসাৎ করে সুলুংগুড়ি থেকে। তাই নিয়ে আমরা তৎকালীন স্থানীয় বিধায়ক রবীন মণ্ডলের বাড়িতে গিয়ে ধর্নাও দিয়েছিলাম। কিন্তু পাট্টা দেওয়া হয়নি। আমরা ক্ষমতায় আসার পরেই বর্তমান বিধায়ক সুলংগুড়িতে পাট্টা বিলির জন্য নতুন করে উদ্যোগ নেন।’’

পাট্টার জন্য স্থানীয় সিপিএম নেতাদের টাকা নেওয়ার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন রাজারহাটের প্রাক্তন বিধায়ক সিপিএমের রবীন মণ্ডল। বরং তাঁর পাল্টা দাবি, ‘‘পাট্টা তৈরির কাজ তো আমরা অনেকটাই এগিয়ে রেখে এসেছিলাম। তৃণমূলের সরকারের আরও আগে সুলংগুড়িতে পাট্টা বিলি করা উচিত ছিল।’’

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, শহরের এত কাছে থাকা সত্ত্বেও সুলুংগুড়ি, জগৎপুরের মতো জায়গা আজও উদ্বাস্তু কলোনির তকমা নিয়েই রয়েছে। আলোর অভাব, নিচু জমি, ভাঙাচোরা রাস্তা নিয়েও অভিযোগ রয়েছে। কাছেই নিউটাউনে নির্মাণকাজ আর সিন্ডিকেট রাজের জন্য প্রায়ই খবরে থাকে। প্রশ্ন উঠেছে পাট্টা বিলির পরে কি এখানেও প্রোমোটিং শুরু হয়ে যাবে? এই প্রশ্নের উত্তরে শিবশঙ্করবাবু বলেন, ‘‘সে পরের কথা। সরকারের পাট্টা বিলির উদ্যোগে আপাতত খুশি স্থানীয় বাসিন্দারা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE