নিউ টাউনের যাত্রাগাছিতে বৃহস্পতিবার রাতে গুলি চলার ঘটনায় আরও দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল পুলিশ। শুক্রবার নিউ টাউন থেকে ধৃত ওই দু’জনের নাম মদন নস্কর ও বিকাশ নস্কর। পুলিশ জানায়, মদন নস্কর উত্তর ২৪ পরগনার তৃণমূলের জেলা পরিষদ সদস্য গৌর নস্করের ভাই। এ নিয়ে এই ঘটনায় চার জনকে গ্রেফতার করা হল। বিধাননগর কমিশনারেটের এডিসিপি সন্তোষ নিম্বলকর বলেন, “এলাকায় আপাতত কোনও গণ্ডগোল নেই। তবে পুলিশের টহলদারি চলছে।”
বৃহস্পতিবার রাতে যাত্রাগাছিতে জ্যাংরা-হাতিয়ারা ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের সদস্য প্রহ্লাদ মণ্ডলের বাড়ির সামনে গণ্ডগোল হয়, গুলি চলে। গুলিতে আহত হন প্রহ্লাদবাবু। কয়েক জনকে কোপানোও হয়। রাতেই প্রহ্লাদবাবুদের অভিযোগের ভিত্তিতে দু’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অভিযোগ, এলাকার তৃণমূলের বিধায়ক অনুগামী ও সাংসদ অনুগামীদের মধ্যে সিন্ডিকেটের দখল নিয়ে গণ্ডগোলের জেরেই এই ঘটনা।
পুলিশ জানিয়েছে, দুই তরফই একে অপরের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ আনে। বৃহস্পতিবার রাতে প্রহ্লাদবাবুদের গোষ্ঠীর অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার হয় দু’জন। শুক্রবার আবার প্রহ্লাদবাবুদের বিরোধী গোষ্ঠীর অভিযোগে দু’জনকে ধরা হয়। পুলিশ জানায়, ঘটনায় প্রবীর মণ্ডল নামে এক যুবক আহত হন। প্রহ্লাদবাবুদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, গণ্ডগোলের সময়ে তাঁদের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। তা দিয়ে তাঁরা গুলিও চালান।
তবে এ দিন মদন ও বিকাশ নস্করের গ্রেফতারকে সাজানো ঘটনা বলে দাবি করেছেন এলাকার বিধায়ক সব্যসাচী দত্ত। তাঁর বক্তব্য, যে দিন ঘটনাটি ঘটল সে দিন কোনও অভিযোগ হল না। পরের দিন সাজানো অভিযোগ করা হল। তিনি বলেন, “যে গুলি খেল তার বিরুদ্ধেই অস্ত্র রাখার অভিযোগ উঠল। তাকেই পুলিশ বাড়িতে ধরতে গেল। শাসক গোষ্ঠীর অঙ্গুলি হেলনেই এ সব হচ্ছে।”
অন্য দিকে এই গণ্ডগোলের আবহে এলাকার সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদার শনিবার বিকেলে নিউ টাউনের চিনার পার্কে আসেন। দলীয় কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ছিলেন, রাজারহাট নিউ টাউনের তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি আফতাবউদ্দিনও। তাঁর দাবি, “দিদি প্রতি মাসেই একটি করে শনিবার চিনার পার্কের অফিসে আসেন। সেই রুটিন অনুযায়ীই আজ এলাকার মানুষ ও দলীয় কর্মীদের সমস্যার কথা শোনেন দিদি।” কাকলিদেবী অবশ্য বলেন, “পুলিশ প্রশাসনের কাছে জানব, কী নিয়ে বারবার গণ্ডগোল হচ্ছে। তবে আমার দলের লোকেরা বলেছেন এলাকা শান্ত আছে।”
নিউ টাউনে সিন্ডিকেটের গোলমাল মেটাতে সব গোষ্ঠীকে নিয়েই পুলিশ বেশ কয়েক বার মিটিং করেছে। কিন্তু অভিযোগ, কোনও বারই এই মিটিং ফলপ্রসু হয়নি। মাঝপথেই তা ভেস্তে গিয়েছে। নিউ টাউনের গোমলাল থামার কোনও লক্ষণ নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy