শুরু হয়েছে সংস্কার। নিজস্ব চিত্র
রামলাল বাজারে সংস্কার শুরু করল কলকাতা পুরসভার বাজার দফতর। এত দিন বাজারটি বেহাল অবস্থায় ছিল। পিলার থেকে পলেস্তরা খসে রড বেরিয়ে পড়েছিল। ছাদ মাঝেমধ্যেই চাঙড় ভেঙে পড়ত। চাঙড় ভেঙে ছোটখাটো দুর্ঘটনাও ঘটেছে। এই বাজারে রয়েছে একটি মাত্র নলকূপ।
অনেক চেষ্টায় সেখান থেকে অল্প জল মেলে। বাজারে কোনও রিজার্ভারও নেই। নিয়মিত বাজার পরিষ্কার হয় না। বাজারের নিজস্ব কোনও ভ্যাট নেই। ড্রামে ময়লা বোঝাই করে রাখা থাকে পুরসভার ময়লা তোলার গাড়ির অপেক্ষায়। মাঝেমধ্যেই ড্রাম উপচে পড়ে।
পুরসভা সূত্রে খবর, এখন বাজারের পিলারগুলি চওড়া করার কাজ চলছে। দেড় দু’ফুট চওড়া পিলারগুলোকে আড়াই থেকে তিন ফুট চওড়া করা হচ্ছে। মেয়র পারিষদ (বাজার) তারক সিংহ জানান, ছাদের যেখানে যেখানে সমস্যা রয়েছে সেগুলিও মেরামতি হবে। চাতালে মার্বেল বা ওই জাতীয় কিছু বসানো হবে। মেঝেতে পেভার ব্লক বসবে। জলের সমস্যা মেটাতে জলের লাইনের ব্যবস্থাও হবে। বাজারে সাদা, নীল রং করা হবে।
ব্যবসায়ী সূত্রের খবর, প্রায় ৬০ বছরের পুরনো এই রামলাল বাজার। ১৯৮৭-তে বাজারটি কলকাতা পুরসভা অধিগ্রহণ করে। অনেক বছর ধরেই নানা সমস্যায় জর্জরিত এই বাজার। হালতু-পূর্বাচল, লাল গেট সাঁপুইপাড়া, হালতু স্কুলরোড, তারাপীঠ আশুতোষ কলোনি, শহিদ নগরের কিছু অংশের বাসিন্দারা এই বাজারের উপরে নির্ভরশীল। বাজারে নিয়মিত আসেন কুমার সেনাপতি। তাঁর কথায়: “অনেক সমস্যা আছে বাজারে। শৌচাগার থাকলেও, জল বা আলো না থাকায় সকলেরই সমস্যায় পড়তে হয়। বহু দূর থেকে বিক্রেতারা আসেন এখানে। এঁদের অনেকেই মহিলা। ফলে তাঁদের ক্ষেত্রে সমস্যা বেশি হয়।”
ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, বাজারে ‘এ’, ‘বি’ এবং ‘সি’ এই তিনটি জোন আছে। প্রতিটি জোনে ২৫টি করে মাছ ও সব্জির দোকান রয়েছে। পুরো বাজারে একটি খাসি এবং একটি মুরগির মাংসের দোকান রয়েছে। ব্যবসায়ী সুকুমার দাস বলেন, “অধিগ্রহণের পরে পুরসভা বার কয়েক
ছোটখাটো সংস্কার করেছে। এ বার মে মাস থেকে কাজ করছে পুরসভা। আশা করব সমস্যাগুলি মিটবে।” অন্য এক ক্রেতা জানান, প্রায় দেড় বছর আগে কয়েকটি পিলারে পুরসভা অগ্নিনির্বাপক লাগিয়েছিল। তা খুলে পড়ে গিয়েছে।
‘রামলাল পুর-বাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি’র সভাপতি মলয়কুমার বিশ্বাস বলেন, “আমরা দীর্ঘ দিন ধরেই সমস্যাগুলি নিয়ে পুরসভার সঙ্গে আলোচনা করছিলাম। এ বার পুরসভা কাজ শুরু করায় ব্যবসায়ীরা খুশি। তবে কাজ ধীরে চলায় স্টল খুলতে সমস্যা হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। তাই ব্যবসায়ীরা কাজ দ্রুত শেষ করার দাবি তুলেছেন। সেই সঙ্গে বাজারের জন্য একটি স্থায়ী ভ্যাট এবং শৌচাগারে জল-আলোর ব্যবস্থা করার খুব প্রয়োজন।”
তারকবাবু বলেন, “দোকানপাট শেষ হলে দুপুর বেলায় কাজ করছেন মিস্ত্রীরা। তাই কাজ একটু ধীর গতিতে হবেই। আশা করা হচ্ছে আগামী ছ’মাসের মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যাবে। নতুন করে অগ্নিনির্বাপক বসানো হবে। ভ্যাটের কী ব্যবস্থা করা যায় সংশ্লিষ্ট বিভাগের সঙ্গে আলোচনা করে ঠিক করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy