দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটি। শৌভিক দে-র তোলা ছবি।
ফের স্কুলগাড়ি দুর্ঘটনা। ফের সেই সল্টলেক। ঘটনায় চার জন ছাত্র সামান্য আহত হয়েছে। ঘটনায় স্কুলবাস চালককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। শুক্রবার সকালে সল্টলেকের এই ব্লকের কাছে এই ঘটনাটি ঘটে।
এর আগেও সল্টলেকে স্কুল বাস থেকে পড়ে গিয়ে এক স্কুল ছাত্রের মৃত্যু হয়েছিল। তার পরেও কয়েকবার স্কুলবাসের দুর্ঘটনা ঘটে। কয়েকজন ছাত্র আহতও হয়েছিল। এর পরে পুলিশ সচেতনতার প্রচারে রকমারি বন্দোবস্ত করার পাশাপাশি ট্রাফিক নজরদারিতে জোর দেয়। স্কুলগাড়ি কিংবা স্কুলবাসগুলির রক্ষণাবেক্ষণে জোর দেওয়ার কথাও কিন্তু তাতেও যে হুঁশ ফিরছে না, শুক্রবার সকালের ঘটনা ফের তা প্রমাণ করে দিল।
তবে এ দিনের দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে শুধু চালকদের রেষারেষিই কিংবা গাফিলতি নয়, প্রশাসনের ব্যর্থতা নিয়েও সরব হয়েছেন বাসিন্দারা।
রাজারহাট-নিউটাউনের একটি বেসরকারি স্কুলের সেই দুর্ঘটনাগ্রস্থ স্কুলগাড়ি চালকের দাবি, তিনি জনা পাঁচ ছাত্র নিয়ে উল্টোডাঙার দিক থেকে করুণাময়ীর দিকে যাচ্ছিলেন। এই ব্লকের ৩২১ নম্বর বাড়ির কাছে বড় রাস্তার কাছে দুর্ঘটনা ঘটে।
চালকের দাবি, একটি বেসরকারি রুটের বাস তাঁর গাড়িকে বাঁ দিক থেকে ওভারটেক করার চেষ্টা করছিল। তিনি জায়গা ছেড়ে দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু দুর্ঘটনাস্থলে রাস্তার মাঝে একটি ম্যানহোল বসে গিয়ে তার চারপাশ উঁচু হয়েছিল। যা দূর থেকে নজরে পড়েনি। স্কুলগাড়ির সামনের দিকে একটি চাকা সেখানে পড়ে ফেটে যায়। দ্রুত ব্রেক কষলেও স্কুলগাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রথমে ডান দিকে বুলেভার্টে ধাক্কা মেরে উল্টোদিকে পাল্টি খেয়ে যায়। চাকা উপরের দিকে উঠে যায়।
দ্রুত এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে ছুটে যান। স্কুলগাড়ির পেছনের দিকের দরজা খুলে ছাত্রদের বার করে আনা হয়। তাঁদের স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়।
পুলিশ অবশ্য চালকের দাবি খতিয়ে দেখছে। তবে প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই স্কুলগাড়ির চাকাগুলি পুরনো ছিল। এবং প্রতক্ষ্যদর্শীদের একাংশের অভিযোগ, পুলকার চালকই ওভারটেক করছিলেন।
তবে শুক্রবার রাত পর্যন্ত সে বিষয়ে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ।তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সল্টলেকের ভিতরে গাড়িচালকদের যে ভাবে ওভারটেক করার প্রবণতা বাড়ছে, তার জেরে মাঝেমধ্যে দুর্ঘটনা ঘটছে।
পাশাপাশি রাস্তা খারাপ হলেও যে মেরামত করা হয় না, তা নিয়ে বিধাননগর পুরনিগমের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন বাসিন্দারা।
স্কুল কর্তৃপক্ষ সূত্রের দাবি, পুলকার ব্যবহার থেকে দূরে থাকতে অভিভাবকদের কাছে আবেদন করা হয়েছে। তার পরেও অভিভাবকদের একাংশ পুলকারে তাঁদের ছেলেমেয়েদের স্কুল পাঠাচ্ছেন। যদিও অভিভাবকদের একাংশের পাল্টা দাবি, নিতান্ত বাধ্য না হলে পুলকারে কেউ নিজের ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠায় না। স্কুলবাসে পাঠাতেও রকমারি সমস্যা দেখা দেয়।
পুলকার ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অরূপম দত্ত বলেন, ‘‘বার বার বলা হচ্ছে, ছেলেমেয়েদের পাঠানোর আগে পুলকারগুলির বৈধতা দেখে নিন অভিভাবকেরা। কিন্তু অনেকে সে দিকে নজর দিচ্ছেন না। সে ক্ষেত্রে পুলিশ প্রশাসনেরও ভূমিকা রয়েছে।’’
তাঁর দাবি, বৈধ পারমিট থাকলে বছরে সেই গাড়ির ন্যূনতম রক্ষণাবেক্ষণ হবেই।
এ দিকে রাস্তার মাঝে বেহাল হয়ে পড়ে থাকা ম্যানহোলগুলি নিয়ে বিধাননগর পুরনিগমের এক কর্তা জানান, বর্ষার কারণে বেশ কিছু রাস্তা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। দ্রুত তা মেরামত করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy