মাত্র আড়াই ঘণ্টার জন্য বাড়ি ফাঁকা রেখে বেরিয়েছিলেন সকলে। ফিরে দেখেন, সামনের দরজা বন্ধই রয়েছে। কিন্তু পিছনের দরজা কেটে ঘরে ঢুকে আলমারি খুলে লুঠপাট চালিয়ে পালিয়েছে চোরেরা। অথচ প্রতিবেশীরা কেউ টেরই পাননি। রবিবার সন্ধ্যায় সল্টলেকের আইসি ব্লকে কেন্দ্রীয় আবাসনের ঘটনা। তদন্ত শুরু করেছে বিধাননগর (দক্ষিণ) থানার পুলিশ। ঘটনায় হতভম্ব ওই আবাসনের বাসিন্দারা।
পুলিশ জানায়, ওই আবাসনে এক বহুতলের একতলায় সপরিবার থাকেন রাষ্ট্রীয় পরীক্ষাগারের বিজ্ঞানী দীপঙ্কর দত্ত। রবিবার স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েকে নিয়ে মেলায় যান তিনি। পুলিশের কাছে অভিযোগে দীপঙ্করবাবু জানান, রবিবার সাড়ে পাঁচটা নাগাদ তাঁরা বেরোন। রাত আটটা নাগাদ ফিরে বাইরের তালা খুলে তাঁরা দেখেন, সদর দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। সন্দেহ হয় দীপঙ্করবাবুর।
বাড়ির পিছন দিকে গিয়ে দেখেন, দরজার নীচের অংশ কাটা। ঘরে আলো জ্বলছে, ঘুরছে পাখাও। দু’টি শোয়ার ঘর, খাওয়ার ঘর লণ্ডভণ্ড। ওই পরিবারের অভিযোগ, একটি ঘরের আলমারি থেকে খোয়া গিয়েছে সোনা ও রুপোর গয়না-সহ ২২ হাজার টাকা, ক্যামেরা, এলসিডি টিভি। আলমারি থেকে চুরি গিয়েছে ছেলে-মেয়ের স্কুলের পোশাকও। এর পাশাপাশি দীপঙ্করবাবু জানান, চোরেরা টেবিলে রাখা ফল খেয়ে গিয়েছে। নিয়ে গিয়েছে ডিমও। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, দরজার ওই কাটা অংশ দিয়েই বাড়িতে ঢুকেছিল চোরেরা।
দীপঙ্করবাবু ও স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, আবাসনের নিরাপত্তার হাল খুব খারাপ। কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী না হয়েও প্রচুর অবাঞ্ছিত লোকজন এই আবাসনে রয়েছেন। বাসিন্দাদের একাংশের বক্তব্য, সিপিডব্লিউডি-কে বার বার বলা সত্ত্বেও কাজ হয়নি। দীপঙ্করবাবুর প্রতিবেশী সমিত নিয়োগী বলেন, “বিভিন্ন প্রয়োজনে প্রায়ই কলকাতার বাইরে যাই। এমন হলে খুবই আশঙ্কার বিষয়।” তদন্তকারীদের অনুমান, এই বাড়িটির উপরে দুষ্কৃতীদের নজরদারি ছিল। বেশ কিছুদিন ধরে নজর রাখার পরেই তারা চুরি করেছে। তবে গোয়েন্দাদের ধন্দ, চোরেরা ভরসন্ধ্যায় অত বড় এলসিডি টিভি নিয়ে গেলেও তা সকলের নজর এড়াল কী করে?
বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুলিশ নজরদারি বাড়ালেও চুরির ঘটনা থামছে না সল্টলেকে। পুলিশ মহলের একাংশের বক্তব্য, বিভিন্ন থানায় যে সংখ্যক পুলিশকর্মী রয়েছেন, তা দিয়ে সাধারণ আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখা হয়। কিন্তু সল্টলেকে এত গুরুত্বপূর্ণ সরকারি অফিস, বিভিন্ন মেলা, যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের খেলা, বর্তমানে সিজিও ব্লকে সিবিআই অফিসের নিরাপত্তা সব মিলিয়ে একটা প্রভাব তো পড়েই। এক পুলিশকর্তা বলেন, আগের তুলনায় নজরদারি অনেকটা বাড়ানো হয়েছে। অভিযান চালিয়ে বহু দুষ্কৃতীদেরও গ্রেফতার করা হয়েছে। এই ঘটনার সমস্ত দিক বিশদে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আগের কোনও চুরির ঘটনার সঙ্গে এই চুরির যোগ আছে কি না, তারও তদন্ত হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy