জমে রয়েছে আবর্জনা।— অরুণ লোধ
এক দিকে নিয়ম করে সংস্কার হচ্ছে। অন্য দিকে, সেখানেই ফেলা হচ্ছে বর্জ্য। ফলে সংস্কারের কয়েক মাসে পরেই আগের বেহাল অবস্থায় ফিরে যায় খালগুলি। তাই লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করেও খাল সংস্কারের দীর্ঘস্থায়ী সুফল মেলে না। ফলে প্রতি বর্ষায় বানভাসির ছবি ফিরে আসে। এই অবস্থা দক্ষিণ শহরতলির মণিখালি খালের।
মহেশতলা পুর এলাকার নিকাশি ব্যবস্থার অনেকটাই নির্ভর করছে নিউ মণিখালি, ওল্ড মণিখালি, চিতের, সুতি, মীরপুর, চুনরি, চোয়ের মায়ের হানা-সহ বেশ কয়েকটি খালের উপরে। এই পুরসভায় মোট ৩৫টি ওয়ার্ড। এর মধ্যে ছয়, সাত, আট, নয়, ১১, ১২, ১৩, ১৪, ১৫, ১৬-সহ বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডের নিকাশি নির্ভর করে মণিখালির উপরে। সূত্রের খবর, জিঞ্জিরাবাজার থেকে সরকার
পোলের আগে পর্যন্ত মণিখালির দায়িত্বে সেচ দফতরের মেট্রোপলিটন ড্রেনেজ ডিভিশন-১। সরকার পোল থেকে আক্রা ফটক, গঙ্গায় মিশে যাওয়ার ঠিক আগে ফুটঘর পর্যন্ত খালের দায়িত্বে সেচ দফতরের সাবার্বান ডিভিশন।
সূত্রের খবর, বিক্ষিপ্ত ভাবে এই খালের সংস্কার হয়েছে। তা সত্ত্বেও কোথাও খালপাড়ে গজিয়ে ওঠা জবরদখলকারীদের বসতি, কোথাও বা বর্জ্যে বোঝাই হয়ে গিয়েছে খালের অনেকটা অংশ। অভিযোগ মানতে নারাজ সেচ দফতর। দফতর সূত্রের খবর, দু’বছর আগে জিঞ্জিরাবাজারের দিকের মণিখালির সংস্কার হয়েছে। বাকি অংশের কাজ হয়েছে গত বছর।
সাবার্বান ডিভিশনের এক আধিকারিক ইঞ্জিনিয়ার জানাচ্ছেন, গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে মণিখালির ৪৩১৫ থেকে ৬১০০ মিটার অর্থাৎ ১৭৮৫ মিটার অংশের কচুরিপানা ও আগাছার সংস্কার হয়েছিল। মেট্রোপলিটন ড্রেনেজ ডিভিশন-১-এর এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, বাজার সংলগ্ন এলাকায় খালের পরিস্থিতি বেহাল হওয়ার কারণ, মূলত মানুষের অসচেতনতা। বছর কয়েক আগে ওখানে সংস্কার হয়েছিল। ব্যবসায়ীদের সচেতনও হতে বলা হয়েছিল। এর বেশি কিছু করার নেই সেচ দফতরের। যদিও সেচ দফতর এবং স্থানীয় পুরসভার তরফে সচেতনতায় কোনও প্রচার বা নজরদারি কথা মানছেন না বাসিন্দা থেকে ব্যবসায়ী। তাঁদের দাবি, স্থানীয় মহেশতলা পুরসভাও খালপাড়ে ওয়ার্ডের আবর্জনা ফেলে। যদিও পুর প্রধান দুলাল দাস বলছেন, ‘‘পুরসভা ওখানে কোনও বর্জ্য ফেলে না। স্থানীয় মানুষের অসচেতনতার জন্য এই অবস্থা।’’
কেইআইআইপি সূত্রের খবর, মণিখাল ও তার শাখা বেগর, পর্ণশ্রী, সিপিটি খালের পুরোদস্তুর সংস্কারের কাজ হয়েছিল ২০০৬-’১২ সালে। কিন্তু ডাউন মণিখালের দিকে প্রায় দু’ কিলোমিটার অংশের সংস্কার তখন ঠিক ভাবে করা যায়নি। কারণ, ওই অংশ তখনই জবরদখল হয়েছিল। সেই সময় মণিখালির জল গঙ্গায় বের করতে ওখানে একটি পাম্পিং স্টেশনও করা হয়। এর পর থেকে আর কোনও কাজ ওখানে কেইআইআইপি করেনি।
সেচ দফতর জানাচ্ছে, মণিখালের জল বেরনোর সমস্যা রয়েছে সন্তোষপুর রেল স্টেশনের কাছের রেলব্রিজের নীচের অংশেও। খাল ওখানে যথেষ্ট সরু। এর জন্যে জল বেরোতে বাধা পাচ্ছে। সম্প্রতি দফতরের পক্ষ থেকে রেলকে ওই অংশ চওড়া করার জন্য বলা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy