Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

তরুণীকে গণধর্ষণ, ধৃত তিন নাবালক-সহ ছয়

এই ঘটনায় প্রাপ্তবয়স্ক যে তিন জন ধরা পড়েছে, তারা হল: মহেশতলার সুমিত সিংহ, বন্দর এলাকার অভিষেক কুমার এবং পর্ণশ্রীর প্রদীপ চৌধুরী। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, মূল অভিযুক্ত ওই কিশোর এলাকায় ইভটিজিং-সহ নানা দুষ্কর্মে জড়িত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:৪০
Share: Save:

বাগুইআটি থেকে তারাতলায় মাসির বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন এক তরুণী। মাসি তাঁকে পাঠিয়েছিলেন মাংস কিনতে। অভিযোগ, সেই মাংসের দোকানের কিশোর কর্মচারী ও তার বন্ধুরা মিলেই একটি ফ্ল্যাটে নিয়ে গিয়ে পরপর ধর্ষণ করল ২৭ বছরের ওই তরুণীকে। শুক্রবার দুপুরের এই ঘটনার পরে ধর্ষিতার বাড়ির লোকজনই মূল অভিযুক্ত সেই কিশোরকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পুলিশ জানিয়েছে, তার বয়স বছর চোদ্দো-পনেরো। তাকে জেরা করে এই ঘটনায় জড়িত বাকি পাঁচ জনকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ধৃত ছ’জনের মধ্যে তিন জনই নাবালক।

এই ঘটনায় প্রাপ্তবয়স্ক যে তিন জন ধরা পড়েছে, তারা হল: মহেশতলার সুমিত সিংহ, বন্দর এলাকার অভিষেক কুমার এবং পর্ণশ্রীর প্রদীপ চৌধুরী। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, মূল অভিযুক্ত ওই কিশোর এলাকায় ইভটিজিং-সহ নানা দুষ্কর্মে জড়িত। বাকি অভিযুক্তেরাও বন্দর এলাকার কুখ্যাত দুষ্কৃতী।

ধর্ষিতার পরিণতি ততটা ভয়াবহ না হলেও এই ঘটনা দিল্লির জ্যোতি সিংহের (নির্ভয়া নামেই যিনি বেশি পরিচিত) গণধর্ষণের স্মৃতি উস্কে দিয়েছে। সেই ঘটনাতেও ধর্ষণকারীদের মধ্যে সব থেকে বেশি ভয়ঙ্কর ছিল এক নাবালকই।

কী ঘটেছিল তারাতলায়?

পুলিশ জানিয়েছে, ধর্ষিতা তরুণী বাগুইআটির বাসিন্দা। তারাতলায় মাসির বাড়িতে এসেছিলেন। শুক্রবার দুপুরে মাসি তাঁকে মাংস কিনতে পাঠান। অভিযোগ, তরুণী মাংসের দোকানে গেলে কিশোর কর্মচারী তাকে বলে, দোকানে মাংস শেষ। কাছেই পোর্ট ট্রাস্টের একটি কোয়ার্টার্সে মাংস রাখা আছে। সেখানে গেলে মাংস মিলবে। ওই কিশোরের কথায় বিশ্বাস করে তরুণী তার সঙ্গে সেই পরিত্যক্ত কোয়ার্টার্সে যান। কিশোর ইতিমধ্যেই ফোনে বন্ধুদের খবর পাঠিয়ে দেয়।
তরুণীর অভিযোগ, ওই কিশোরের বন্ধুরা এসে কাপ়়ড় দিয়ে তাঁর মুখ বেঁধে দেয় এবং ছুরি দেখিয়ে পরপর ছ’জন তাঁকে ধর্ষণ করে। সেই ছবি মোবাইলে ক্যামেরাবন্দি করে রাখে ধর্ষকেরা। তরুণীকে হুমকি দিয়ে তারা বলে, ধর্ষণের কথা জানাজানি হলে ওই ভিডিও এবং ছবি হোয়াট্সঅ্যাপ ও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়া হবে।

পুলিশ সূত্রের খবর, ধর্ষকদের হাত থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে ওই তরুণী মাসির বাড়িতে ফিরে যান।
শারীরিক কষ্ট এবং আতঙ্কে কাঁপছিলেন তিনি। তাঁকে দেখে পরিজনেরা কী হয়েছে জানতে চাওয়ায় তরুণী গোটা ঘটনা খুলে বলেন। তার পরেই মাসির পরিবারের লোকজন ওই মাংসের দোকানে গিয়ে সেই কিশোরকে মারতে মারতে থানায় নিয়ে যান। পুলিশ সূত্রের দাবি, ওই কিশোরকে জেরা করে বাকিদের কথা জানা যায় এবং বিভিন্ন জায়গায় হানা দিয়ে তাদের পাকড়াও করা হয়। ওই তরুণীর ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়েছে এবং চিকিৎসকের রিপোর্টে ধর্ষণের কথা জানা গিয়েছে। তরুণী এবং অভিযুক্তদের পোশাক ফরেন্সিক পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে।

শনিবার সুমিত, অভিষেক এবং প্রদীপকে আলিপুর আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক তাদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে। নাবালক তিন জনকে জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের সামনে হাজির করানো হয়। বিচারক তাদের হোমে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

arrest gangrape juvenile
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE