Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

দমকল উল্টে আহত ৬ কর্মী

দুর্ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছনো তাঁদের কাজ। অথচ তা করতে গিয়ে গাড়ি উল্টে দুর্ঘটনায় পড়ছেন খোদ দমকলকর্মীরাই। শনিবার দুপুরে যেমন হল বাইপাস লাগোয়া পঞ্চান্নগ্রামে। ছ’জন দমকলকর্মী জখম হয়েছেন, তাঁদের এক জনের আঘাত গুরুতর।

বিপত্তি: উল্টে যাওয়া গাড়ি উদ্ধার। শনিবার। নিজস্ব চিত্র

বিপত্তি: উল্টে যাওয়া গাড়ি উদ্ধার। শনিবার। নিজস্ব চিত্র

মেহবুব কাদের চৌধুরী
শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৭ ০১:০৪
Share: Save:

দুর্ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছনো তাঁদের কাজ। অথচ তা করতে গিয়ে গাড়ি উল্টে দুর্ঘটনায় পড়ছেন খোদ দমকলকর্মীরাই। শনিবার দুপুরে যেমন হল বাইপাস লাগোয়া পঞ্চান্নগ্রামে। ছ’জন দমকলকর্মী জখম হয়েছেন, তাঁদের এক জনের আঘাত গুরুতর। দমকল সূত্রে খবর, দুর্ঘটনার মূলে নতুন মডেলের একটি অগ্নিনির্বাপক গাড়ি। যার পোশাকি নাম মিডল সাইজ ওয়াটার টেন্ডার (এমএসডব্লিউটি)। অপ্রশস্ত গলিতে ওই গাড়ি ঢুকতে পারে অনায়াসেই। কিন্তু গঠনগত ত্রুটি থাকার ফলে জোরে ছুটতে গেলেই বহু ক্ষেত্রে গাড়ি উল্টে যাচ্ছে। এ দিন তেমনটাই হয়েছে।

এ দিন পিকনিক গার্ডেনে আগুন নিভিয়ে বাইপাস ধরে প্রগতি ময়দান দমকলকেন্দ্রে ফিরছিল দমকলের একটি ছোট গাড়ি। পঞ্চান্নগ্রামের কাছে পৌঁছতেই গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। ওই গাড়িটির বেগ তখন ছিল ঘণ্টায় সত্তর কিলোমিটারের কাছাকাছি। অথচ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, গাড়িটি কাঁপতে কাঁপতে ছুটছিল, তার পরেই উল্টে যায়। দমকলকর্মীরা বলছেন, ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটারের বেশি এই গাড়িকে ছোটাতে গেলেই সমস্যা হচ্ছে।

দমকল সূত্রে খবর, বছর পাঁচেক আগে ওই নতুন মডেলের গাড়ি আনা হয়েছে। এক-একটি গাড়ির দাম ১৫ লক্ষ টাকা। গত তিন বছরে আগুন নেভাতে গিয়ে রাজ্যের পাঁচ জায়গায় এই ধরনের গাড়ি উল্টে গিয়েছে। ২০১৫-র মে মাসে উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জে আগুন নিভিয়ে ফেরার পথে গাড়ি উল্টে চালকের মৃত্যু হয়। সে বছরই ১৩ ফেব্রুয়ারি ফোর্ট উইলিয়মের সামনে এই গাড়ি উল্টে গিয়ে আহত হন তিন দমকলকর্মী।

কলকাতায় এমন গাড়ির সংখ্যা ২০, রাজ্যের বাকি অংশে এমন গাড়ি আরও ৬০টি আছে। দমকলের এক কর্তা বলেন, ‘‘এই গাড়ির প্রযুক্তিগত ত্রুটি আছে। দিল্লি ও আমদাবাদের মডেল অনুসরণ করা হয়েছে। কিন্তু গাড়ির চেসিস, ইঞ্জিন জোড়া হচ্ছে এখানে। ওই কাজেই গণ্ডগোল হয়েছে। অথচ কারও হেলদোল নেই।’’ ওই অফিসার জানান, আড়াই হাজার লিটার জল ধারণের ক্ষমতাসম্পন্ন গাড়ির পিছনে মাত্র দু’টি চাকা, ফলে ভারসাম্য ধরে রাখা যাচ্ছে না। তাঁর কথায়, ‘‘গাড়ি ঘণ্টায় ৪০ কিমির বেশি বেগে চালালেই বিপদ যেন নিশ্চিত। পিছনে দু’টির বদলে দু’জোড়া চাকা থাকলে দুর্ঘটনা এড়ানো যাবে।’’

তবে বিভাগের উঁচুতলার লোকজন বিশেষ ভাবিত নন বলে অভিযোগ দমকলকর্মীদের। নতুন গাড়ি বারবার দুর্ঘটনার কবলে পড়লেও গাড়ির প্রযুক্তিগত ত্রুটি শোধরানো হচ্ছে না কেন? মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বারবার এ রকম দুর্ঘটনা ঘটছে। তা এড়াতে গাড়ির এই মডেল বদলানোর জন্য বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Fire Engine Turn Over
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE