Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

কমিটি গড়াই সার, এগোয়নি কাজ

ওই কমিটির মাধ্যমেই বেসরকারি স্কুলগুলির সঙ্গে বৈঠক করে তাদের পরিকাঠামোগত সমস্যা কতটা, তা বুঝতে চাইছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

পার্থ চট্টোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

পার্থ চট্টোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:৩৯
Share: Save:

যে সব বেসরকারি স্কুল অভিভাবকদের থেকে মোটা টাকা নেয়, তাদের নিয়ন্ত্রণ করতে গত মে মাসে একটি কমিটি গড়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু সাত মাসে নাম-কা-ওয়াস্তে দু’টি বৈঠক ছাড়া কিছুই হয়নি। শুধু তা-ই নয়, যাঁদের নিয়ে কমিটি গড়া হয়, তাঁদের কয়েক জন পদত্যাগ করতে চাওয়ায় পরিস্থিতি জটিল হয়েছে।

ওই কমিটির মাধ্যমেই বেসরকারি স্কুলগুলির সঙ্গে বৈঠক করে তাদের পরিকাঠামোগত সমস্যা কতটা, তা বুঝতে চাইছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু যে উদ্দেশ্যে ওই কমিটি তৈরি হয়েছে, সেই ফি বৃদ্ধি রুখতে তারা কোন পথে এগোবে, সে ব্যাপারে কমিটি আলোচনাই করেনি বলে নবান্ন সূত্রের খবর। কমিটি যেখানে এতটা নিষ্ক্রিয়, সেখানে শিক্ষামন্ত্রীর উদ্দেশ্য কতটা সফল হবে, তা নিয়ে বেসরকারি স্কুলগুলিরও সংশয় রয়েছে। একই প্রশ্ন অভিভাবকদেরও।

শহরের একটি বেসরকারি স্কুলের এক প্রশাসনিক কর্তা জানান, জি ডি বিড়লা এবং এম পি বিড়লা স্কুলের পরিকাঠামো নিয়ে গলদের অভিযোগ ওঠায় এখন ওই কমিটির খোঁজ পড়েছে। ফি বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণের কমিটি পরিকাঠামো নিয়ে আলোচনা করতে পারে কি না, সেই প্রশ্নও তুলছেন অনেকে। তবে বুধবার শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘ফি বৃদ্ধি ঠেকাতে তৈরি কমিটির মাধ্যমেই যা করার করব।’’

কমিটিতে রাখা হয় কলকাতার আর্চবিশপ, বিশপ, স্কুলশিক্ষা সচিব, কলকাতার পুলিশ কমিশনার এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি-র প্রতিনিধিকে। সঙ্গে শহরের দশটি বেসরকারি স্কুলের প্রতিনিধিরা। বিকাশ ভবন সূত্রের খবর, মাস কয়েক আগে আর্চবিশপ টমাস ডি’সুজা এবং বিশপ অশোক বিশ্বাস জানান, তাঁরা ব্যস্ত থাকেন। তাই কমিটিতে থাকতে চান না।

ওই কমিটিতে থাকা লা মার্টিনিয়ার স্কুল জানিয়েছে, তারা ওই কমিটিতে থাকতে চায় না। এ দিন স্কুলের সচিব সুপ্রিয় ধর জানান, তাঁদের সংখ্যালঘু স্কুল। শিক্ষার অধিকার আইনেই রয়েছে, তাঁরা নিজেদের মতো করে স্কুলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। পড়ুয়াদের ফি কত হবে, তা-ও নিজেদের মতো করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার তাঁদের রয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের এই বিষয়ক মামলায় আমরাই পার্টি ছিলাম। ফি বিষয়ক কমিটিতে আর থাকতে চাই না।’’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কমিটির এক সদস্য জানান, গত সাত মাসে দু’টি বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে বেসরকারি স্কুলগুলিতে যুক্তিগ্রাহ্য ফি কাঠামো কী হতে পারে, তা নিয়ে কথা হয়েছিল। তার পরে কিছু এগোয়নি। যে সব স্কুল মাত্রাতিরিক্ত ফি নেয়, তাদের জন্য কোনও নির্দেশিকা তৈরির বিষয়েও সিদ্ধান্ত হয়নি। এই পরিস্থিতিতে বেসরকারি স্কুলগুলির পরিকাঠামো যথাযথ করতে এই কমিটির উপরে ভরসা যায় কি না, সেই প্রশ্ন তুলছে অনেক বেসরকারি স্কুল।

তবে কমিটির যে সব সদস্য ছেড়ে যেতে চেয়েছেন, তাঁদের বদলে এখনও কারও নাম ঠিক হয়নি বলে শিক্ষা দফতরের এক কর্তা জানান। ‘‘এ জন্য কমিটির কাজ আটকাবে না,’’ মন্তব্য করেছেন ওই শিক্ষা-কর্তা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE