Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

ধৃত ৮ নাবালক চোর, চুরি কমলো এক ধাক্কায়

পুলিশি লিফলেটে চুরি ঠেকানোর নিদান অনেকে পড়েই দেখেননি। আবার কেউ কেউ পড়লেও মেনে চলার প্রয়োজন বোধ করেননি। তবুও লিফলেট বিলি করার পর চুরি কমে গেল প্রায় পঞ্চাশ শতাংশ। রহস্যটা কী? পুলিশ জানাচ্ছে, কিছুই নয়, প্রধান কারণ, বেশ কয়েক জন চোরের ধরা পড়া। এবং সেই চোরেরা নাবালক!

সায়নী ভট্টাচার্য
শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৬ ০১:৪০
Share: Save:

পুলিশি লিফলেটে চুরি ঠেকানোর নিদান অনেকে পড়েই দেখেননি। আবার কেউ কেউ পড়লেও মেনে চলার প্রয়োজন বোধ করেননি। তবুও লিফলেট বিলি করার পর চুরি কমে গেল প্রায় পঞ্চাশ শতাংশ। রহস্যটা কী? পুলিশ জানাচ্ছে, কিছুই নয়, প্রধান কারণ, বেশ কয়েক জন চোরের ধরা পড়া। এবং সেই চোরেরা নাবালক!

চুরি রুখতে মাসখানেক আগে লিফলেট বিলি করেছিল পুলিশ, বিশেষ করে দক্ষিণ শহরতলিতে। মানুষ যাতে সচেতন হয়। দিনে হুট করে খোলা বাড়িতে ঢুকে পড়ে কিংবা রাতে জানলা দিয়ে আঁকশি দিয়ে টেনে মোবাইল, ল্যাপটপ, ঘড়ি যাতে চুরি করতে না পারে চোরের দল। লালবাজার সূত্রের খবর, চুরির ঘটনা সত্যিই অনেক কমেছে।

গোয়েন্দা বিভাগের এক কর্তা জানান, অগস্টের প্রথম ও দ্বিতীয় সপ্তাহে ঘুটিয়ারি শরিফ ও লক্ষ্মীকান্তপুর থেকে আট নাবালককে গ্রেফতার করার পরেই চুরি এক ধাক্কায় কমে গিয়েছে। ধৃতদের বয়স দশ থেকে বারো বছরের মধ্যে। প্রত্যেকেরই ঠিকানা এখন সরকারি হোম। এদের কাছ থেকে কয়েকটি চোরাই ল্যাপটপ উদ্ধারও করেছে পুলিশ। এক গোয়েন্দা অফিসার জানান, ৩০-৩৫-৫০ হাজার টাকা দামের ল্যাপটপ চুরি করে ওই নাবালকেরা বেচে দিচ্ছিল তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকায়।

তবে এক তদন্তকারী অফিসারের কথায়, ‘‘নিজেরা নিজেরা অসংগঠিত ভাবে ওই নাবালক চোরেরা চুরি করত, ব্যাপারটা তা নয়। এর পিছনে এক জন সাবালকের থাকার কথা জেনেছি, যাকে কমিশন দিত হত।’’

সংবাদপত্রের ভাঁজে দেওয়ার পাশাপাশি শিবির করে, মাইকে প্রচার করে লিফলেট বিলি করেছিল পুলিশ। তাতে কি সাধারণ মানুষ সচেতন হয়েছিলেন আদৌ? লালবাজারের এক কর্তার বক্তব্য, ‘‘মানুষ একেবারেই সচেতন হননি, সে কথা বলা ঠিক হবে না। তবে যতটা সচেতন হওয়া উচিত ছিল, ততটা কাজ হয়নি।’’

অগস্টের তৃতীয় সপ্তাহেই সার্ভে পার্ক এলাকার একটি বহুতলেই পর পর দু’রাতে চুরি হয়েছে। চোরেরা নিয়ে গিয়েছে তিনটি মোবাইল ফোন ও টাকা ভর্তি একটি ব্যাগ। ওই বহুতলে যাঁদের ফ্ল্যাটে চুরি হয়েছে, তাঁদের অন্যতম, সুতপা ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘১৮ বছর হল এই ফ্ল্যাটে আছি। তা ছাড়া তিন তলায় থাকি। আগে কখনও চুরি হয়নি। লিফলেটটা দেখলেও ভেবেছিলাম, চোর আমার ফ্ল্যাটে কী করে ঢুকবে?’’ অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসই চোরেদের সুযোগ করে দিচ্ছে বলে পুলিশের অভিমত।
তবে তাঁদের মতে, তুলনায় নতুন বাসিন্দারা সচেতন।

এক তদন্তকারী অফিসার বলেন, ‘‘শেষমেশ কিন্তু মানুষকেই সচেতন হতে হবে। আমরা আট জনকে ধরেছি। চুরি কিছুটা কমেছে। কিন্তু অন্য তল্লাট থেকে নতুন চোরেদের গ্যাং অচিরেই গজিয়ে উঠবে না, সেটা কে বলতে পারে?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE