তেলেনিপাড়া ঘাটে দুর্ঘটনার পরে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে প্রশাসনের কর্তারা বাঁশ-কাঠের সাঁকো দিয়ে তৈরি জেটি ঘুরে দেখেছিলেন দিন দুয়েক আগেই। শনিবার নবান্নে সেই রিপোর্ট পাঠিয়েছিলেন তাঁরা। ঠিক হয়েছে, ৩ মে জেলাশাসকের নির্দেশে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের সব ফেরিঘাটের ইজারাদার ও পুর চেয়ারম্যানদের নিয়ে বারাসতে বৈঠক হবে।
ইতিমধ্যেই পরিবহণ দফতর জানিয়েছে, ফেরিঘাটগুলির নিরাপত্তা সুনিশ্চিত না করে পারাপার করা যাবে না। ফলে নিরাপত্তাজনিত কারণে ব্যারাকপুরের দু’টি ফেরিঘাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নড়বড়ে বাঁশ ও কাঠের সাঁকো রয়েছে কাঙালি ঘাট ও শ্যামনগর ঘাটে। ওই দু’টি ফেরিঘাটের সংস্কারে পরিবহণ দফতর টাকা বরাদ্দ করেছে। ব্যারাকপুর মহকুমা প্রশাসনের তরফে বাকি ঘাটের ইজারাদার এবং পুরসভাগুলিকে অবিলম্বে যাত্রীদের সুরক্ষায় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
পুরসভাগুলির অধীন এই ফেরিঘাটগুলি দিয়ে প্রতি দিন অসংখ্য যাত্রী যাতায়াত করেন। অভিযোগ, প্রতিটি ঘাট আলাদা ইজারাদারের আওতায় থাকায় লাভ করাটাই তাঁদের মুখ্য বিষয়। ফলে নিরাপত্তার বিষয়টি শিকেয় উঠেছে। আর সেই কারণেই তেলেনিপাড়ার দুর্ঘটনার আগে ওই ঘাটেই চার ছাত্রের তলিয়ে যাওয়ার পরেও শিক্ষা নেয়নি ঘাটের ইজারাদার। এমনই বলছেন প্রশাসনের কর্তারা। কিছু দিন আগেও শ্যামনগর ঘাটে নৌকায় উঠতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে জখম হয়েছিলেন এক মহিলা-সহ দু’জন।
অভিযোগ, নৌকার স্বাস্থ্য পরীক্ষার কোনও বালাই নেই। সাঁকো বা নৌকার জলে ডোবা অংশ ঠিক কী অবস্থায় আছে, তার খোঁজ রাখেন না ইজারাদাররা। অধিকাংশ নৌকাই চলে ভাড়ায়। নৌকার খোলে জল বেশি জমলে বা অন্য ক্ষয়ক্ষতি হলে সেগুলিকে অতিরিক্ত যাত্রী পারাপারের জন্য ঘাটের ধারে রেখে দেওয়া হয় অথবা সেগুলি দিয়ে অস্থায়ী জেটি বানানো হয়। শ্যামনগর ঘাটে এমন ব্যবস্থাই চলছিল বলে জানিয়েছেন প্রশাসনের কর্তারা।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘ইজারাদারেরা এককালীন টাকা জমা দিয়ে ঘাটের ইজারা নেন। তাই মুনাফার কথাটাই তাঁরা শুধু ভাবেন। নিরাপত্তার দিকটি অবহেলিতই
থেকে যায়।’’
কলকাতা-হাওড়ার মতো ব্যারাকপুর এবং হুগলি শিল্পাঞ্চলের ফেরিঘাটগুলিতে লোহার জেটির পরিকল্পনা আগে হলেও তা কার্যকর করা হয়নি ঠিক এ কারণেই।
ব্যারাকপুরের মহকুমাশাসক পীযূষ গোস্বামী বলেন, ‘‘সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আগে শ্যামনগর ঘাট, দেবীতলা ঘাটের মতোই অন্য ফেরিঘাটগুলির আমূল সংস্কার করা হবে। তার পরেই সেগুলি ব্যবহার করা যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy