Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

ছিন্ন হচ্ছে চার দশকের সম্পর্ক

প্রমোদদাকে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিন ছেড়ে চলে যেতে হবে। শুক্রবার, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ক্যান্টিন মালিক প্রমোদ সোয়াইনকে এই মৌখিক নির্দেশ দিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, পুরনো ক্যান্টিন তুলে দিয়ে সেখানে ফুড কোর্ট তৈরি করা হবে।

প্রায় সাড়ে চার দশক এই ক্যান্টিনে। এ বার কি হঠাৎ শেষ হয়ে যাবে সেই সম্পর্ক। মন খারাপ প্রেসিডেন্সির প্রিয় প্রমোদদা’র। মন খারাপ পড়ুয়াদেরও। —ফাইল চিত্র।

প্রায় সাড়ে চার দশক এই ক্যান্টিনে। এ বার কি হঠাৎ শেষ হয়ে যাবে সেই সম্পর্ক। মন খারাপ প্রেসিডেন্সির প্রিয় প্রমোদদা’র। মন খারাপ পড়ুয়াদেরও। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৬:৫০
Share: Save:

গত চার দশকে এই জায়গাটা হয়ে গিয়েছিল তাঁর দ্বিতীয় বাড়ি।

৪৭ বছরের সেই সম্পর্ক ছিঁড়ে ফেলতে সময় একটা রাত!

প্রমোদদাকে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিন ছেড়ে চলে যেতে হবে। শুক্রবার, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ক্যান্টিন মালিক প্রমোদ সোয়াইনকে এই মৌখিক নির্দেশ দিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, পুরনো ক্যান্টিন তুলে দিয়ে সেখানে ফুড কোর্ট তৈরি করা হবে।

সম্প্রতি প্রেসিডেন্সি কর্তৃপক্ষ প্রমোদদার ক্যান্টিনের জায়গায় নতুন ক্যান্টিন তৈরির জন্য টেন্ডার ডাকেন। তা নিয়ে তীব্র আপত্তি জানিয়েছিলেন বর্তমান পড়ুয়া ও প্রাক্তনী, দুই প্রজন্মই। তাঁরা জানিয়েছিলেন, টেন্ডারের শর্ত প্রমোদদার পক্ষে পূরণ করা সম্ভব নয়। একই সঙ্গে তাঁদের দাবি ছিল, প্রেসিডেন্সির ঐতিহ্যের সঙ্গে জড়িয়ে ওই ক্যান্টিন। তা বন্ধ করে দেওয়ার অর্থ প্রেসিডেন্সির সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যে আঘাত করা।

যদিও এ সব যুক্তি মানতে চাননি প্রেসিডেন্সি কর্তৃপক্ষ। এ দিন প্রমোদদা জানান, বিকেল ৫টা নাগাদ কর্তৃপক্ষের তরফে তাঁকে জিনিসপত্র-সহ চলে যেতে বলা হয়। তিনি জানান, সিদ্ধান্ত মেনে চলে যাচ্ছেন। পুজোর ছুটির পরে ৯ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে এসে জিনিসপত্র সরাবেন। প্রমোদদা বলেন, ‘‘কয়েক ঘণ্টার নোটিসে কী করে এত দিনের সব কিছু সরিয়ে নিয়ে যাব?’’

৪৭ বছর আগে প্রমোদ সোয়াইন জেঠুর হাত ধরে কটক থেকে শহরে আসেন। এখন যেখানে ছাত্র সংসদের ঘর, সেখানেই ছিল পুরনো ক্যান্টিন। ১৩ বছর বয়সে প্রমোদ কাজ শুরু করেন সেখানে। প্রেসিডেন্সি ক্রমে হয়ে ওঠে তাঁর ‘নিজের বাড়ি’। পড়ুয়াদের কাছে তিনি হয়ে ওঠেন প্রমোদদা।

বিষয়টি নিয়ে ফের আন্দোলনে নেমেছে ছাত্র সংসদ। কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত শোনার পরেই পড়ুয়ারা ডিন অব স্টুডেন্টস-এর ঘরের সামনে অবস্থানে বসেন। রাত ৮টা নাগাদ কর্তৃপক্ষের তরফে ফের প্রমোদদাকে চলে যেতে বলা হয়। এর পরেই পড়ুয়ারা ঠিক করেন, এ দিনের মতো অবস্থান উঠিয়ে নেওয়া হবে। ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক অরিন্দম ডলই জানান, প্রমোদদা বেরিয়ে গেলে তাঁরা শুক্রবার রাতে ক্যান্টিনে তালা দিয়ে দেবেন। প্রমোদদা ফিরে এলে পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করা হবে।

কর্তৃপক্ষ অবশ্য সিদ্ধান্তে অনড়। রেজিস্ট্রার দেবজ্যোতি কোনার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা আইন মেনেই নেওয়া হয়েছে। তাই এর নড়চড় হবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE