ফের ধস। এ বার আমর্হাস্ট স্ট্রিটে। এই নিয়ে গত এক সপ্তাহে চার বার রাস্তা ধসে যাওয়ার ঘটনা ঘটল শহরে।
মঙ্গলবার আমহার্স্ট স্ট্রিটে রাস্তার মাঝখানে প্রায় পাঁচ ফুট চওড়া এলাকা জুড়ে ধস নামে। গভীরতা প্রায় ৬ ফুট। ধসের কারণে সকাল থেকেই ওই রাস্তায় যান চলাচল ব্যাহত হয়। চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, উল্টোডাঙা, শোভাবাজারের পরে এ দিন ফের শহরের এক গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় ধস নামায় অস্বস্তিতে পড়ে পুর-প্রশাসন। যদিও মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “নিকাশির পাইপলাইনে ফাটলের কারণে ওই জায়গায় সাময়িক ভাবে মাটি বসে গিয়েছে। কাজ চলছে।”
স্থানীয় সূত্রের খবর, সোমবার রাতে আমহার্স্ট স্ট্রিটের ঠনঠনিয়া পাম্পিং স্টেশনের সামনে রাস্তার ঠিক মাঝখানে এক জায়গায় গর্ত দেখতে পান কর্মীরা। তার উপর দিয়েই চলে গাড়ির পর গাড়ি। প্রথমে গুরুত্ব না দিলেও মঙ্গলবার সকালে ওই কর্মীরা দেখেন, গর্ত ক্রমশ বাড়ছে। এর পরে তাঁরাই স্থানীয় কাউন্সিলর সাধনা বসুকে খবর দেন।
কাউন্সিলরের পরামর্শে ইট ও পতাকা দিয়ে ওই গর্তটিকে ঘিরে ফেলার ব্যবস্থা করা হয়। পরে খবর দেওয়া হয় পুরসভায়। ততক্ষণে আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার পুলিশ গোটা চত্বর ঘিরে ফেলে। প্রায় মাঝখানে গর্ত হওয়ায় রাস্তার অর্ধেকের বেশি অংশ ঘিরে ফেলা হয়। এক পাশ দিয়ে গাড়ি চলাচলের ব্যবস্থা রাখে পুলিশ। তাতে অবশ্য কিছুটা যানজটও হয়।
দুপুর সাড়ে বারোটা নাগাদ পুরসভার কয়েক জন ইঞ্জিনিয়ার ঘটনাস্থলে পৌঁছন। তাঁরা জানান, মাটির নীচে দেওয়ালের ইট ভেঙে নিকাশির পাইপে ফাটল ধরার ফলে ওই ঘটনা ঘটেছে। কাউন্সিলর সাধনাদেবী অবশ্য বলেন, “রাস্তার এক পাশে একটি টেলিকম সংস্থার কাজ চলছে। তাঁদের জন্যই রাস্তায় গর্ত তৈরি হয়েছে।”
দুপুর একটা নাগাদ দেখা যায়, গর্তের নীচে ক্রমশ জল ভরে যাচ্ছে। আশপাশ থেকে ধসে পড়ছে মাটি। তখনও সাধনাদেবী বলতে থাকেন, “ওই টেলিকম সংস্থার কাজের জন্যই এমন হয়েছে। ওটা মোটেই ধস না।” যদিও পুরসভার এক ইঞ্জিনিয়ার তখন বলেন, “পাইপ ফেটে যাওয়াতেই মাটি ধসে গিয়েছে। সেই কারণেই জল ভরে যাচ্ছে গর্তে।”
তবে মাটির নীচে যে ভাবে ফাঁকা হয়ে রয়েছে, তা যথেষ্ট আশঙ্কাজনক। ধসের ঠিক পাশেই ইটের কাঠামো। তার ভিতরেই রয়েছে নিকাশি পাইপ। কিন্তু ইটের ওই জায়গাটুকু বাদ দিলে বাকিটা কার্যত ফোঁপড়া হয়ে রয়েছে। কেন এই অবস্থা?
গত মঙ্গলবার সেন্ট্রাল মেট্রো স্টেশনের সামনে চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে ধসের কারণ হিসেবে সামনে এসেছিল ইঁদুরের তত্ত্ব। তার পরেই বুধ ও বৃহস্পতিবারে উল্টোডাঙা ও শোভাবাজারে ধসের ক্ষেত্রে পুরসভার নিকাশি পাইপই দায়ী ছিল। এ দিনের ধসেও অভিযোগের আঙুল সেই নিকাশি পাইপের দিকেই। কিন্তু এই প্রবণতা রোধে পুরসভা তেমন কোনও পদক্ষেপ করছে না বলেই অভিযোগ। এ দিন ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে এলাকার এক বাসিন্দার প্রশ্ন, “ঘটনার পরে পুরসভা আসে। কিন্তু নিকাশি পাইপ বা ইঁদুরের প্রকোপ আটকাতে কোনও ব্যবস্থাই নেয় না তারা।”
এর উপরে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে রাস্তা সারানো নিয়ে। কারণ সবেমাত্র সেই কাজ চালু হয়েছে। এক ইঞ্জিনিয়ার জানান, কাজ শেষ হতে দিন তিনেক লাগতে পারে। তাই এ ক’দিন সেখানে যান নিয়ন্ত্রণ করতে হবে পুলিশকে। গাড়ির গতি কম থাকার কারণে মাঝেমধ্যেই যানজটের আশঙ্কাও করছে পুলিশ।
ওই এলাকাতেই রয়েছে সিটি কলেজ। সেখানকার এক পড়ুয়া দীপ্তজিৎ দাস বলেন, “রাস্তার বেশির ভাগ অংশ এ ভাবে আটকে থাকলে আমাদের কলেজে যাতায়াতে বেশ সমস্যা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy