এলাকা দখল ঘিরে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠল নিউ টাউনে মহিষবাথানের থাকদাঁড়ি এলাকা। অভিযোগ, শুক্রবার রাতে ওই এলাকার তৃণমূল সাংসদ ও বিধায়কের অনুগামীদের মধ্যে এই গণ্ডগোল হাতাহাতির পর্যায়ে চলে যায়। দু’পক্ষেরই ৬ জন আহত হন। তার মধ্যে আছেন মহিষবাথান দু’নম্বর পঞ্চায়েত প্রধান প্রসেনজিৎ সর্দার। তিনি সল্টলেকে এক নার্সিংহোমে ভর্তি। দু’জন ভর্তি বিধাননগর মহকুমা হাসপাতালে। বাকি তিন জনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। বিধাননগর কমিশনারেটের এডিসি সন্তোষ নিম্বলকর বলেন, “এই ঘটনায় ৬ জনকে গ্রেফতার করে নিউ টাউন থানার পুলিশ।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার রাতে। অভিযোগ, মহিষবাথানের থাকদাঁড়ির পঞ্চায়েত অফিসের কাছে একটি বাড়িতে চড়াও হয় এলাকার দুষ্কৃতী ভজাইয়ের লোকজন। সেখানে একটি অনুষ্ঠান উপলক্ষে ছিলেন কিছু তৃণমূল সমর্থক। এরা এলাকার সাংসদের অনুগামী বলে পরিচিত। অভিযোগ, এদের মারধর করে ভজাইয়ের লোকজন। আহতদের এক জন জানান, তাঁরা কেন এখানে অনুষ্ঠান করছেন, এই নিয়ে কথা কাটাকাটি থেকেই ওরা মারধর শুরু করে। অভিযোগ, এর ঘণ্টাখানেক পরে পঞ্চায়েত অফিসের সামনে চড়াও হয় এলাকার আর এক দুষ্কৃতী রুইসের লোকজন। তখন পঞ্চায়েত অফিস থেকে বেরোচ্ছিলেন পঞ্চায়েতপ্রধান প্রসেনজিৎ সর্দার। অভিযোগ, প্রসেনজিৎবাবুকে সামনে পেয়ে সেখানে তাকে ও তাঁর সঙ্গে থাকা কয়েক জনকে মারধর করে তারা। স্থানীয়েরা কয়েক রাউন্ড গুলি চলার অভিযোগ করলেও পুলিশ জানিয়েছে, গুলি চালানোর কোনও খবর তাদের কাছে নেই। কোনও গুলির খোল এলাকা থেকে পাওয়া যায়নি।
শুক্রবার রাতে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিউ টাউনে ফের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মাথাচাড়া দিয়ে উঠল। অভিযোগ, এ দিনের ঘটনার মূলে রয়েছে এলাকা, সিন্ডিকেট দখলের সমস্যা। মহিষবাথান দু’নম্বর পঞ্চায়েত প্রধান প্রসেনজিৎবাবু ভজাইয়ের ছেলে। ভজাই আবার বিধায়ক সব্যসাচী দত্তর অনুগামী বলে পরিচিত। এলাকার বিধায়ক সব্যসাচী দত্ত বলেন, “পঞ্চায়েত প্রধানকে বেধরক মারধর করেছে রুইসের লোকজন। সঙ্গে আরও কয়েক জন আহত হয়েছে। কয়েক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বারবার রুইসের লোকজন এলাকায় ঢুকে অশান্তির বাতাবরণ তৈরি করতে চাইছে।” অন্য দিকে, রুইস এখন জেলে থাকলেও লোকসভা নির্বাচনের আগে সে জেল থেকে জামিনে ছাড়া পেয়ে তৃণমূলে যোগ দেয় বলে স্থানীয় তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে। সূত্রের খবর, রুইস ছিল এলাকার সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদারের অনুগামী। যদিও এলাকার সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার বলেন, “আমি এ সব ব্যাপারে কিছু জানি না। কী ঘটেছে বা কী নিয়ে গণ্ডগোল হয়েছে, আমার জানা নেই। পুলিশকে জিজ্ঞেস করে খবর নেব। সব ছোটখাটো বিষয় কি জানা সম্ভব?”
লোকসভা ভোটের আগে রুইস ও ভজাই মহিষবাথান এলাকায় থাকায় পুলিশও যথেষ্ট সতর্ক হয়েছিল। মহিষবাথান এলাকায় ভজাই ও রুইসের বাড়ির কাছে পুলিশ পিকেট বসে। দিন কয়েক আগে রুইস গ্রেফতার হয়। তবে রুইস গ্রেফতার হলেও এলাকায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব যে সহজে থামছে না, তা বারবার রুইস ও ভজাইয়ের লোকেদের মধ্যে মারপিটের ঘটনাই প্রমান করেছে। দিন কয়েক আগেই মহিষবাথানে একটি তৃণমূলের পার্টি অফিস ভাঙচুর হয়। সিন্ডিকেট দখল নিয়ে দুই পক্ষ রাস্তায় প্রকাশ্যে মারপিট করে। সেখানেও দুই পক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy