Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
প্রেসিডেন্সি

পরীক্ষা দিতে চেয়ে ঘেরাও উপাচার্যকে

ফের উপাচার্য ঘেরাও প্রেসিডেন্সিতে। আন্তর্জাতিক শিক্ষা-মানচিত্রে জায়গা করে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে যে বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু করেছে, সেখানে এখন ছাত্রছাত্রীদের একাংশ ক্লাস না করেও পরীক্ষায় বসতে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন। ওই দাবিতেই শুক্রবার বিকেলে তাঁরা উপাচার্যকে ঘেরাও করেন। উপাচার্যের সঙ্গে বেশ কিছু শিক্ষকও আটকে পড়েন। রাত সাড়ে দশটায় ঘেরাও ওঠে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৪ ০৩:৩০
Share: Save:

ফের উপাচার্য ঘেরাও প্রেসিডেন্সিতে।

আন্তর্জাতিক শিক্ষা-মানচিত্রে জায়গা করে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে যে বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু করেছে, সেখানে এখন ছাত্রছাত্রীদের একাংশ ক্লাস না করেও পরীক্ষায় বসতে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন। ওই দাবিতেই শুক্রবার বিকেলে তাঁরা উপাচার্যকে ঘেরাও করেন। উপাচার্যের সঙ্গে বেশ কিছু শিক্ষকও আটকে পড়েন। রাত সাড়ে দশটায় ঘেরাও ওঠে।

ক্লাসে হাজিরার ব্যাপারে বহু পড়ুয়ার অনাগ্রহ বেশ কিছু দিন ধরেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের চোখে পড়েছে। তাই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, ৭৫ শতাংশ ক্লাস-হাজিরা না থাকলে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে পরীক্ষায় বসার অনুমতি পাবেন না ছাত্রছাত্রীরা। পরীক্ষা শুরু মঙ্গলবার। কারা পরীক্ষায় বসতে পারছেন না, তাঁদের নামের তালিকা এ দিন বিকেলে প্রকাশ করা হয়। তার পরেই তালিকায় নাম না থাকা কিছু পড়ুয়া উপাচার্যকে ঘেরাও করেন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, ৫০% পর্যন্ত ক্লাস-হাজিরা যাঁদের রয়েছে, তাঁদেরও পরীক্ষায় বসার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অনেকে ৫০% ক্লাসও করেননি। উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়া বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নিয়ম নেমেই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। কিন্তু ওই নিয়ম কঠোর ভাবে মানলে পরীক্ষা নেওয়াই কঠিন হয়ে পড়বে। কারণ খুব কম পড়ুয়ারই ৭৫% হাজিরা রয়েছে। তাই প্রথম বছর বলে এই নিয়ম শিথিল করেছি।” কিন্তু বিক্ষোভকারীদের দাবি, ক্লাসে হাজিরা যা-ই থাকুুক না কেন, পরীক্ষায় বসতে দিতে হবে।

এরই মধ্যে উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনায় বসেন পরীক্ষায় অনুত্তীর্ণ সকল ছাত্রছাত্রী। পরে তাঁরা জানান, উপাচার্য আলোচনায় কয়েকটি প্রস্তাব দিয়েছেন। কী সেই প্রস্তাব?

পড়ুয়াদের দাবি উপাচার্য তাঁদের জানিয়েছেন, স্নাতকের প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের ও স্নাতকোত্তরের প্রথম বর্ষের পরীক্ষার্থীদের জন্য পরে একটা ‘অড’ সেমেস্টারের ব্যবস্থা করবেন। আর স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের ফাইনাল বর্ষের পরীক্ষার্থীদের জন্য ‘স্পেশ্যাল সেমেস্টারের’ ব্যবস্থা করা হবে। তার জন্য প্রত্যেককে চিঠি দিয়ে জানাতে হবে, ৭৫% উপস্থিতি না থাকার জন্য তাঁরা বিশেষ পরীক্ষা দিচ্ছেন। পরীক্ষা কবে, জানতে চেয়ে আজ, শনিবার পড়ুয়ারা সাধারণ সভা ডেকেছেন।

প্রেসিডেন্সির মতো প্রতিষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীদের এমন বেয়াড়া দাবি কেন? এ দিন সন্ধ্যায় বিক্ষোভকারী ছাত্রদের এক জন জানান, কর্তৃপক্ষ ঠিক সময়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেননি। কিন্তু ক্লাস করার জন্য বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে কেন? জবাব মেলেনি পড়ুয়াদের কাছ থেকে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, আসলে আর পাঁচটা কলেজের মতো প্রেসিডেন্সিতেও বিরাট সংখ্যক পড়ুয়ার কাছে ক্লাস না করাটাই দস্তুর। এঁদের অনেকেই ক্লাসের বদলে প্রাইভেট টিউশনের উপরে নির্ভরশীল। এক শিক্ষক বলেন, “দুনিয়ার সব বিষয়ে এঁদের আগ্রহ। রাজনীতি থেকে সামাজিক বিতর্ক, কিছুতেই পিছিয়ে নেই। শুধু ক্লাস করাতেই আপত্তি!”

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের ঘেরাও তুলতে পুলিশ ডেকেছিলেন উপাচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তী। ছাত্রদের পেটায় পুলিশ। এ দিন প্রেসিডেন্সির উপাচার্য অবশ্য জানান, ঘেরাও মুক্ত হতে তিনি পুলিশ ডাকেননি। বরং রাত পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়েই ছিলেন। ঘেরাও উঠে গেলে তিনি জানান, স্নাতক এবং স্নাতকোত্তরের ফাইনাল বর্ষের পরীক্ষার্থীদের যাতে কোনও বছর নষ্ট না হয়, তা তিনি মাথায় রাখবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE