এ শহরে শ্বাসযন্ত্রের সমস্যার জন্য ৭০ শতাংশ ক্ষেত্রেই দায়ী বায়ুদূষণ। চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল ক্যানসার ইনস্টিটিউট এবং কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের যৌথ সমীক্ষায় এমন ছবিই ধরা পড়েছে বলে বৃহস্পতিবার দাবি করলেন শহরের এক দল চিকিৎসক।
তাঁদের মতে, শুধু শ্বাসযন্ত্রের সমস্যাই নয়, হাওয়ায় মাত্রাতিরিক্ত বিষ মেশায় বা়ড়ছে ক্যানসার, হৃদ্রোগ-সহ একাধিক অসুখের শঙ্কা। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিশুরাও। শিশুরোগ চিকিৎসক অভিজিৎ সরকারের মতে, বায়ুদূষণের জেরে ক্ষতি হচ্ছে দেশের প্রায় সাড়ে চার কোটি শিশুর স্বাস্থ্য। এ শহরেও দ্রুত বাড়ছে শ্বাসরোগে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা। শীতের সময়ে দূষণ বাড়ায় শিশু রোগীর সংখ্যাও বাড়ে।
চিকিৎসকদের ব্যাখ্যা, বাতাসে ভাসমান কণা (পিএম ১০) এবং সূক্ষ্ম কণা (পিএম ২.৫) ফুসফুস, হৃৎপিণ্ড এবং মস্তিষ্কের ক্ষতি করে। সালফার ডাই অক্সাইড, নাইট্রাস ডাই অক্সাইড এবং ওজোনের মতো গ্যাস থেকেও ফুসফুসের ক্ষতি হয়। ক্যানসার চিকিৎসক এম ভি চন্দ্রকান্তের মতে, বায়ুদূষণ থেকে মাথা, ঘাড় এবং মূত্রাশয়ের ক্যানসারের আশঙ্কাও রয়েছে।
বস্তুত, বায়ুদূষণের নিরিখে দিল্লি দেশে প্রথম। রাজধানী শহরে বাতাস দূষিত হওয়ায় তা নিয়ে হইচইও হয়। কলকাতাও এ ব্যাপারে পিছিয়ে নেই। পরিবেশবিদদের মতে, এ বছরের শীতে মাঝেমধ্যেই দেখা গিয়েছে দূষণের নিরিখে দিল্লিকে টপকে গিয়েছে কলকাতা। ফলে কলকাতার দূষণের ছবিটা বদলানোর দাবি তুলেছেন পরিবেশকর্মীরা। তাঁদের দাবি, ডিজেলচালিত বাস এবং নির্মাণস্থল থেকে উড়ে আসা ধুলো-ধোঁয়াই বায়ুদূষণের মূল কারণ। পাশাপাশি শহর এবং শহরতলির বিভিন্ন ভাগাড় থেকেও বাতাসে দূষণ ছড়াচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে পরিবেশ দফতর এবং প্রশাসন কী করছে সেই প্রশ্নও তুলেছেন পরিবেশকর্মীরা।
রাজ্য পরিবেশ দফতরের দাবি, বিভিন্ন দূষণ ঠেকাতে কিছু পদক্ষেপ ইতিমধ্যেই করা হয়েছে। জাতীয় পরিবেশ প্রযুক্তি গবেষণা সংস্থা (নিরি)-কে দিয়ে শহরের দূষণের উৎস এবং তার প্রভাব কতটা, সে বিষয়ে সমীক্ষা করানো শুরু হয়েছে। সেই রিপোর্ট হাতে পেলে আরও নির্দিষ্ট ভাবে পদক্ষেপ করা সম্ভব। পরিবেশবান্ধব জ্বালানি চালুর ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।
তবে এ সব কবে কার্যকর হবে সেই প্রশ্ন রয়েই যাচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy