Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

শহরের দূষণ ফের ছাড়াল বিপদমাত্রা

রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ বলছে, কলকাতার ওই তথ্য অবশ্য গোটা শহরের নয়, শুধু দূতাবাস সংলগ্ন এলাকার। ফলে ওই তথ্য সামগ্রিক কলকাতার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:১০
Share: Save:

ফের দূষণের দৌড়ে দিল্লিকে টেক্কা কলকাতার! পরিবেশকর্মীরা জানাচ্ছেন, শনিবার দুপুরে দিল্লির যা দূষণ ছিল, কলকাতার দূষণ ছিল তার চেয়ে ঢের বেশি। এর পিছনে প্রমাণ হিসেবে তাঁরা তুলে ধরছেন মার্কিন দূতাবাসের একটি তথ্যকে। সেই তথ্য অনুযায়ী এ দিন বিকেল ৩টে নাগাদ কলকাতার বায়ুদূষণের সূচক ছিল ৩২৭। যা ‘বিপজ্জনক’ মাত্রা ছুঁয়েছে বলেই ইঙ্গিত করা হয়েছে। দিল্লিতে এ দিন সেই সূচক ছিল ১৯১। খারাপ হলেও তা বিপজ্জনক নয়।

রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ বলছে, কলকাতার ওই তথ্য অবশ্য গোটা শহরের নয়, শুধু দূতাবাস সংলগ্ন এলাকার। ফলে ওই তথ্য সামগ্রিক কলকাতার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। পরিবেশকর্মীদের পাল্টা বক্তব্য, সামগ্রিক ভাবে গোটা শহরের তথ্য কখনওই তোলা হয় না। কিন্তু ছবি দেখে একটা ধারণা তো মেলে। ‘‘তা হলে ভিক্টোরিয়া কিংবা রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে বসানো যন্ত্রের তথ্য দিয়ে কী ভাবে পর্ষদকর্তারা মাঝেমধ্যে দূষণ কমার দাবি করেন?’’ প্রশ্ন এক পরিবেশকর্মীর।

কলকাতার দূষণ যে শুধু এ দিন নয়, গত ক’দিন ধরেই মারাত্মক আকার নিয়েছে তা বোঝাতে পরিবেশবিদদের অনেকে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তথ্যকেই হাতিয়ার করছেন। তাঁরা জানাচ্ছেন, নতুন যন্ত্র বসানোর কাজ শেষ না হওয়ায় শহরের বহু জায়গাতেই স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র দ্বারা মাপা হচ্ছে না। মানুষচালিত যন্ত্র দিয়ে মৌলালি, মিন্টো পার্ক, বেহালা চৌরাস্তা এবং শ্যামবাজারে দূষণ মাপছে পর্ষদ। তাঁদের সেই যন্ত্রে ধরা পড়া তথ্য থেকে পর্ষদের বিজ্ঞানীরা যে বায়ুদূষণের সূচক নির্ধারণ করেছেন, তাতে দেখা যাচ্ছে বৃহস্পতিবার ওই চারটি জায়গাতেই সূচক ছিল ৩০০-র উপরে। অর্থাৎ, মারাত্মক খারাপ। এই মাত্রার সূচককে বিপজ্জনক গোত্রেই ফেলা চলে। চলতি সপ্তাহের বেশির ভাগ দিনই সূচক কমবেশি এমন ছিল বলেই পর্ষদ সূত্রের খবর।

কলকাতার দূষণের পিছনে মূলত ডিজেলচালিত গাড়ি, কংক্রিটের গুঁড়ো দায়ী। তার সঙ্গে কঠিন বর্জ্যের জ্বালানি, ভাগা়ড়ে এবং জঞ্জালের গাদায়
আগুন তো রয়েছেই। এই সব কারণ থাকলেও শীতকালে অন্যান্য মরসুমের তুলনায় দূষণের মাত্রা বাড়ে।
কারণ, বৃষ্টি না হওয়ায় হাওয়ায় ভেসে থাকা ধুলো ধুয়ে যেতে পারে না। কিন্তু এ দিন মার্কিন দূতাবাসের তথ্যে ধরা প়ড়েছে, ওই এলাকায় শুক্রবার রাত থেকে এ দিন রাত পর্যন্ত দূষণের সূচক কমবেশি একই জায়গায় ঘোরাফেরা করেছে। সাধারণত, দিনের বেলা দূষণ একটু কমে। কেন? আবহবিদেরা বলছেন, এর পিছনে দায়ী বাতাসের ঘনীভূত জলীয় বাষ্প। বাংলাদেশে থাকা একটি ঘূর্ণাবর্তের প্রভাবে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে জলীয় বাষ্প ঢুকেছে। সেই বাষ্প ঠান্ডায় ঘনীভূত হয়ে কুয়াশা তৈরি করেছিল। মেঘও অনেক নীচের স্তরে ছিল। তার মধ্যে ধুলো মিশে তাকে আরও গাঢ় করে তুলেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Air Pollution Pollution দূষণ
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE