Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

প্রেসিডেন্সির টান কমছে, উদ্বিগ্ন শঙ্খবাবু

শঙ্খবাবু এটুকু বলেই থেমে থাকেননি। মনে করিয়ে দিয়েছেন, দায়িত্ব নেওয়া আর দায়িত্ববোধ, অধিকারবোধ এক জিনিস নয়। ক্ষমতা থাকা আর ক্ষমতা দেখানো এক নয়।

ব্যথিত: প্রেসিডেন্সির অনুষ্ঠানে শঙ্খ ঘোষ। শনিবার। —নিজস্ব চিত্র।

ব্যথিত: প্রেসিডেন্সির অনুষ্ঠানে শঙ্খ ঘোষ। শনিবার। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৮ ০৪:৩৩
Share: Save:

প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান অবস্থা নিয়ে শুক্রবারই কটাক্ষ করেছিলেন দ্বিশতবর্ষপূর্তি কমিটির চেয়ারম্যান অনিন্দ্য মিত্র। শনিবার দ্বিশতবর্ষপূর্তির সমাপ্তি অনুষ্ঠানে এসে হতাশা চেপে রাখতে পারলেন না কবি শঙ্খ ঘোষও। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য পড়ুয়ারা আগ্রহ না দেখানোয় উদ্বিগ্ন প্রবীণ কবি।

শঙ্খবাবু এ দিন বলেন, ‘‘যখন শুনি প্রেসিডেন্সিতে ভর্তি হওয়ার জন্য অনেকে আর তেমন টান বোধ করেন না, তখন অবিশ্বাস্য লাগে!’’ আসন খালি থাকার অন্য কারণ থাকতে পারে বলে মনে করেও কবির মন্তব্য, ‘‘১৮-২০ বছরের ছেলেমেয়েরা যখন নতুন কলেজে ভর্তি হওয়ার কথা ভাবছে, তখন প্রেসিডেন্সির কথা অনেকের মাথায় থাকছে না। এটা কী করে হয়?’’

শঙ্খবাবু এটুকু বলেই থেমে থাকেননি। মনে করিয়ে দিয়েছেন, দায়িত্ব নেওয়া আর দায়িত্ববোধ, অধিকারবোধ এক জিনিস নয়। ক্ষমতা থাকা আর ক্ষমতা দেখানো এক নয়। বাম আমলেও ক্ষমতার দেখনদারি নিয়ে বারংবার সরব হয়েছেন কবি। এ দিনও নিজের প্রিয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দাঁড়িয়ে সেই ক্ষমতার বিপদ সম্পর্কেই সতর্ক করেন তিনি।

আরও পড়ুন: খারাপ করে দেবে প্রেসিডেন্সি, ভয় পার্থের

প্রেসিডেন্সিতে পড়ুয়া এবং প্রাক্তনীদের সঙ্গে গত কয়েক বছর ধরেই কর্তৃপক্ষের সংঘাত বেধেছে। কর্তৃপক্ষের অনমনীয় ব্যবহার নিয়ে প্রাক্তনী, পড়ুয়ারা বারবারই মুখর হয়েছেন। পাশাপাশি স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরে ৩০০ আসন খালি থাকা নিয়েও তাঁরা ক্ষুব্ধ। প্রাক্তনীদের একাংশের মতে, শঙ্খবাবুর এ দিনের বক্তব্য প্রেসিডেন্সি কর্তৃপক্ষ এবং রাজ্য সরকার, উভয়কেই বিঁধেছে।

শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগ্রহশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অনিন্দ্য মিত্র আর্জি জানিয়েছিলেন, প্রেসিডেন্সি যেন অতীতের গরিমার সৌধ হয়ে না থাকে। এ দিন শঙ্খবাবুর মন্তব্য প্রেসিডেন্সি কর্তৃপক্ষের অস্বস্তি আরও বাড়িয়েছে। ডিরোজিও হলে এ দিন শঙ্খবাবু যখন বলছেন, তখন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়া, মেন্টর গ্রুপের চেয়ারম্যান সুগত বসু, প্রাক্তনী সংসদের সভাপতি জয়ন্ত মিত্র, প্রাক্তনী নবনীতা দেবসেন।

উপাচার্য বলেন, ‘‘শঙ্খবাবু ঠিকই বলেছেন। দায়িত্ব ও অধিকারবোধ এক নয়। কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি, ছাত্রছাত্রীদেরও এটা জানা দরকার।’’ শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘উনি সাহিত্য নিয়ে কিছু বললে, ভাবতাম। এ নিয়ে মন্তব্য করব না।’’

শঙ্খবাবুর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে সুগতবাবুর বক্তব্য, এখন অনেক প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ। অন্য জায়গাতেও পড়ুয়ারা যাচ্ছেন। সুগতবাবুর বক্তব্য, প্রেসিডেন্সি উৎকর্ষের দিকে এগোক। কিন্তু তার জন্য এলিটিজমের প্রয়োজন নেই।

জয়ন্তবাবু এবং নবনীতাদেবী জানান, শঙ্খবাবুর সঙ্গে তাঁরা একমত। অনুষ্ঠানের পরে প্রসার ভারতীর প্রাক্তন সিইও জহর সরকার বলেন, ‘‘শুধু প্রাক্তনীদের হয়ে নয়, শঙ্খবাবু সাধারণ নাগরিকদের হয়েও বলেছেন। শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের বাড়ির উন্নতি করলেই বিশ্ববিদ্যালয় চলে না। হৃদয় থাকতে হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Shankha Ghosh Presidency University
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE