আদর্শ চামারিয়া
অটোর ‘দাদাগিরি’ নিয়ে এমনিতেই নাগরিক-অভিযোগের অন্ত নেই। কখনও অভিযোগের কেন্দ্রে অতিরিক্ত যাত্রী তোলা, কখনও ভাড়া নিয়ে বচসা। সেই তালিকায় শেষ সংযোজন শনিবার রাতের বাগুইআটি মোড়। খুচরো নিয়ে গোলমালের জেরে বাবার সামনেই স্কুলপড়ুয়া ছেলেকে ধাক্কা মারার অভিযোগ উঠল অটোচালকের বিরুদ্ধে। রবিবার রাত পর্যন্ত অভিযুক্ত চালককে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রের খবর, জোড়ামন্দির সংলগ্ন একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র আদর্শ চামারিয়ার পরীক্ষা শেষ হয়েছে দিন কয়েক আগে। শনিবার বিকেলে নাগেরবাজারের একটি শপিং মলে যাওয়ার জন্য বাবা সুশীল চামারিয়ার সঙ্গে বেরোয় আদর্শ। পৌনে সাতটা নাগাদ রঘুনাথপুরের আবাসনে ফেরার জন্য শ্যামনগর থেকে অটো ধরেন সুশীলবাবু। তাঁর অভিযোগ, বাগুইআটি মোড়ে পৌঁছে ৫০ টাকার নোট দেওয়া মাত্র অটোচালক তাঁকে গালিগালাজ করতে শুরু করেন। সুশীলবাবুর দাবি, দু’জনের যেহেতু ১৪ টাকা ভাড়া হয়েছিল, সে জন্য পঞ্চাশ টাকার নোটের পাশাপাশি চার টাকা খুচরোও দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু খুচরো না থাকার কথা কেন আগে বলা হয়নি, তা নিয়ে সুশীলবাবু ও অটোচালকের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় শুরু হয়ে যায়।
আদর্শের কথায়, ‘‘অটোচালক বাবাকে গালিগালাজ করছিলেন। আমি বললাম, আঙ্কল গালি দিচ্ছেন কেন? চিৎকার করে কী লাভ?’’ ওই ছাত্র জানায়, মুখের কথা শেষ হতে না হতে তার চোয়াল ধরে ঠেলে দেন তন্ময় মৈত্র নামে অভিযুক্ত অটোচালক। সুশীলবাবু জানান, ও ভাবে ঠেলায় অটোর রডে ধাক্কা লেগে ছেলের মাথার পিছনে চোট লাগে। সুশীলবাবুর জামার কলার ধরা হয় বলেও অভিযোগ।
এর পরে বাগুইআটি মোড় থেকে বচসার কেন্দ্র হয়ে দাঁড়ায় অটোস্ট্যান্ড। সুশীলবাবু বলেন, ‘‘স্ট্যান্ডের অন্য চালকেরা অভিযুক্তের পাশেই দাঁড়ান। আমাকে এবং ছেলেকে হুমকি দেন। কিন্তু ছেলের গায়ে হাত পড়ার পরে কোনও বাবা কি চুপ করে থাকতে পারেন?’’ প্রথমে অটোস্ট্যান্ড থেকে রাস্তার উল্টো দিকে ট্র্যাফিক গার্ডে যান সুশীলবাবু। পরে থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন।
যদিও পুরো ঘটনার জন্য ওই যাত্রীকেই দায়ী করেছেন বাগুইআটি-শ্যামনগর অটো ইউনিয়নের সদস্যেরা। সংগঠনের সম্পাদক বিজয় মিস্ত্রি জানান, মোড়ের মাথায় খুচরো ফেরত দিতে গিয়ে যানজট হতে পারে, তাই আপত্তি করেছিলেন তন্ময়। এ নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়েছে ঠিকই। তবে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রকে ধাক্কা মারার অভিযোগ ভিত্তিহীন। তা সত্ত্বেও অভিযুক্ত চালককে তিন দিনের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে।
আর ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র আদর্শ বলছে, ‘‘আঙ্কল খুব খারাপ ব্যবহার করেছেন। কারও সঙ্গে ওই ভাষায় কথা বলা ঠিক নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy