বিরোধী পক্ষের আপত্তি তো আছেই। কাজিয়া পুরোদস্তুর রয়েছে শাসক দলেও। এই অবস্থায় বিধাননগরে সীমানা পুনর্বিন্যাস নিয়ে জটিলতা কাটাতে জেলাশাসকের দফতরে সর্বদল বৈঠকের ব্যবস্থা হয়েছিল। কিন্তু তাতেও সুরাহা হল না। মঙ্গলবার বারাসতে জেলাশাসকের দফতরে সর্বদল বৈঠকে বিধাননগর পুর-কর্তৃপক্ষের প্রস্তাবে আপত্তি তোলেন পুরসভারই ভাইস-চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক সব্যসাচী দত্ত। বিরোধী দল সিপিএম এবং বিজেপির প্রতিনিধিরাও প্রস্তাবের বিরোধিতা করে।
২ ডিসেম্বরের মধ্যে সীমানা পুনর্বিন্যাস নিয়ে কোনও আপত্তি বা বিকল্প প্রস্তাব থাকলে তা লিখিত ভাবে জেলাশাসকের দফতরে জমা দিতে বলা হয়েছে সব দলকে। তার পরে জেলা প্রশাসনের তরফে বিষয়টি রাজ্য নির্বাচন কমিশনে পাঠানো হবে।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, বিধাননগরে ২৫টি ওয়ার্ড আছে। ছ’টি বাড়িয়ে হবে ৩১। ত্রুটি শুধরে সোমবার পুরসভায় পুনর্বিন্যাসের প্রস্তাব পেশ করে শাসক দল তৃণমূল। আপত্তি তোলেন ভাইস-চেয়ারম্যান সব্যসাচীবাবু। বিরোধী পক্ষও আপত্তি জানায়। তবু সংখ্যাগরিষ্ঠের জেরে পুরসভায় প্রস্তাবটি পাশ হয়ে যায়। তা পাঠানো হয় উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক সঞ্জয় বনশলের কাছে।
এ দিন সর্বদল বৈঠকে নিজের আপত্তির কথা লিখিত ভাবে জানান সব্যসাচীবাবু। তাঁর অভিযোগ, পুনর্বিন্যাস নিয়ে প্রথম বারের প্রস্তাব সম্পর্কে তিনি কিছুই জানতেন না। দ্বিতীয় বারেও তা-ই ঘটেছে। তা ছাড়া পুনর্বিন্যাসের ক্ষেত্রে জনসংখ্যা, ভোটার সংখ্যা, ভৌগোলিক অবস্থান-সহ বিভিন্ন বিষয়ে নিয়ম মানা হয়নি। ভারসাম্য রক্ষার বদলে উল্টোটাই প্রতিফলিত হয়েছে প্রস্তাবে। তাই আপত্তি। শাসক দলের অন্য এক কাউন্সিলরও আপত্তি তুলেছেন।
বিধাননগর পুরসভার বিরোধী দলনেত্রী, সিপিএমের ইলা নন্দী বলেন, “জেলাশাসকের বৈঠকে ওই প্রস্তাব নিয়ে আপত্তির কথা জানিয়েছি। এর পরে লিখিত ভাবে জানাব।” বিজেপি নেতা অশোক সরকারের অভিযোগ, ওই প্রস্তাব অনুসারে বিধাননগরের সম্ভাব্য ওয়ার্ডগুলির জনসংখ্যা ও ভোটার-সংখ্যার মধ্যে ভারসাম্য থাকবে না। তাই তাঁরা বিরোধিতা করছেন।
বিধাননগরের পুর চেয়ারপার্সন, তৃণমূলের কৃষ্ণা চক্রবর্তী বলেন, “কারও কারওও বিকল্প প্রস্তাব বা আপত্তি থাকতেই পারে। তা নিয়ে আমার কিছু বলার নেই।” পুর-প্রধান যা-ই বলুন, শাসক দলের এক বিধায়ক-কাউন্সিলর আপত্তি তোলায় বিড়ম্বনা বেড়েছে বলে মনে করছেন দলীয় নেতা-কর্মীদের একাংশ। আর বিরোধীদের অভিযোগ, লোকসভা ও বিধানসভা ভোটের ফলের নিরিখে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতেই ওই প্রস্তাব নিয়েছে শাসক দল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy