Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
সঙ্কটে শহর, ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গি

মশা মারতে নিধিরাম বিধাননগর

দরকার জনা চারেক। কিন্তু মুখ রক্ষায় এখন আপাতত এক জন হলেই চলবে। মশার হাত থেকে সল্টলেকবাসীকে রক্ষা করতে প্রয়োজন নিদেনপক্ষে এক জন পতঙ্গবিদ। তারই খোঁজে চারদিকে দূত পাঠিয়েছে বিধাননগর পুরসভা।

কাজল গুপ্ত
শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৭ ০১:০৮
Share: Save:

দরকার জনা চারেক। কিন্তু মুখ রক্ষায় এখন আপাতত এক জন হলেই চলবে। মশার হাত থেকে সল্টলেকবাসীকে রক্ষা করতে প্রয়োজন নিদেনপক্ষে এক জন পতঙ্গবিদ। তারই খোঁজে চারদিকে দূত পাঠিয়েছে বিধাননগর পুরসভা।

কোথায় কোথায় কী ধরনের মশা বংশবিস্তার করছে, তা না জানতে পারলে মশাদমন সম্ভব নয়। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক বহুদিন থেকেই পুরসভাগুলিকে এ কথা বলে আসছে। কলকাতা পুরসভা ছাড়া রাজ্যের আর কোনও পুরসভাতেই পতঙ্গবিদ নেই। পতঙ্গবিদ নিয়োগে এতদিন কোনও গা-ই লাগায়নি ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়া বিধ্বস্ত বিধাননগর পুরসভা। কিন্তু কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের চাপে এখন উঠেপড়ে লেগেও পতঙ্গবিদ পাচ্ছে না বিধাননগর পুরসভা।

প্রতিটি পুরসভাকে জানুয়ারি মাস থেকেই ডেঙ্গি ম্যালেরিয়া রোধে অভিযান চালানোর নির্দেশ দিয়েছিল নবান্ন। কলকাতা পুরসভা তা শুরু করেও দিয়েছে। বিধাননগর পুরসভার এক আধিকারিকের আক্ষেপ, ‘‘কলকাতা পুরসভার হাতে পতঙ্গবিদ রয়েছে। ওরা বছরভর শহর জুড়ে মশা খুঁজে বেড়ায়। কোথায় কোন সময়ে কোন মশা ডিম পাড়ছে, তার সব তথ্য ওদের কাছে আছে। আমরা এখনও পর্যন্ত এক জন পতঙ্গবিদও খুঁজে পেলাম না।’’

বিধাননগর পুরসভা সূত্রে খবর, শেষ পর্যন্ত কলকাতা পুরসভাই তাদের এক জন পতঙ্গবিদ খুঁজে দিয়েছে। সদ্য পাশ করা ওই পতঙ্গবিদের বায়োডেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে তাঁকে নিয়োগ করা হবে কি না, সে ব্যাপারে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। আরও কয়েক জনের বায়োডেটা এসেছে পুরসভায়। ইতিমধ্যেই মশার জ্বালায় সল্টলেকবাসীর প্রাণ ওষ্ঠাগত। কিন্তু এখনও সে ভাবে অভিযানই শুরু করতে পারল না পুরসভা।

খতিয়ান ২০১৬

• ডেঙ্গিতে মৃত- ১০
• ডেঙ্গিতে আক্রান্ত- ৫০০
• জ্বরে আক্রান্ত- ১২০০

(পুরসভা সূত্রে পাওয়া)

মেয়র পারিষদ প্রণয় রায় বলেন, ‘‘কলকাতা পুরসভা থেকে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর, সবাইকেই আমরা পতঙ্গবিদ খুঁজে দিতে বলেছি। এতদিনে কয়েক জনের খোঁজ মিলেছে।’’

তবে পুরসভা যে হাত গুটিয়ে বসে আছে, তা মানতে রাজি নন প্রণয়বাবু। তাঁর দাবি, ইতিমধ্যেই বাড়ি বা়ড়ি গিয়ে লার্ভা ধ্বংস করার কাজ শুরু হয়েছে। সচেতনতা কর্মসূচিও হয়েছে। গত বছর পুরকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। এ বার কর্মশালা করা হবে।

এই মুহূর্তে সল্টলেকে ১৪টি ওয়ার্ডের জন্য ১২৬, রাজারহাটে ২৭টি ওয়ার্ডের জন্য ১০৮ জন কর্মী রয়েছে। ওয়ার্ড পিছু আরও ৪ জন কর্মী নিয়োগের পরিকল্পনা চলছে। বিধাননগর যেটা এখনও করবে বলে ভাবছে গত তিন মাসে, তা অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে কলকাতায়।

এ বছর এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহেই মশার উৎপাত যে ভাবে বেড়েছে, তাতে মশা নিয়ন্ত্রণে অদৌ কোনও কাজ হয়েছে কি না, সেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন সল্টলেকবাসী। মশা যত বাড়ছে, আতঙ্ক ততই ছড়িয়ে পড়ছে এক ওয়ার্ড থেকে অন্য ওয়ার্ডে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bidhannagar Municipality Malaria
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE