প্রতীকী ছবি।
জাকারিয়া স্ট্রিটে মহম্মদ সেলিমের খুনের পিছনে কি তাঁর পরিচিত কোনও ব্যবসায়ী জড়িত!
লালবাজার সূত্রের খবর, মৃতের মোবাইলের কল লিস্ট খতিয়ে দেখে এবং ওই এলাকার বিভিন্ন ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদের পরে পুলিশের অনুমান সেলিমের আততায়ীদের মধ্যে রয়েছেন তাঁর পরিচিত এক ব্যবসায়ীও। সন্দেহভাজন ওই ব্যবসায়ীর সঙ্গে ব্যবসার তেমন যোগাযোগ না-থাকলেও সেলিমের সব খবর রাখতেন তিনি। তদন্তকারীরা নিশ্চিত, খুনে একাধিক দুষ্কৃতী জড়িত। তবে তারা পেশাদার দুষ্কৃতী নয় বলেই মনে করছে পুলিশ। পুলিশের সন্দেহের তালিকায় উঠে এসেছে সেলিমের কয়েক জন পুরনো খদ্দেরের নামও।
পুলিশ জানায়, খুনে জড়িত সন্দেহে মঙ্গলবার রাতে একবালপুর থেকে এক রত্ন ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়েছে। কিন্তু থানায় লাগাতার জেরার পরেও ওই ব্যবসায়ী বুধবার রাত পর্যন্ত খুনের দায় স্বীকার করেননি।
কেন সন্দেহভাজনের তালিকায় ওই ব্যবসায়ী?
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার আগে বেশ কয়েক বার ওই ব্যবসায়ী সেলিমের মোবাইলে ফোন করেছিলেন। কিন্তু কেন ফোন করেছিলেন তার কোনও সঠিক ব্যাখ্যা তিনি দিতে পারেননি। খুনের ঘটনার সময়ে তিনি ওই এলাকায় ছিলেন বলেও তদন্তকারীরা জেনেছেন। তাঁর কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে বেশ কয়েকটি সিমকার্ড। মোবাইলে ওই ব্যবসায়ী যাঁদের সঙ্গে কথা বলেছেন তা সন্দেহজনক বলেই মনে হয়েছে গোয়েন্দাদের। তদন্তকারীদের দাবি, ওই ব্যবসায়ী সেলিমের নতুন একটি ব্যবসায়িক ডিলের খবর জানতেন। আরও দুই সন্দেহভাজন আততায়ীর খোঁজে বর্ধমান, বীরভূম-সহ বিভিন্ন এলাকায় তল্লাশি চলছে। বুধবার পর্যন্ত ঘটনার কিনারা না হলেও পুলিশ প্রায় নিশ্চিত যে ঘটনায় পরিচিত কারও হাত রয়েছে। পুলিশ জানায়, দোকানটি ভাল ভাবে খুঁটিয়ে দেখলেই বোঝা যায়, নির্দিষ্ট কিছু লুঠ করতেই এসেছিল আততায়ীরা। যা পরিচিত ছাড়া কারও পক্ষে জানা সম্ভব না।
নাখোদা মসজিদের দু’নম্বর গেটের সামনেই পাঁচ নম্বর জাকারিয়া স্ট্রিট। সেখানেই তিরিশ বছর ধরে ব্যবসা সামলাতেন সোমবার খুন হওয়া মহম্মদ সেলিম। তাঁর দোকান থেকে তিনটি হিরে ও প্রায় এক লক্ষ টাকা নিয়ে পালায় দুষ্কৃতীরা। সেলিমের হাত থেকে একটি দামি পাথরের আংটি ও তাঁর মোবাইলও নিয়ে যায় আততায়ীরা। ভর সন্ধ্যায় নিজের দোকানে যে ভাবে খুন হন সেলিম, তাতে বাকি ব্যবসায়ীরাও নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন। ওই গলিতে সারি দিয়ে প্রায় পঞ্চাশটি দোকান রয়েছে। প্রত্যেকটিই দামী পাথরের। বুধবার দুপুরে নাখোদা মসজিদ ও তার আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তার অভাব নিয়ে সরব হন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। তাঁদের আবেদন, জোড়াসাঁকো এলাকার প্রতিটি রাস্তায় সিসি ক্যামেরা বসানো হোক। নাখোদা মসজিদের ইমাম সফিক কুরেশিও বলেন, ‘‘মসজিদ পরিচালন সমিতিকে প্রতিটি গেটে সিসি ক্যামেরা বসানোর বিষয়ে আগেই বলা হয়েছে। সংলগ্ন জাকারিয়া স্ট্রিটেও সিসি ক্যামেরা নেই। নিরাপত্তার স্বার্থে মসজিদ সংলগ্ন রাস্তায় সিসি ক্যামেরা যাতে বসানো যায়, সে বিষয়ে পুলিশ কমিশনারকে চিঠি লিখে জানাব।’’
কলকাতা পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘ঘটনাস্থল ও সংশ্লিষ্ট এলাকায় সিসি ক্যামেরা না-থাকলেও, সংলগ্ন অঞ্চলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy