কলকাতা পুরসভা। —ফাইল চিত্র।
পানীয় জল পরিশোধনের জন্য আগামী অর্থবর্ষে বেশি টাকার পরিশোধক ও জীবাণুমুক্ত করার দ্রবণ কিনতে চলেছে কলকাতা পুরসভা। পুর প্রশাসনের একাংশের বক্তব্য, কর্তারা মুখে স্বীকার না করলেও আন্ত্রিক থেকে ঠেকে শিখেই তাঁদের এই সিদ্ধান্ত।
প্রসঙ্গত, জলকে পরিশোধন ও জীবাণুমুক্ত করে পানযোগ্য করতে নানা পর্যায়ে কঠিন বা তরল দ্রবণ ব্যবহার করে পুরসভা। পরিশোধনের প্রাথমিক পর্যায়ে সলিড অ্যালাম, লিকুইড অ্যালাম বা পলি অ্যালুমিনিয়াম ক্লোরাইড (লিকুইড) ব্যবহার করা হয়। আর পরিশোধনের চূড়ান্ত পর্যায়ে তা জীবাণুমুক্ত করার জন্য লিকুইড ক্লোরিন, সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইড-সহ কঠিন বা তরল দ্রবণ ব্যবহার করা হয়। গার্ডেনরিচ, ধাপা, পলতা-সহ একাধিক জলপ্রকল্প ও বুস্টার পাম্পিং স্টেশনে ওই দ্রবণ বা পাউডারগুলি ব্যবহার করে পুরসভা।
পুর অর্থ দফতর সূত্রের খবর, ২০১৭-’১৮ আর্থিক বছরে যেখানে সলিড অ্যালাম কেনা হয়েছিল ৩ কোটি ৮৫ লক্ষ টাকার, সেখানে আগামী অর্থবর্ষে তা কেনার প্রস্তাব রয়েছে প্রায় ৮ কোটি ২১ লক্ষ টাকার। অর্থাৎ, ৪ কোটি ৩৫ লক্ষ ৯৯ হাজার টাকার অতিরিক্ত সলিড অ্যালাম কেনা হচ্ছে! একই ভাবে, চলতি আর্থিক বছরে যেখানে লিকুইড অ্যালাম কেনা হয়েছে ২ কোটি ৬৬ লক্ষ টাকার, সেখানে আগামী বছরের জন্য ৪ কোটি ১৩ লক্ষ ৮২ হাজার টাকার লিকুইড অ্যালাম কেনার প্রস্তাব রয়েছে। এখানেও প্রায় দেড় কোটি টাকা অতিরিক্ত খরচ করা হচ্ছে। একই ভাবে পলি অ্যালুমিনিয়াম ক্লোরাইড (লিকুইড) কেনা হবে অতিরিক্ত প্রায় সাড়ে ২৬ লক্ষ টাকার।
লিকুইড ক্লোরিন কিনতেও বেশি টাকা খরচের প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। ২০১৭-’১৮ সালে লিকুইড ক্লোরিন কেনা হয়েছিল ২ কোটি ১৮ লক্ষের। সেটা আগামী বছরে কেনা হবে ২ কোটি ৬৩ লক্ষ ৪১ হাজারের। পুরকর্তাদের একাংশের ব্যাখ্যা, প্রথম দিকে আন্ত্রিক নিয়ে টালবাহানা করলেও পরে তাঁরা বুঝতে পেরেছিলেন যে, নিজেদের সরবরাহ করা জলেই ‘সমস্যা’ ছিল। সেই কারণেই বাঘা যতীন, যাদবপুরের মতো পরিস্থিতি সামাল দিতে আগেভাগে ঘর গুছিয়ে রাখার প্রস্তুতি নিচ্ছে পুরসভা। এক কর্তার কথায়, ‘‘কোনও সমস্যাই যদি না থাকে, তা হলে জল পরিশোধন ও জীবাণুমুক্ত করার জন্য কেন বাড়তি কোটি কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে?’’
যদিও পুর কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, ওই উপকরণগুলির দাম আগের থেকে বেড়েছে। তাই সেগুলি কিনতে বেশি পরিমাণ অর্থ খরচের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এক পদস্থ আধিকারিকের কথায়, ‘‘প্রতি বছরই এগুলি কেনা হয়। এ বার দাম বেড়েছে, তাই টাকা বেশি লাগবে। সে ভাবেই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy