Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

সবুজায়নে পার্কিংই কাঁটা

মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, রডন স্কোয়ারের ভিতরে থাকা পুকুরটি সংস্কার করে তার চার পাশে সৌন্দর্যায়ন করা হবে। জলাশয়ের চারপাশে গড়ে তোলা হবে পার্ক। আরও গাছ দিয়ে সাজানো হবে পুরো এলাকা। লাগানো হবে পরিবেশবান্ধব আলো। এর জন্য দু’কোটি টাকা দেবে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ।

 রডন স্কোয়ার নিয়ে আন্দোলনের সময়ে লাঠি উঁচিয়ে পুলিশ। ফাইল চিত্র

রডন স্কোয়ার নিয়ে আন্দোলনের সময়ে লাঠি উঁচিয়ে পুলিশ। ফাইল চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৭ ০১:৫২
Share: Save:

‘সবুজ বাঁচাও’-এর ডাক দিয়ে আটের দশকে রডন স্কোয়ারে জোর আন্দোলন চালিয়েছিল রাজ্য কংগ্রেস। ওই জায়গায় একটি সাংস্কৃতিক ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র গড়তে উদ্যোগী হয়েছিল তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার। কিন্তু সবুজ ধ্বংস করে সেখানে কাঠামো গড়া যাবে না, এই দাবিতে প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়দের প্রতিবাদী আন্দোলনের চাপে ওই সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখতে হয় বাম সরকারকে। তার পরে দীর্ঘ ৩০ বছর রডন স্কোয়ারের আর খোঁজ রাখেনি কেউ।

সবার অলক্ষ্যে ওই রডন স্কোয়ারের একটি অংশে প্রায় তিন হাজার বর্গফুট এলাকায় তৈরি হয়েছে পার্কিংয়ের জায়গা। স্থানীয় একটি স্কুলের পড়ুয়াদের অভিভাবকেরা সেখানে গাড়ি রাখছেন। তিন একর জমির বাকি অংশটি পড়ে রয়েছে অযত্নে। ঝোপঝাড়ে ভর্তি গোটা এলাকা। ভিতরে যে পুকুর রয়েছে, তা বাইরে থেকে বোঝার উপায় নেই। পূর্ত দফতরের অধীন ওই এলাকাটিকে এ বার সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলকাতা পুরসভা।

মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, রডন স্কোয়ারের ভিতরে থাকা পুকুরটি সংস্কার করে তার চার পাশে সৌন্দর্যায়ন করা হবে। জলাশয়ের চারপাশে গড়ে তোলা হবে পার্ক। আরও গাছ দিয়ে সাজানো হবে পুরো এলাকা। লাগানো হবে পরিবেশবান্ধব আলো। এর জন্য দু’কোটি টাকা দেবে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। সৌন্দর্যায়নের কাজটা করবে কলকাতা পুরসভা।

মেয়র বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চান, সবুজ বাঁচিয়ে রেখেই ওই জায়গাটিকে সুন্দর করে গড়ে তোলা হোক।’’ দিন কয়েক আগেই মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার-সহ পুরসভার
ইঞ্জিনিয়ারিং, সিভিল, পার্ক দফতরের ডিজি-দের নিয়ে তিনি রডন স্কোয়ারে গিয়েছিলেন। কী দেখেছেন তাঁরা? মেয়র জানান, বড় পুকুরে লম্বা
লম্বা গাছ গজিয়ে গিয়েছে। পুকুর বলে চেনার উপায় নেই। জায়গাটা জঙ্গলে ভর্তি হয়ে রয়েছে।

বৃহস্পতিবার সেখানে গিয়ে দেখা গেল, ইতিমধ্যেই কাজে লেগে গিয়েছেন পুরসভার কর্মীরা। তবে একপাশের জমি দখল করে কে বা কারা সেখানে গাড়ি রেখেছে।
সবুজায়ন প্রকল্পে গাড়ি কেন? পুরসভার এক কর্তা জানান, মূল রাস্তা থেকে ঢোকার মুখেই প্রায় তিন হাজার বর্গফুট এলাকায় একটি পার্কিং লট বানানো হচ্ছে। সেখানে স্থানীয় এলাকার বিভিন্ন স্কুলে আসা অভিভাবকদের গাড়ি রাখার জায়গা করা হচ্ছে। ওই অভিভাবকেরা বিনা পয়সায় সেখানে গাড়ি রাখতে পারবেন। অন্যদের গাড়ি রাখার জন্য ফি দিতে হবে।

একেবারে পাশেই গাড়ি রাখার জন্য রয়েছে তিনতলা পার্কোম্যাট। সেখানে যথেষ্ট গাড়ি থাকে না। পার্কোম্যাটে গাড়ি না রেখে পার্কের সবুজ দখল কেন? পার্ক, জলাশয় এবং সবুজ পরিবেশের সঙ্গে গাড়ির ধোঁয়া বেমানান নয় কি? কোনও জবাব মেলেনি পুর অফিসারদের কাছ থেকে। মেয়র নিজেই পরিবেশমন্ত্রী। তাঁর সংক্ষিপ্ত জবাব, ‘‘সব দেখেশুনেই কাজ করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE