ফরাসি সংস্থা অ্যালস্টমের বিরুদ্ধে কলকাতা মেট্রোতেও দুর্ঘটনা রোখার ‘অ্যান্টি কলিশন ডিভাইস’ বসানো নিয়ে অভিযোগ উঠল। দিল্লি, কলকাতা-সহ বিভিন্ন রাজ্যের বেশ কয়েকটি পরিবহণ প্রকল্পে ওই সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠায় তদন্ত শুরু করেছে কেন্দ্রীয় নগরন্নোয়ন মন্ত্রক। পাশাপাশি, রেলমন্ত্রকও বিভিন্ন শহরের মেট্রো প্রকল্পগুলিতে ওই সংস্থার বরাত পাওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখছে বলেও দিল্লি সূত্রে জানা গিয়েছে।
কলকাতা মেট্রোর কর্তা ও কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, ফরাসি সংস্থা অ্যালস্টম মেট্রোর লাইনে দুর্ঘটনা রুখতে অ্যান্টি কলিশন ডিভাইস বসানোর জন্য ৩৬ কোটি টাকার বরাত নিয়েছিল। অথচ সেই প্রযুক্তিতে এক দিনও ট্রেন চালানো সম্ভব হয়নি। উল্টে ওই প্রযুক্তির জন্য মেট্রোর খরচ হয়ে যায় মোট ৭৩ কোটি টাকা। আর ওই প্রযুক্তি চালু না হওয়ায় ২০০৩ সাল থেকে
কলকাতা মেট্রোর লাইনে দুর্ঘটনা রুখতে কোনও ‘অ্যান্টি কলিশন ডিভাইস’ কার্যকর ছিল না। এ বছর জুন মাসে নতুন আর একটি সংস্থার তৈরি ওই প্রযুক্তি (অ্যান্টি কলিশন ডিভাইস) বসিয়ে চালু করেছে কলকাতা মেট্রো।
ইতিমধ্যেই ফরাসি ওই সংস্থাটির বিরুদ্ধে ভারত (দিল্লি মেট্রো)-সহ পোল্যান্ড, টিউনিশিয়ায় তিনটি বড় পরিবহণ প্রকল্পে বরাত পাওয়া নিয়ে ঘুষের অভিযোগ উঠেছে। ব্রিটেনের তদন্তকারী দফতর ইতিমধ্যে বিষয়টি নিয়ে সিরিয়াস ফ্রড অফিস (এসএফও) তদন্তও শুরু করেছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও কী করে এ দেশে ওই সংস্থাটিকে কালো তালিকাভুক্ত না করে দেশ জুড়ে একের পর এক মেট্রোর বরাত দেওয়া হচ্ছে, সেটা নিয়েই এখন প্রশ্ন উঠেছে রেলের কর্তা ও কর্মীদের মধ্যে। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই নড়েচড়ে বসেছে কেন্দ্রীয় নগরন্নোয়ন এবং রেলমন্ত্রক।
মেট্রো সূত্রের খবর, লাইনে দুর্ঘটনা রুখতে ‘অ্যান্টি কলিশন ডিভাইস’-এর বরাত নিয়েছিল ফরাসি ওই সংস্থাটি। কিন্তু ওই প্রযুক্তি কোনও কাজে আসেনি। মেট্রোকর্মী ও অফিসারদের একাংশের অভিযোগ, যে যন্ত্রাংশ ও প্রযুক্তি দিয়ে ওই সংস্থা কাজটি করে, তা ছিল অনেক পুরনো। এই নিয়ে মেট্রোর ইউনিয়নের পক্ষ থেকেও বারবার রেল বোর্ডে জানানো হয়। কিন্তু লাভ হয়নি।
এর পরে দু’-তিনটি মেট্রো চালিয়েই কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে বলে জানিয়ে দেয় ওই সংস্থা। কিন্তু পরে ওই প্রযুক্তি দিয়ে আর কখনও ট্রেন চালানো সম্ভব হয়নি। মেট্রোর ইউনিয়নের তরফে তৎকালীন সম্পাদক দিলীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ওই সংস্থা যা যন্ত্রপাতি এনেছিল, তা মেট্রোর রেকের সঙ্গে খাপ খায়নি। আমরা বিষয়টি নিয়ে বারবার রেল বোর্ডকে জানিয়েছি। কিন্তু কাজ হয়নি।” এ বার ওই সংস্থার বিরুদ্ধে তিন দেশে অভিযোগ ওঠায় কলকাতা মেট্রোর অভিযোগ নিয়েও নতুন করে নড়েচড়ে বসেছে মেট্রোর কর্তা ও কর্মীরা। মেট্রোর বক্তব্য, রেল বোর্ডও বিষয়টি নিয়ে নতুন করে খতিয়ে দেখা শুরু করেছে।
বিদেশ থেকে এসএফও-র অভিযোগ পাওয়ার পরেই দিল্লির সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকগুলি নড়েচড়ে বসে। নগরন্নোয়ন মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, রেলমন্ত্রকে বলা হয়েছে, কলকাতা মেট্রোর ওই কাজের সব কাগজপত্র ও অভিযোগ চেয়ে পাঠানো হচ্ছে। বেঙ্গালুরু ও কোচি মেট্রোতেও ওই সংস্থার বরাত পাওয়ার ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy