প্রতীকী ছবি।
স্কুলছুট ধরতে বিশেষ নজরদারি রাখা হচ্ছিল বছরখানেক ধরে। স্কুলে পড়া শেষ না করেই মাঝপথে কেউ স্কুল ছেড়ে দিল কি না তা খতিয়ে দেখতে পাঁচ বছর আগে শুরু হয়েছিল চাইল্ড রেজিস্ট্রার পদ্ধতি। সেই রেজিস্ট্রার পদ্ধতি রক্ষায় তথ্য সংগ্রহের কাজ করতেন পার্শ্বশিক্ষকেরা। এ বছরে ওই পদ্ধতি রাখার ক্ষেত্রে বেশ কিছু গলদ সামনে এসেছে বলে অভিযোগ করছেন তথ্য সংগ্রহকারী শিক্ষকেরাই, এমনটাই জানাচ্ছে স্কুল শিক্ষা দফতর।
প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ুয়াদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সেই তথ্য সংগ্রহ করা হত। দক্ষিণ কলকাতার মোমিনপুর, গার্ডেনরিচ এবং টালিগঞ্জ রেলসেতু এলাকায় পরিদর্শন করতে গিয়েই ত্রুটি নজরে এসেছে। তার রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে কলকাতা জেলা স্কুল পরিদর্শক এবং সর্বশিক্ষা মিশনের কাছে।
স্কুল শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, এ কাজে প্রধানত নিয়োগ করা হয় পার্শ্বশিক্ষকদের। তাঁরা বিভিন্ন স্কুলের রেজিস্ট্রার তৈরি করতে এলাকা ঘুরে মাঝ পথে পড়া ছেড়ে যাওয়া শিশুদের স্কুল ছাড়ার কারণ জিজ্ঞাসা করেন। কথা বলেন, তাঁদের অভিভাবকদের সঙ্গেও। নিয়ম অনুযায়ী, তাঁরা ওই পড়ুয়াকে বাড়ির কাছের কোনও স্কুলে নিয়ে গিয়ে ফের ভর্তি করান। কিন্তু গার্ডেনরিচ, মোমিনপুর-সহ টালিগঞ্জ রেলসেতু সংলগ্ন এলাকায় সেই কাজেও সমস্যা দেখা দিয়েছে বলে জানাচ্ছেন পার্শ্বশিক্ষকদের একাংশ। তাঁরা অভিযোগ করছেন, স্কুলছুট পড়ুয়াদের ফের ভর্তি করাতে নিয়ে গেলেও অনেক স্কুলই তাদের নিতে অস্বীকার করে। পাশাপাশি স্থানীয় পার্শ্বশিক্ষকদের কাজে না লাগানোয় সমস্যা তৈরি হয়েছে। দূরের স্কুলের পার্শ্বশিক্ষক এলাকায় আসায় রাস্তা চিনতে পারছেন না। ফলে সময়ের মধ্যে পুরো কাজ সঠিক ভাবে করা হচ্ছে না। কলকাতার অন্যত্র এই সমস্যাটা সে ভাবে নেই।
স্কুল শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, অথচ ওই এলাকাগুলিতেই বাড়তি নজরদারির প্রয়োজন। ইতিমধ্যেই রাজ্য পার্শ্বশিক্ষক কল্যাণ সমিতি অভিযোগ জমা দিয়েছে। তাদের অভিযোগ, পদ্ধতির মধ্যে সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। পরিকাঠামোর আরও উন্নতি হওয়া প্রয়োজন বলে দাবি তাদের। সম্প্রতি সমীক্ষা করার পরে ওই পার্শ্বশিক্ষকেরা মতামত লিখে পাঠিয়েছেন সংশ্লিষ্ট সার্কেলের (কয়েকটি এলাকার কিছু স্কুলকে নিয়ে একটি সার্কেল তৈরি হয়) প্রোজেক্ট কো-অর্ডিনেটরের কাছে। সেই অভিযোগ পাঠানো হয়েছে কলকাতা জেলা স্কুল শিক্ষা দফতরেও।
সংশ্লিষ্ট সার্কেলের প্রস্তাব, প্রথমত, এলাকাগুলি বিশেষ অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত করা হোক। দ্বিতীয়ত, বাড়তি পার্শ্বশিক্ষক নিয়োগ করা হোক এই এলাকায়। তৃতীয়ত, স্কুলছুটদের অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য জেলা স্কুল শিক্ষা দফতর থেকে যেন নির্দেশ পাঠানো হয় স্থানীয় স্কুল কর্তৃপক্ষদের। আর্থিক কারণে স্কুল ছাড়ছে যে সব পড়ুয়া, তাদের অভিভাবকদের দফতর থেকে কাউন্সেলিং করানোর আবেদনও রয়েছে সেই প্রস্তাবে।
জেলা স্কুল শিক্ষা দফতরের এক কর্তা জানান, এখনও এ রকম কোনও চিঠি পাননি। তাঁর কথায়, ‘‘এটা গুরুতর বিষয়। আমি বিষয়টি খতিয়ে দেখব। দ্রুত সমাধান সূত্র যাতে বার করা যায়, সেই চেষ্টা করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy