ব্যাঙ্কের দরজায় তালা। —নিজস্ব চিত্র।
গৃহস্থের ঘরে যাতে চোর ঢুকতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে পুজোয় সজাগ ছিল পুলিশ। পুজোর মুখে নাগরিকদের সতর্ক করে লিফলেট-ও ছড়িয়েছিল লালবাজার। তবে বাড়ি নয়, উৎসবের সময়ে চোরের দল হানা দিল একটি ব্যাঙ্কে। তা-ও যেমন তেমন এলাকার ব্যাঙ্কে নয়। খাস ধর্মতলার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে।
পুলিশ জানায়, জানলার গ্রিল ভেঙে ঢুকে ভল্ট কেটে টাকা নিয়েছে চোরেরা। কত টাকা চুরি হয়ে গিয়েছে, তার ঠিকঠাক হিসেব পাওয়া না গেলেও পুলিশ জেনেছে, ষষ্ঠীর রাতে ওই ব্যাঙ্ক ছ’দিনের জন্য বন্ধ হওয়ার সময়ে তাতে প্রায় ৩০ লক্ষ নগদ টাকা মজুত ছিল। তবে তার পুরোটা দুষ্কৃতীরা সম্ভবত নিতে পারেনি।
কলকাতার প্রাণকেন্দ্র ধর্মতলা মোড় যে হেরিটেজ ভবনের ছবি দিয়ে চেনানো হয়, সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জি রোডের মুখে সেই মেট্রোপলিটন বিল্ডিংয়ে বহু বছর ধরে ওই ব্যাঙ্ক রয়েছে। যার ঠিকানা ৭ নম্বর জওহরলাল নেহরু রোড। চারতলা ভবনের দোতলায় ওই ব্যাঙ্ক।
রবিবার দুপুরে গিয়ে দেখা গেল, ছুটির দিনেও চিফ ম্যানেজার প্রতিভা ঠাকুর (মিশ্র) ও কয়েক জন আধিকারিক ও কর্মী ব্যাঙ্কে। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের ধারণা, ব্যাঙ্কের ভিতরের খবর কোনও না কোনও সূত্রে পেয়েছে চোরেরা।
আরও পড়ুন: বাড়তি টান আলোকসজ্জা
এই ঘটনায় শনিবার রাতে নিউ মার্কেট থানায় সিঁধেল চুরির মামলা রুজু করা হয়েছে। পুলিশের ধারণা, ২৬ সেপ্টেম্বর রাত থেকে ২৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কোনও এক সময়ে চোরেরা ঢুকেছিল। ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে ২ অক্টোবর ব্যাঙ্ক বন্ধ। কাল, মঙ্গলবার ব্যাঙ্ক খুলবে। তা হলে চুরি বোঝা গেল কী করে?
পুলিশ জানায়, শনিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, দশমী হলেও সে দিন ছিল ব্যাঙ্কের হাফ ইয়ারলি ক্লোজিং। চলতি আর্থিক বছরের প্রথম ছ’মাসের মোট জমা-খরচের হিসেব কষার দিন। ওই দিন কয়েক জন কর্তা ও কর্মী ব্যাঙ্কে যান। তখনই ধরা পড়ে চুরির ঘটনা। তবে, ব্যাঙ্কের কোনও আধিকারিক এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি।
মেট্রোপলিটন বিল্ডিংয়ের একতলায় ওই ব্যাঙ্কে ঢোকার প্রধান ফটক। তবে তার পাশে ওই বাড়িতে ঢোকার আর একটি পথ আছে। সে দিকে কার্নিশ বেয়ে উঠে গ্রিল ভেঙে চোরেরা ঢুকে ভল্ট কেটেছে বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ মনে করছে। শনিবার ব্যাঙ্কে ঢুকে কর্মীরা দেখেন, ভল্ট কাটা ছাড়াও বেশ কয়েকটি আলমারি লন্ডভন্ড করা হয়েছে, তার কাগজপত্র মেঝেয় ছড়ানো।
পুলিশের বক্তব্য, ধর্মতলার ওই তল্লাট বা আশপাশে বড় পুজো নেই। তাই, পুজোর ক’দিন পুলিশি নজরদারি খুব বেশি ওই জায়গায় থাকে না। চোরেরা সম্ভবত তারই সুযোগ নিয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ। পুজোয় এ বার বাড়িতে চুরি ঠেকাতে কী করণীয়, কী করণীয় নয়, সেই ব্যাপারে ১৩ দফা পরামর্শ সংবলিত লিফলেট বিলি করেছিল পুলিশ। লালবাজার জানাচ্ছে, পুজোর মধ্যে গৃহস্থ ঘরে চুরি হয়েছে, এমন কোনও অভিযোগ রবিবার রাত পর্যন্ত জমা পড়েনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy