ভোটের আগে উপহার কম্প্যাক্টর। আর তা নিয়েই রাজনৈতিক তরজা।
প্লাস্টিক দূষণ ঠেকাতে ও দ্রুত গতিতে জঞ্জাল অপসারণ করতে সদ্য গঠিত বিধাননগর পুরনিগমে ব্যবহার করা হবে কম্প্যাক্টর। এ বিষয়ে যদিও বিরোধী ও বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, পাঁচ বছর কাজ না করে ভোটের আগে ফায়দা তুলতে কল্পতরু হয়েছে শাসক দল। পাল্টা দাবিতে শাসক দলের দাবি, সল্টলেকে আগেও এই পরিকল্পনা হয়েছিল, অর্থ বরাদ্দ হয়েছিল। এর সঙ্গে ভোটের সম্পর্ক নেই।
সল্টলেকের জন্য আগেই পরিকল্পনা ছিল। এ বার রাজারহাট-গোপালপুর এলাকার জঞ্জাল অপসারণের জন্যও কম্প্যাক্টর যন্ত্র ব্যবহারের পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। উত্তর ২৪ পরগনার জেলা শাসক মনমিত চন্দ সম্প্রতি জানান, এ বার বর্ষায় রাজারহাট-গোপালপুরের বহু অংশ জলমগ্ন হওয়ার অন্যতম কারণ যত্রতত্র প্লাস্টিক-সহ নানা ধরনের জঞ্জাল পড়ে থাকা। তিনি বলেন, ‘‘নিকাশি ব্যবস্থা বেহাল ওই সব জায়গায়। প্লাস্টিক এর অন্যতম কারণ। ফলে এ বার কম্প্যাক্টর ব্যবহার করা হবে।’’
কলকাতা পুরসভার ধাঁচে হাঁটতে চলেছে বিধাননগর পুর-নিগম। এর মধ্যে একমাত্র সল্টলেকেই জঞ্জাল অপসারণ ব্যবস্থা পরিকল্পিত। তা সত্ত্বেও সেখানে এখনও খোলা ভ্যাট রয়ে গিয়েছে। বিধাননগর পুরসভার শেষ পুর-বোর্ড সল্টলেকে কম্প্যাক্টর বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তার জন্য রাজ্য সরকার প্রয়োজনীয় ১ কোটি ৫২ লক্ষ টাকা বরাদ্দও করে। পুরসভার কাছে সেই অর্থ চলেও এসেছে বলে সূত্রের খবর। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কম্প্যাক্টর কিনে উঠতে পারেননি প্রাক্তন তৃণমূল পরিচালিত সল্টলেক পুর-কর্তৃপক্ষ।
সল্টলেককে বাদ দিলে বিধাননগর পুর-নিগমের অন্তর্গত রাজারহাট-গোপালপুর, মহিষবাথান পঞ্চায়েতের একটি অংশ নিয়েই তৈরি হয়েছে নতুন পুর-নিগম। রাজারহাটের জঞ্জাল দক্ষিণ দমদমের ঘড়ুই মাঠকল এলাকায় ফেলা হলেও, যত্রতত্র আবর্জনাও পড়ে থাকতে দেখা যায় সেখানে। বিশেষত ভিআইপি রোডের নয়ানজুলির ধারে আবর্জনা, প্লাস্টিক স্তূপ হয়ে রয়েছে। যার জেরে নর্দমা ভরাট হয়ে গিয়েছে বহু জায়গায়।
সম্প্রতি পুর-নিগমের নিকাশি ও জঞ্জাল অপসারণের পরিকাঠামো সংস্কার নিয়ে উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক বিধাননগর পুরভবনে বৈঠক করেন। প্রশাসক পবন কা়ডিয়ান জানান, নিকাশি ও জঞ্জাল অপসারণ নিয়ে একটি বিশেষ ‘কনজারভেন্সি প্ল্যান’ তৈরি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘আগের সল্টলেক পুরবোর্ডের জন্য তিনটি কম্প্যাক্টরের অনুমোদন হয়েছিল। নতুন জায়গাগুলির জন্য কম্প্যাক্টর কাজে লাগানোর পরিকল্পনা হচ্ছে।’’ সূত্রের খবর, বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে দ্রুত জঞ্জাল সংগ্রহ করতে চলমান কম্প্যাক্টর ব্যবহার করার চেষ্টা চলছে।
বিজেপি ও বামেদের অভিযোগ, পাঁচ বছরে মূল সমস্যাগুলির দিকে নজর দেয়নি শাসক দল। এখন ভোটের আগে পরিকল্পনা শুরু করেছে। যদিও সল্টলেকে তৃণমূল নেতাদের দাবি, গত পাঁচ বছরে যে কাজ তৃণমূল পুরবোর্ড করেছে তা গত ১৫ বছরে বাম পুরবোর্ড করতে পারেনি। এখন উন্নয়ন মানুষ চোখে দেখতে পাচ্ছেন।
বিধাননগরের বিধায়ক সুজিত বসুর কথায়, ‘‘এ সব অভিযোগ ভিত্তিহীন। কিছু কারণে সে কাজ করা আগে যায়নি বলে এখনও করা যাবে না, তার তো কোনও মানে নেই! আর বিরোধীরা কী বলল, তার উপরে নির্ভর করে উন্নয়নের কাজ তো আটকে থাকবে না। এর সঙ্গে ভোটের কোনও সম্পর্কই নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy