Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

বিল বকেয়া, রোগীকে আটকে রাখার অভিযোগ

রোগীর পরিবার ওই বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আলিপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। যদিও অভিযোগ উঠেছে, পুলিশ তার পরেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি, তাই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে রোগীর পরিবার।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

মেহবুব কাদের চৌধুরী
শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০১৮ ০১:৪৯
Share: Save:

বিল মেটাতে না পারায় রোগীকে আটকে রাখার অভিযোগ উঠল একবালপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে।

রোগীর পরিবার ওই বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আলিপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। যদিও অভিযোগ উঠেছে, পুলিশ তার পরেও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি, তাই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে রোগীর পরিবার। সোমবার আলিপুর আদালতের মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট প্রদীপকুমার গঙ্গোপাধ্যায় অবিলম্বে আলিপুর থানার ওসি’কে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে যথাযথ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

পুলিশ সূত্রের জানা গিয়েছে, গত ১৪ ডিসেম্বর প্যানক্রিয়াটাইটিসে আক্রান্ত হয়ে একবালপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন জোড়াসাঁকোর বাসিন্দা রাজীবলোচন তিওয়ারি নামে এক যুবক। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও ওই হাসপাতালের চার তলায় আইসিইউ-এ চিকিৎসাধীন তিনি।

রাজীববাবুর ভাই ভিকি তিওয়ারির অভিযোগ, ‘‘হাসপাতালের বিল ক্রমশ বাড়তে থাকায় ২০ জানুয়ারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানাই দাদাকে ছাড়িয়ে নিয়ে যাব। সেই দিন পর্যন্ত বকেয়া দশ লক্ষ টাকার মধ্যে ৮ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছিল।
মুচলেকা দিয়ে পরে বাকি দু’লক্ষ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়। তা সত্ত্বেও আমাদের বলা হয়, পুরো টাকা না মেটালে রোগীকে ছাড়া হবে না।’’ রাজীবের বড়দা নীলু তিওয়ারির কথায়, ‘‘দেড় মাসের বেশি সময় ধরে ওই বেসরকারি হাসপাতালের বিপুল অর্থভার বহন করা আমাদের পক্ষে অসম্ভব। আমরা ভাইকে অবিলম্বে কোনও সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করতে চাই।’’

ভিকির অভিযোগ, ‘‘দাদাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত আবেদন করেছিলাম। কিন্তু আমাদের কথায় কর্ণপাত করেননি কর্তৃপক্ষ।
বর্তমানে বকেয়া বিল দাঁড়িয়েছে প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা। আমরা ওই টাকা কী ভাবে শোধ করব সেই নিয়ে ঘোর দুশ্চিন্তায় রয়েছি।’’

বিল মেটাতে না পারায় ২০ জানুয়ারির পর থেকে তাঁর দাদা রাজীবলোচনকে কার্যত বিনা চিকিৎসায় ফেলে রাখা হয়েছে বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন রোগীর ভাই।

জোড়াসাঁকো থানা এলাকায় মা ও তিন ভাই মিলে বসবাস তিওয়ারি পরিবারের। তাঁদের বাবা প্রয়াত হয়েছেন। তিন ভাইয়ের পারিবারিক ব্যবসা রয়েছে।

থানায় অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও পুলিশ কেন ওই রোগীকে ছাড়াতে হাসপাতালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না? এই প্রশ্নের উত্তরে আলিপুর থানার ওসি সন্দীপ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এখনও আদালতের নির্দেশ হাতে পাইনি। পেলে সেই অনুযায়ী যাবতীয় ব্যবস্থা নেব।’’

যদিও ওই হাসপাতালের তরফে তিওয়ারি পরিবারের তরফে আনা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। ওই হাসপাতাল সূত্রে দাবি, কর্তৃপক্ষ ২০ জানুয়ারি রাজীবলোচন তিওয়ারিকে হাসপাতাল থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার সম্মতি দিয়েছিলেন। উল্টে রোগীর বাড়ির লোকজনই নানা অজুহাতে রোগীকে হাসপাতালে রেখে দিয়েছেন। বিনা চিকিৎসায় রোগীকে ফেলে রাখার অভিযোগও উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে হাসপাতালের তরফে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE