গভীর রাতে পুরো বদলে ফেলা হল সেই মূর্তির সাজ। —নিজস্ব চিত্র।
বিতর্ক শুরু হতেই বদলে দেওয়া হল মহম্মদ আলি পার্কের অসুররূপী ডাক্তারের মূর্তি। পুজো কমিটির তরফ থেকে জানানো হয়েছে যে বর্তমানে ওই মূর্তিতে একটি শিশু পাচারকারীর মূর্তির রূপ দেওয়া হয়েছে।
শনিবার দিনভর ডাক্তারদের প্রতিবাদ চলায় সন্ধ্যায় বিষয়টিতে হস্তক্ষেপ করেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি সাফ জানিয়ে দেন, ওই মূর্তি মণ্ডপ থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘এমন কিছু বরদাস্ত করব না, যাতে বিশেষ কোনও গোষ্ঠীর ভাবাবেগে আঘাত লাগতে পারে।’’
মুখ্যমন্ত্রীর এই নির্দেশের পরেই অবশ্য সুর পাল্টে ফেলেন ওই পুজোর উদ্যোক্তারা। পুজো কমিটির সভাপতি দীনেশ বজাজ বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী আমাদের অনুরোধ করেছিলেন ওই চিকিৎসকের মডেল সরিয়ে ফেলতে। আমরা সেইমতো কাজ করেছি। ভুয়ো ডাক্তারের বদলে ওই মূর্তিটিকে আমরা শিশু পাচারকারীর রূপ দিচ্ছি।’’
এর আগে বিতর্ক এড়াতে অসুরের গলায় পোস্টার ঝুলিয়ে ছিলেন মহম্মদ আলি পার্কের পুজো উদ্যোক্তারা। ঝোলানো সেই পোস্টারে লেখা ছিল, ‘‘অসুররূপী নকল ডাক্তারদের প্রতি ঘৃণা। আসল ডাক্তারদের প্রতি শ্রদ্ধা।’’ এরই পাশাপাশি, বিতর্ক হলেও অসুরের মূর্তি পাল্টানো হবে না বলেই পুজোর উদ্যোক্তাদের তরফে শনিবার স্পষ্ট করে জানানো হয়েছিল।
আরও পড়ুন: অস্কার-দৌড়ে ভারতের ঘোড়া রাজকুমারের ‘নিউটন’
সেই পোস্টার।— নিজস্ব চিত্র।
মহম্মদ আলি পার্কের পুজো ঘিরে বিতর্কের সূচনা শুক্রবার। কারণ, এ বার এই পুজোয় অসুর হিসেবে দেখানো হয়েছে চিকিৎসকদের। সে খবর চাউর হতেই তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে রাজ্যের চিকিৎসক মহলে। এমনিতেই চিকিৎসার গাফিলতি-সহ একাধিক ইস্যুতে চিকিৎসকদের আক্রান্ত হওয়ার খবর মাঝেমধ্যেই শোনা যায়। মাস কয়েক আগেই রাজ্যের চিকিৎসকদের মানবিক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বেসরকারি হাসাপাতালগুলির ভুল ধরার জন্য গঠন করা হয় কমিশন। এরই মধ্যে পুজোয় চিকিৎসকদের অসুর হিসেবে দেখানোয় যেন আগুনে ঘৃতাহুতি পড়েছে।
দিনভর সমালোচনা হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। অনেকে ‘বয়কট মহম্মদ আলি পার্ক’ বলে স্টেটাস দিয়েছেন। প্রশ্ন ওঠে, এ ভাবে কোনও পেশাকে অসম্মান করা যায় কি?
কারও বক্তব্য, বহু রাজনীতিকও দুর্নীতিগ্রস্ত। তা হলে তাঁদের মডেল রাখা হচ্ছে না কেন? অনেক চিকিৎসক সোশ্যাল মিডিয়ায় কটাক্ষ করে লিখেছেন, অসুর হলেও এ বার পুজো পাবেন চিকিৎসকেরা।
কারণ দুর্গাপুজোয় অসুরকেও পুজোর রীতি রয়েছে।
তবে সন্ধ্যায় মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরে অবশ্য বিতর্কে দাঁড়ি পড়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy