সুনসান: থানার পিছনে এই দিক দিয়েই পালায় অভিজিৎ। নিজস্ব চিত্র
থানার ডিউটি অফিসারের ঘরের মধ্যেই লক-আপ। সেখানেই রাখা হয়েছিল তিন দুষ্কৃতীকে। তাদের মধ্যে এক জন চম্পট দিল লক-আপেরই জানলা দিয়ে! বৃহস্পতিবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে বেলঘরিয়া থানায়।
পুলিশ সূত্রের খবর, সোমবার গভীর রাতে নীলগঞ্জ রোডে টহল দেওয়ার সময়ে বেলঘরিয়া থানার পুলিশ জয়দীপ ঘোষ নামে এক দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করে। তার থেকে উদ্ধার হয় গুলি ভর্তি পাইপগান। জয়দীপকে জেরা করে পরের দিন মঙ্গলবার তার দুই শাগরেদকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের নাম অভিজিৎ মল্লিক ও পচা। অভিজিতের বাড়ি নিমতায়। পচা বেলঘরিয়ার বাসিন্দা। তাদের থেকেও আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়। বুধবার ব্যারাকপুর আদালতে হাজির করানোর পরে তিন জনকেই জেরার জন্য পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছিল।
পুলিশ জানায়, ওই দিন দুষ্কৃতীকে রাখা হয়েছিল বেলঘরিয়া থানার ডিউটি অফিসারের ঘরের ভিতরে থাকা লক-আপে। এ দিন বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ আচমকাই পুলিশকর্মীদের চোখে পড়ে, লক-আপে জয়দীপ ও পচা শুয়ে থাকলেও অভিজিৎ নেই। তাঁরা আরও খেয়াল করেন, লক-আপের পিছনের দিকে ছোট জানলাটির রড খোলা। যদিও জয়দীপ ও পচা এ বিষয়ে কিছুই জানে না এবং তারা ঘুমিয়ে ছিল বলেই পুলিশের কাছে দাবি করেছে।
ব্যারাকপুর কমিশনারেট সূত্রের খবর, বেলঘরিয়া থানায় দু’টি লক-আপ। একটি আইসি-র ঘরের সামনে, অন্যটি ডিউটি অফিসারের ঘরের ভিতরে। কোনও আসামিকে গ্রেফতার করে আনার পরে বা পুলিশি হেফাজতে নেওয়া কোনও আসামিকে জেরা করার জন্য ডিউটি অফিসারের ঘরের লক-আপে রাখা হয়। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, রোগা-পাতলা চেহারার অভিজিৎ কোনও ভাবে ছোট জানলাটির রড খুলে তা দিয়ে চম্পট দিয়েছে। বেলঘরিয়া থানার ওই লক-আপটির পিছনের দিকটি নীলগঞ্জ রোডের দিকে। জায়গাটি খুবই নির্জন। থানার সীমানা প্রাচীরের গা ঘেঁষে বাজার। পুলিশের ধারণা, লক-আপ থেকে বেরিয়ে পাঁচিল টপকে বাজারের মধ্যে দিয়ে নীলগঞ্জ রোডে এসে চম্পট দিয়েছে অভিজিৎ। জেলা-সহ পাশ্ববর্তী সব থানায় ওই আসামির ছবি পাঠানো হয়েছে।
ব্যারাকপুর সিটি পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (জোন ২) ধ্রুবজ্যোতি দে বলেন, ‘‘থানার লক-আপ থেকে এক অভিযুক্ত পালানোর ঘটনা ঘটেছে। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে।’’ পুলিশ সূত্রের খবর, ডিউটি অফিসারের ঘরের ভিতরে লক-আপ। সেখানে থাকা আসামি কী ভাবে জানলার লোহার রড খুলে ফেলল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জানলার রড খোলা ও তা দিয়ে পালানোর সময়ে কেন কারও চোখে পড়ল না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy