Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

রাতের এটিএমে আবার প্রশ্নের মুখে গ্রাহক-সুরক্ষা

রাতবিরেতে এটিএমে টাকা তুলতে গেলে নিজেকে ভাগ্যের হাতে সঁপে দিন। কারণ, বিপদে পড়লে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ বা পুলিশ কাউকেই পাশে পাবেন না। মুখে কেউ সরাসরি এ কথা না বললেও গভীর রাতের এটিএমের নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখে এমন ছবিই উঠে এসেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০১৫ ০১:১০
Share: Save:

রাতবিরেতে এটিএমে টাকা তুলতে গেলে নিজেকে ভাগ্যের হাতে সঁপে দিন। কারণ, বিপদে পড়লে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ বা পুলিশ কাউকেই পাশে পাবেন না। মুখে কেউ সরাসরি এ কথা না বললেও গভীর রাতের এটিএমের নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখে এমন ছবিই উঠে এসেছে। যে ছবির সমর্থন জুগিয়েছে শনিবার রাতের বাগুইআটির একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এটিএম কাউন্টার।

পুলিশ জানায়, সোনা সিংহ নামে এক দাগি চোর ওই এটিএমের ইউপিএস ও ব্যাটারি চুরি করে পালাচ্ছিল। তখনই টহলদার পুলিশ হাতেনাতে তাকে ধরে। শনিবার রাতে ওই এটিএমে কোনও গ্রাহক থাকলে তাঁর কী হাল হত, তা অবশ্য কেউ জানেন না। যেমন হয়েছিল ২০১৩-র নভেম্বরে বেঙ্গালুরুর একটি এটিএমে। সেখানে টাকা তুলতে যাওয়া এক মহিলাকে ছুরি মেরে টাকা লুঠ করে পালায় এক দুষ্কৃতী।

বেঙ্গালুরুর ওই ঘটনার পরে নড়ে বসেন এ রাজ্যের পুলিশ ও ব্যাঙ্ককর্তারা। বৈঠকে উঠে আসে এটিএম নিরাপত্তা বাড়ানোর ‘হাজার’ দাওয়াই। যেমন, রক্ষী মোতায়েন করতে হবে। বসাতে হবে উন্নত সিসিটিভি। এটিএম-এর দরজায় কার্ড পাঞ্চ করে ঢোকার ব্যবস্থা রাখতে হবে। পুলিশকর্তারাই মানছেন, সে সব কাজে লাগানো হয়নি। ফলে গ্রাহকেরা যেমন গভীর রাতে বা ভোরে টাকা তুলতে গেলে নিরাপদ নন, তেমনই নিরাপদ নয় এটিএম-ও। পুলিশ সূত্রে খবর, কলকাতাতেও রক্ষীহীন এটিএম-এর বিপদ রয়েছে। সম্প্রতি আমহার্স্ট স্ট্রিটে এক বেসরকারি ব্যাঙ্কের এটিএম থেকে জালিয়াতদের ধরা হয়। সেখানেও কোনও রক্ষী ছিল না।

পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, প্রতিটি এটিএমে সর্বক্ষণের রক্ষী দেওয়া তাদের সাধ্যে নেই। কিন্তু এটিএম, ব্যাঙ্ক, বাজারে রাতে টহলদারি থাকে। তাই বাগুইআটির এটিএমে চোর ধরা পড়েছে।

পুলিশ ও ব্যাঙ্কের পরামর্শ, রাতবিরেতে এটিএম-এ যেতে হলে পরিচিত কাউকে নিয়ে যাওয়া উচিত। কিন্তু গ্রাহকেরা বলছেন, সমস্যায় পড়লেই লোকে রাতে এটিএমে যায়। সে ক্ষেত্রে সঙ্গী খুঁজে যাওয়ার পরামর্শকে ‘উদ্ভট’ বলেই মনে করেন তাঁরা।

আরও প্রশ্ন, শনিবার বাগুইআটিতে ধরা পড়া চোর কি এটিএমের ভল্ট খুলে বড় দাঁও মারার ছক কষেছিল? তবে পুলিশের দাবি, ভল্ট দু’টির পাসওয়ার্ড আছে। টাকা ভরার সময়ে ব্যাঙ্ক বা ব্যাঙ্কের স্বীকৃত সংস্থার কর্মীরা এটিএমে ঢোকেন। সার্ভার রুমে ফোন করে নাম-কর্মী নম্বর বলেন ও তাঁদের কাছে থাকা পাসওয়ার্ডটি দেন। সার্ভারে থাকা ব্যাঙ্ক কর্মীরা অন্য পাসওয়ার্ডটি দিলে তবেই ভল্ট খোলে। দ্বিতীয় পাসওয়ার্ডটি নিয়মিত বদল হয় বলেও পুলিশ সূত্রে খবর। এক গোয়েন্দা অফিসারের মন্তব্য, ‘‘এটিএমের ভল্ট খোলা সোনার মতো ছিঁচকে চোরের কাজ নয়। পাসওয়ার্ড ছাড়া ভল্ট খুলতে হলে গ্যাস কাটার প্রয়োজন। সে কাজটাও খুব সহজ নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE