Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

বৃদ্ধাকে উৎখাতে অভিযুক্ত পুত্রবধূ, ‘নিষ্ক্রিয়’ পুলিশ

পূর্ব পুটিয়ারির দীনেশপল্লির বাসিন্দা গৌরীদেবী স্বামী রঞ্জিত বারিকের সঙ্গে ওই বাড়িতে থাকতেন। তাঁদের এক ছেলে, এক মেয়ে। কর্মসূত্রে ছেলে থাকতেন মিজোরামে। মেয়ের বিয়ে হয়েছে শোভাবাজারে।

এম আর বাঙুরে গৌরী বারিক। বুধবার। নিজস্ব চিত্র

এম আর বাঙুরে গৌরী বারিক। বুধবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদাদাতা
শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০১৮ ০২:৩২
Share: Save:

এক বৃদ্ধাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে তাঁর বাড়ি দখল করার অভিযোগ উঠল এক মহিলার বিরুদ্ধে। তিনি নিজেকে ওই বৃদ্ধার পুত্রবধূ বলে দাবি করেছেন। আক্রান্ত বৃদ্ধার অভিযোগ, তাঁর ছেলেও এই ঘটনায় যুক্ত। গৌরী বারিক নামে ৬৮ বছরের ওই বৃদ্ধা এম আর বাঙুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বৃদ্ধার দাবি, তিনি রিজেন্ট পার্ক থানায় গেলেও পুলিশ তাঁর অভিযোগ নেয়নি। তাঁকে বলা হয়, ‘পারিবারিক বিষয়’, তাই পুলিশ নাক গলাবে না। অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশ অবশ্য দাবি করেছে, তাদের কাছে ওই বৃদ্ধা আসেননি।

পূর্ব পুটিয়ারির দীনেশপল্লির বাসিন্দা গৌরীদেবী স্বামী রঞ্জিত বারিকের সঙ্গে ওই বাড়িতে থাকতেন। তাঁদের এক ছেলে, এক মেয়ে। কর্মসূত্রে ছেলে থাকতেন মিজোরামে। মেয়ের বিয়ে হয়েছে শোভাবাজারে। গৌরীদেবী জানান, ছেলে কলকাতায় এলেও বাবা-মায়ের সঙ্গে থাকতেন না। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি ক্যানসারে আক্রান্ত রঞ্জিতবাবু মারা যান। গৌরীদেবীর অভিযোগ, তাঁর স্বামীর মৃত্যুর পরেই হঠাৎ এক মহিলা নিজেকে তাঁর বউমা বলে দাবি করে বাড়িতে আসেন ও ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করেন।

গৌরীদেবীর দাবি, তিনি ওই মহিলাকে চেনেন না। তাই তাঁকে ঢুকতে দিতেও রাজি হননি। তার পর থেকেই ওই মহিলা ক্রমাগত তাঁকে হুমকি দিতে থাকেন বলে অভিযোগ। রঞ্জিতবাবুর শ্রাদ্ধের দিনও তিনি জোর করে বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা করেন। বৃদ্ধার দাবি, বিষয়টি জেনে ছেলে তাঁকে বলেছিলেন, ওই মহিলাকে বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছেন তিনি!

গৌরীদেবীর অভিযোগ, গত ৮ মার্চ ফের ওই মহিলা আসেন এবং জোর করে বাড়িতে ঢুকতে চান। গৌরীদেবী থানায় গিয়ে গোটা ঘটনা জানান। তাঁর অভিযোগ, তবু পুলিশ অভিযোগ নিতে চায়নি। বৃদ্ধার মেয়ে বিন্দু বারিক জানান, গত সোম ও মঙ্গলবার রাতে তাঁকে রিজেন্ট পার্ক থানা থেকে ফোন করে বলা হয়, তাঁর মায়ের বাড়িতে হামলা হতে পারে। তিনি যেন ভিতর থেকে তালা দিয়ে রাখেন! বৃদ্ধার দাবি, মঙ্গলবার ছেলে কমল ফোন করে রাতে তাঁর বাড়িতে থাকতে চান। তিনি দরজা খুলে দেন। কিন্তু বুধবার সকালেই পুত্রবধূ বলে দাবি করা ওই মহিলা কয়েক জনকে নিয়ে ফের বাড়িতে চড়াও হন এবং তাঁকে ধাক্কা দিয়ে ভিতরে ঢুকে পড়েন। পড়ে গিয়ে গৌরীদেবীর চোট লাগে। তাঁকে এম আর বাঙুর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। বৃদ্ধার অভিযোগ, তাঁর বাড়ি এখন ওই মহিলার দখলে। গৌরীদেবীর দাবি, ‘‘আমি ছেলেকেও থাকতে দিতে চাই না। ও কলকাতায় এসেও আমাদের সঙ্গে থাকত না। দেখভাল করত না। এখন বাবা মারা গিয়েছে দেখে বাড়ি কব্জা করতে এসেছে!’’ কমলবাবু বলেন, ‘‘ওই মহিলাকে বিয়ে করে ফেঁসে গিয়েছি আমি। মায়ের সঙ্গে যা ঘটেছে, তা অন্যায়। কিন্তু আমি নিরুপায়।’’

বাড়ি থেকে উৎখাত হওয়া বৃদ্ধাকে নিয়ে অবশ্য বিশেষ চিন্তিত নয় পুলিশ। তদন্তকারীদের বরং বেশি চিন্তা অভিযুক্তকে নিয়ে। পুলিশের এক কর্তার বক্তব্য, ‘‘গৌরীদেবী বউমাকে থাকতে দিতে না চাইলে আদালতে যান। সেখান থেকে নির্দেশে নিয়ে এলে তবে আমরা ব্যবস্থা নেব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Gauri Barik Daughter in law Elderly Assault
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE