Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

নাদিয়ালের যুবক খুনই

বাড়ির লোকদের আশঙ্কাই সত্যি হল। নাদিয়ালের যুবক আনোয়ার আলি পুরকাইতের (৩৫) ক্ষতবিক্ষত দেহ সোমবার বিকেলে তাঁর বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরে এক পরিত্যক্ত কারখানা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৭ ০২:৪২
Share: Save:

বাড়ির লোকদের আশঙ্কাই সত্যি হল। নাদিয়ালের যুবক আনোয়ার আলি পুরকাইতের (৩৫) ক্ষতবিক্ষত দেহ সোমবার বিকেলে তাঁর বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরে এক পরিত্যক্ত কারখানা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার দুপুর থেকে তাঁর খোঁজ মিলছিল না। এ দিন মৃতদেহ উদ্ধার হওয়ার পর পুলিশ খুনের মামলা রুজু করেছে। লালপুল তল্লাটের বাসিন্দা ওই যুবকের বাড়ির লোকজন রবিবার পুলিশকে জানান, আনোয়ারকে খুন করা হয়েছে। আনোয়ার একটি বহুতল বাজারে দোকানঘর তৈরির কাজে শ্রমিক সরবরাহে যুক্ত ছিলেন। সেখানে রবিবার অনেকটা রক্তের দাগ পেয়ে আনোয়ারের বাড়ির লোক সন্দেহ করেন, তাঁকে খুন করা হয়েছে।

পুলিশ জেনেছে, টাকা নিয়ে গণ্ডগোলের জেরেই এই খুন। শ্রমিক সরবরাহ করে তাঁদের মজুরি ও ইট-বালির দাম বাবদ স্থানীয় এক প্রোমোটারের কাছে ছ’লক্ষ টাকা পেতেন আনোয়ার। বার বার তাগাদা দেওয়া সত্ত্বেও ওই পাওনা মেটানো হয়নি বলে অভিযোগ। ১৫ মার্চ দু’জনের বচসাও হয়। পুলিশ জানায়, সন্দেহের তির যে প্রোমোটারের দিকে, তার নাম মনজুর আলম মোল্লা।

পুলিশ জানায়, টাকার কিছুটা মিটিয়ে দেবে বলে ওই প্রোমোটার মনজুর আনোয়ারকে ডেকে পাঠায়। ওই বাড়ির ছাদে কাজ করছিলেন চার জন শ্রমিক। বেলা দেড়টা নাগাদ মনজুর শ্রমিকদের ওই বাড়ি থেকে যেতে বলে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তার পর দোকান ঘরের শাটার নামিয়ে সে ও তার সঙ্গীরা মিলে আনোয়ারকে ঠান্ডা মাথায় নৃশংস ভাবে খুন করে। ইট ও হাতুড়ি দিয়ে মাথায় এতটাই জোরে আঘাত করা হয়েছে যে মাথা থেকে ঘিলু বেরিয়ে গিয়েছে। আনোয়ারের গলায় দড়ির দাগও মিলেছে। আনোয়ারকে মেরে বস্তায় মুড়ে ফেলে ওই ঘরেই রেখে শাটার নামিয়ে বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে চলে যায় তারা। পুলিশের অনুমান, রবিবার ভোরে নিজের গাড়িতে করে আনোয়ারের দেহ নিয়ে এক কিলোমিটার দূরে নিজেদেরই পরিত্যক্ত কারখানায় ফেলে দেয় মনজুর।

আনোয়ারের খোঁজে রবিবার একটি পুকুরে ডুবুরি নামিয়ে তল্লাশি করে পুলিশ। শেষমেশ সোমবার বিকেলে বাগদিপাড়ায় আনোয়ারের মৃতদেহ মেলে। একটি পরিত্যক্ত কাপড়ের কারখানায় কাপড়ের পুঁটুলিতে দেহটি জড়ানো ছিল।

পুলিশ জানায়, রবিবার সকাল থেকে মনজুর বেপাত্তা। তবে রবিবার তার বাড়ি থেকে একটি রক্তমাখা পাঞ্জাবি পুলিশ উদ্ধার করে। তার পর সন্দেহ আরও তীব্র হয়। মনজুরের ছায়াসঙ্গী সইফুদ্দিন মোল্লা নামে এক যুবককে সোমবার বিকেলে নাদিয়াল এলাকার ২০ নম্বর ইটভাটা এলাকায় ঘুরতে দেখা যায়। তবে ওই জায়গায় সইফুদ্দিন, মনজুর ও তাঁদের আর এক বন্ধু সব সময়ে ঘোরেন। এ দিন তিনি একা কেন, সেই প্রশ্ন করতে সইফুদ্দিন সন্দেহজনক উত্তর দেয় বলে পুলিশের দাবি। পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। জেরায় ভেঙে পড়ে সইফুদ্দিন জানায়, সে নিজে, মনজুর ও আর এক যুবক মিলে আনোয়ারকে শনিবার দুপুরে খুন করেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Abandoned factory
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE