ক্লারা বংশরাই খোঙসিট
ক্লারা খোঙসিটের মৃত্যু-রহস্যের জট খুলল না ৭২ ঘণ্টা পরেও।
বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ অটোপসি সার্জেন স্বপনকুমার দাস ১২ জনের দল নিয়ে শুক্রবার কেষ্টপুরে গিয়ে ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন। বুধবার ওই চিকিৎসকই ক্লারার ময়না-তদন্ত করেন।
ক্লারাকে অন্য কোথাও খুন করে কেষ্টপুরের রাস্তায় ফেলে যাওয়া হয়েছিল— প্রাথমিক ভাবে এই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছে পুলিশ। এক-এক করে অন্য সম্ভাবনা খারিজ করতে করতে পুলিশ দু’টি বিষয়ে এসে আটকেছে। এক) হয় ক্লারা সে দিন চারতলার খোলা জানলা থেকে নিজে পড়ে গিয়েছিলেন। দুই) নয়তো ক্লারাকে ঠেলে ফেলে দেওয়া হয়েছে। পুলিশের দাবি, ফরেন্সিক ও অটোপসি বিশেষজ্ঞেরা এ বিষয়ে নিশ্চিত।
পুলিশ সূত্রের খবর, একটি খুনের ঘটনার কিনারা করতে যে ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করা সম্ভব, তার সবই ব্যবহার করা হচ্ছে। যে কোনও খুনের পিছনে একটি করে ‘মোটিভ’ বা উদ্দেশ্য থাকে। ক্লারা যদি খুন হয়েও থাকেন, তা হলে তার পিছনে ওই মোটিভ এখনও খুঁজে পায়নি পুলিশ। সেই সময়ে ঘরে ছিলেন ক্লারার বন্ধু সুরজ সুতোদিয়া। ফ্ল্যাটের অন্য ঘরে ছিলেন ক্লারার বান্ধবী ইবলিম ননগ্রাম। এ ছাড়া ওই ফ্ল্যাটে আর কারও উপস্থিতির কথা জানা যায়নি। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ মনে করছে, ক্লারাকে খুন করে সুরজ ও ইবলিমের কোনও লাভ হওয়ার কথা নয়। প্রশ্ন, তা হলে কেন খুন করা হবে?
ঘটনাস্থলে তদন্তকারী দল। শুক্রবার, কেষ্টপুরে।
পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন চিকিৎসকদের ওই দলের সঙ্গে বিধাননগর পুলিশের ডিসি ভাস্কর মুখোপাধ্যায়ও যান ঘটনাস্থলে। তিনিই চিকিৎসকদের ঘুরিয়ে দেখান। প্রশ্ন উঠেছে, এক জন চারতলার জানলা গলে পড়ে গেলে কেন শুধু তাঁর মাথায় আঘাত লাগবে? তাঁর দেহের অন্যত্রও গুরুতর আঘাত লাগার কথা বা ভেঙে যাওয়ার কথা। পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, নীচে পড়ার সময়ে তিনতলার জানলার উপরের প্যারাপিটে ধাক্কা খেয়েছিলেন ক্লারা। তার পরে এমন ভাবে পড়েন, যাতে আঘাত লাগে মূলত মাথায়।
আরও পড়ুন: কেষ্টপুরে বিমানসেবিকার রহস্য-মৃত্যু
নিছক দুর্ঘটনা হলে পরপর তিন দিন ধরে ডিসি পদমর্যাদার এক অফিসারের উপস্থিতিতে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা কেন ঘটনাস্থলে পরীক্ষা চালাচ্ছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারাও। তাঁদের একাংশের বক্তব্য, নিয়মিত মদ্যপান করতেন ক্লারা ও তাঁর বন্ধুরা। তাই মদ্যপান করে উপর থেকে কী ভাবে তিনি পড়ে গেলেন, সে নিয়ে ধন্দ রয়েছে স্থানীয়দের। শুক্রবার যখন বিশেষজ্ঞেরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালান, তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশও। কী ভাবে ক্লারার দেহ রাস্তায় পড়েছিল, তা মোবাইলে তুলে রেখেছিলেন পুলিশ অফিসারেরা। এ দিন বিশেষজ্ঞদের সেই ছবি দেখানো হয়।
—নিজস্ব চিত্র
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy