রিপন ঢালি।
ফের ডেঙ্গিতে মৃত্যু কলকাতা পুর এলাকায়। এ বার বেহালার ১২৮ নম্বর ওয়ার্ড। মৃতের নাম রিপন ঢালি (৩৫)।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বেহালার ডক্টর এ কে পাল রোডের বাসিন্দা রিপন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন। সঙ্গে ছিল বমি, গায়ে ব্যথা। অবস্থার অবনতি হওয়ায় রবিবার প্রথমে রিপনকে বিদ্যাসাগর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু প্লেটলেট ১৯ হাজারে নেমে যাওয়ায় তাঁকে রেফার করা হয় ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে। রিপনের পরিবার জানিয়েছে, রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে হাসপাতালের তরফে তাঁদের জানানো হয়েছিল। আরও বলা হয়েছিল, ওই হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা সম্ভব নয়। এর পরে রিপনকে নিয়ে যাওয়া হয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে। কিন্তু সেখান থেকেও বলা হয়, রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁকে পরিষেবা দেওয়ার মতো পরিকাঠামো ওই বেসরকারি হাসপাতালে নেই।
শেষমেশ পরিজনেরা রিপনকে বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কলকাতার আর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানেই গভীর রাতে মারা যান তিনি। ডেথ সার্টিফিকেটে মৃত্যুর কারণ হিসেবে ডেঙ্গির উল্লেখ রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, পুরসভা তেল এবং ব্লিচিং ছ়়ড়ালেও মশার উৎপাত কমছে না। এলাকাবাসীর একটা বড় অংশ ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। কেউ হাসপাতালে ভর্তি, আশঙ্কাজনক অবস্থায় কারও চিকিৎসা চলছে বাড়িতেই। কারণ অধিকাংশ সরকারি হাসপাতাল জানিয়ে দিয়েছে, ডেঙ্গি আক্রান্তকে ভর্তি করার মতো শয্যা তাদের নেই। অনেক পরিবারে একাধিক সদস্য ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। কে কাকে দেখবেন?
ডেথ সার্টিফিকেটে উল্লেখ রয়েছে ডেঙ্গির। নিজস্ব চিত্র
বাসিন্দাদের অভিযোগ, এলাকার নর্দমা নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না। ফলে প্রতি বর্ষায় জল জমে নাজেহাল হন তাঁরা। অধিকাংশ বাড়ির সামনের রাস্তা দিনের পর দিন ধরে থাকে জলমগ্ন। বারবার পুরসভাকে সে কথা জানালেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। ডেঙ্গির প্রকোপ কমাতে পুর প্রশাসন দেরিতে কাজ শুরু করেছে বলেও অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসীর একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, আক্রান্তের সংখ্যা লাগামছাড়া হওয়ার পরে টনক নড়েছে পুর কর্তৃপক্ষের। আগে কাজ শুরু করলে এমন পরিস্থিতি হত না।
ডেঙ্গির দাপটের কথা মেনে নিয়েছেন ১২৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা পুরসভায় সিপিএমের বিরোধী দলনেত্রী রত্না রায় মজুমদার। যদিও তাঁর দাবি, ডেঙ্গি দমনে যথেষ্ট সক্রিয় তাঁর ওয়ার্ডের পুরকর্মীরা। তাঁর কথায়, ‘‘লোকসংখ্যার তুলনায় স্বাস্থ্যকর্মী খুবই কম। তবুও যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। তবে অনেক ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত কাজ হচ্ছে না। পুরসভাকে সেই সমস্যার কথা বারবার জানিয়েছি। যা হয়েছে দুঃখজনক। রিপনের ছোট দু’টি বাচ্চা আছে। খুব খারাপ লাগছে।’’
বহু চেষ্টার পরেও সাধারণ মানুষকে কোনও ভাবেই বাড়ি এবং বাড়ির চার পাশ পরিষ্কার রাখার ব্যাপারে সচেতন করা যাচ্ছে না বলেও আক্ষেপ করেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘পরিষ্কার জমা জল বা আশপাশের অপরিচ্ছন্নতা অধিকাংশ বাড়িতেই চোখে প়ড়ছে। যত দিন না সাধারণ মানুষ সচেতন হবেন তত দিন এই সমস্যা পুরোপুরি কমানো কঠিন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy