Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

শ্রাবন্তীর অভিমান জানত একমাত্র তাঁর ডায়েরি

শ্বশুরবাড়ির সদস্যেরা যখন তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন, তখন তাঁর স্বামী কেন প্রতিবাদ করেন না, সেটাই ছিল অন্যতম যন্ত্রণার জায়গা। শুক্রবার মধ্যমগ্রামের বাড়িতে বসে তাঁর মা, দিদি, জামাইবাবুর কথায় বারবার উঠে এসেছে এই প্রসঙ্গ।

শ্রাবন্তী মিত্র। (বাঁ দিকে) তাঁর ডায়েরির পাতা। নিজস্ব চিত্র

শ্রাবন্তী মিত্র। (বাঁ দিকে) তাঁর ডায়েরির পাতা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৭ ০১:৪২
Share: Save:

রাগ নয়, অভিযোগও নয়, স্বামীর প্রতি তীব্র অভিমান ছিল শ্রাবন্তীর। শ্বশুরবাড়ির সদস্যেরা যখন তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন, তখন তাঁর স্বামী কেন প্রতিবাদ করেন না, সেটাই ছিল অন্যতম যন্ত্রণার জায়গা। শুক্রবার মধ্যমগ্রামের বাড়িতে বসে তাঁর মা, দিদি, জামাইবাবুর কথায় বারবার উঠে এসেছে এই প্রসঙ্গ। তাঁরা জানিয়েছেন, খুবই চাপা স্বভাবের মেয়ে ছিলেন শ্রাবন্তী। শ্বশুরবাড়িতে অত্যাচারের কথাও অতি সম্প্রতি তিনি বাবা-মাকে জানিয়েছিলেন। কিন্তু বারবার জানতে চাওয়া সত্ত্বেও স্বামীর বিষয়ে কখনও খুব বেশি কিছু বলতে চাননি। নিজেকে প্রকাশ করতে না পারার সেই কষ্টই ওই তরুণীকে ক্রমশ অন্তিম পরিণতির দিকে ঠেলে দিয়েছে বলে মনে করছেন তাঁর আত্মীয়-বন্ধুরা।

শ্রাবন্তীর যে ডায়েরিটি পুলিশ তাঁর শ্বশুরবাড়ি থেকে উদ্ধার করেছে, সেখানেও ছত্রে ছত্রে এই অভিমানের কথাই উঠে এসেছে। স্বামী বিশ্বদেবকে যে তিনি ভালবাসেন, গোপন থাকেনি সেই কথাও। শ্রাবন্তী লিখেছিলেন, ‘‘বিশ্বদেবের মন খুব খারাপ, তাই আমারও মন খারাপ। ও বলছে, এই সিচুয়েশন আরও খারাপ হওয়া ছাড়া ভাল হওয়ার উপায় নেই।’’ আর এক জায়গায় তিনি লিখেছেন, ‘‘ও আমাকে মুখে কিছু না বললেও মনে মনে আমাকেই একটু হলেও দায়ী করে এই অশান্তির জন্য।’’

আরও পড়ুন: শত কষ্টেও মুখ ফুটত না মেয়ের

শ্রাবন্তীর দিদি এবং মা জানিয়েছেন, ফোনে, হোয়াটসঅ্যাপে ইদানীং যখনই কথা হচ্ছিল, এই অভিমানই স্পষ্ট হয়েছে বারবার। মায়ের আক্ষেপ, ‘‘যাকে আমার মেয়েটা এত ভালবেসেছিল, বিশ্বাস করেছিল, সে ওর পাশে তো দাঁড়ালই না, উল্টে তার উপেক্ষাই মেয়েটাকে তিলে তিলে শেষ করে দিল।’’

মনোবিদ নীলাঞ্জনা সান্যাল বলেন, ‘‘এটা খুব স্বাভাবিক। যাকে নির্ভর করে মেয়েটি ওই বাড়িতে গিয়েছিল, সে-ই যদি সঙ্গী না হয়, তা হলে কাকে নিয়ে লড়াই করবে সে? স্বামী সহানুভূতিশীল না হওয়ার কারণেই বহু বিবাহিতা মেয়ের লড়াইটা কঠিন হয়ে পড়ে।’’ নীলাঞ্জনাদেবীর আক্ষেপ, ‘‘এ ক্ষেত্রে মেয়েটি আর একটু ধৈর্য দেখাতে পারত। সবে তো ছ’মাস বিয়ে হয়েছিল। একটা তরতাজা প্রাণ অকালে চলে গেল!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Diary Shrabanti Mitra Death Suicide
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE