ঠিক যেন ঈগলের চোখ।
ট্র্যাফিক আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালাচ্ছেন কেউ। রাস্তায় নেই সিসিটিভি বা ট্র্যাফিক পুলিশ। চালক যদি ভাবেন যে কেউ তাঁকে দেখেননি, তিনি ভুল করবেন। কারণ, তিনি জানেনই না তাঁর মাথার উপরে তখন ড্রোন ঘুরপাক খাচ্ছে। ট্র্যাফিক আইন ভাঙার ছবি ততক্ষণে পৌঁছে গিয়েছে পুলিশের কাছে। নিউ টাউনের পথ-নিরাপত্তা ব্যবস্থায় পুজোর আগেই শুরু হচ্ছে ড্রোনের ব্যবহার।
গত সোমবার নিউ টাউনে ট্রাক ও স্কুলবাস সংঘর্ষে জখম হয় ২০ জন পড়ুয়া। তার পরেই শুক্রবার হিডকো, নিউ টাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (এনকেডিএ) এবং বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশ কর্তারা সেখানকার ট্র্যাফিক ব্যবস্থার খোলনলচে পাল্টাতে বৈঠক করেন।
ভিআইপি রোড এবং সল্টলেকের পাঁচ নম্বর সেক্টরকে জুড়েছে নিউ টাউনের মেজর আর্টারিয়াল রোড। সেটিই এখানকার প্রধান গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। তা সত্ত্বেও ওই রাস্তায় কোথাও সিসিটিভি বসেনি। বহু সিগন্যাল পোস্ট ম্যানুয়াল হয়ে পড়ে থাকে। সাপুরজি-পালনজি এলাকা, রবীন্দ্রতীর্থ থেকে ভাঙরগামী রাস্তা বা রাজারহাট থেকে আকাঙ্খা মোড়ের দিকের রাস্তায় বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চলে। ওই সব এলাকায় সম্পূর্ণ বসতি গড়ে না ওঠায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণও ঢিলেঢালা।
এই বিষয়গুলি নিয়েই পুলিশ এবং এনকেডিএ-র সঙ্গে আলোচনা হয় হিডকো-র। হিডকো সূত্রে খবর, আকাঙ্ক্ষা মোড়, যাত্রাগাছি মোড়, ইকো পার্কের ৪ নম্বর গেট, হিডকো মোড়ের মতো বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলিকে দুর্ঘটনাপ্রবণ হিসেবে চিহ্নিত করে আলাদা মানচিত্র তৈরি হয়েছে। ওই সব রাস্তার কোথায় গতি নিয়ন্ত্রক যন্ত্র, কোথায় হাইট বার, কোথায় সিগন্যাল পোস্ট বা সিসিটিভি বসবে— তার খসড়াও তৈরি হয়েছে।
হিডকো ও এনকেডিএ-র চেয়ারম্যান দেবাশিস সেন বলেন, ‘‘নিউ টাউনের পথ-নিরাপত্তা সংক্রান্ত বেশ কিছু পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সব কাজই পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে করা হবে। বিশদ প্রকল্প রিপোর্ট (ডিপিআর) তৈরির কাজও দ্রুত শুরু হবে।’’ বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার জ্ঞানবন্ত সিংহ বলেন, ‘‘গত সোমবারের দুর্ঘটনাটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। নিউ টাউনের বিভিন্ন মোড়ে দুর্ঘটনা রুখতে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তা নিয়ে বিশদে আলোচনা হয়েছে।’’
এনকেডিএ-র আধিকারিকেরা জানান, ইকো পার্কের নিরাপত্তার জন্য ইতিমধ্যেই তাঁদের কাছে একটি ড্রোন রয়েছে। সেটিকেই কাজে লাগানো হবে। ড্রোনটি নিয়ন্ত্রণ করবে ট্রাফিক বিভাগ। ফলে নিউ টাউনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ও দুর্ঘটনাপ্রবণ মোড়ের ছবি নজরে থাকবে পুলিশের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy