Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
স্কটিশ চার্চ কলেজ

বিক্ষোভে ভর্তি বন্ধ, হস্তক্ষেপ মন্ত্রীর

ছাত্র সংসদের বিক্ষোভের জেরে মঙ্গলবার স্কটিশ চার্চ কলেজে বন্ধ থাকল স্নাতক স্তরের ভর্তি প্রক্রিয়া। প্রথমে কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন, অনির্দিষ্ট কাল তা স্থগিত রাখা হবে। দিনভর জল ঘোলা হওয়ার পরে চাপে পড়ে শিক্ষা দফতর। ছাত্র মহলের ক্ষোভ আঁচ করে ওই বিক্ষোভের রাশ টানার চেষ্টা করেন তৃণমূলের শীর্ষ কর্তারা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৫ ০২:৪৮
Share: Save:

ছাত্র সংসদের বিক্ষোভের জেরে মঙ্গলবার স্কটিশ চার্চ কলেজে বন্ধ থাকল স্নাতক স্তরের ভর্তি প্রক্রিয়া। প্রথমে কলেজ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন, অনির্দিষ্ট কাল তা স্থগিত রাখা হবে। দিনভর জল ঘোলা হওয়ার পরে চাপে পড়ে শিক্ষা দফতর। ছাত্র মহলের ক্ষোভ আঁচ করে ওই বিক্ষোভের রাশ টানার চেষ্টা করেন তৃণমূলের শীর্ষ কর্তারা। এমনকী নবান্নের শীর্ষ মহল থেকে শিক্ষামন্ত্রীকে ফোন করে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয় বলে খবর। এর পরেই বিকেলে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রেক্টরের সঙ্গে কথা হয়েছে। বলেছি কোনও ভাবেই ভর্তি প্রক্রিয়া বন্ধ রাখা যাবে না।’’ পাশাপাশি তাঁর দাবি, ভর্তি প্রক্রিয়া যেন বন্ধ না রাখা হয়, তৃণমূল ছাত্র পরিষদকে সেই বিষয়টিতে নজর রাখতে বলা হয়েছে। এর পরেই কলেজ কর্তৃপক্ষ জানান, আজ বুধবার থেকে ফের ভর্তি চালু হবে। মঙ্গলবারের মেধা তালিকায় যাঁদের নাম ছিল, তাঁরা শনিবার ভর্তি হতে পারবেন।

কলেজ সূত্রে খবর, এ দিন স্নাতক স্তরের ভর্তি শুরুর কথা ছিল। কলকাতা ও জেলার ছাত্রছাত্রীরা ভিড় জমান। কিন্তু সকাল থেকেই পোশাক বিধি, ভর্তির ফি বৃদ্ধি, রেক্টরের পদ অবলুপ্তির দাবিতে ছাত্র সংসদের এক দল সদস্য বিক্ষোভ শুরু করেন। প্রথমে সমস্যা সমাধানে ছাত্র সংসদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। ভর্তি হতে আসা ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থে বিক্ষোভ তুলে নেওয়ার কথা বলা হলেও বিক্ষোভকারীরা অনড় থাকেন। কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, বৈঠক থেকে বেরিয়ে ফের বিক্ষোভ শুরু করেন তাঁরা।

কলেজের রেক্টর জন আব্রাহাম এর পরে বলেন, ‘‘বিক্ষোভের কারণে ভর্তি প্রক্রিয়া বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছি আমরা। পরিস্থিতি শান্ত হলে ফের ভর্তি চালু হবে।’’ এই ঘোষণার পরেই বেকায়দায় পড়েন অসংখ্য পড়ুয়া। তাঁরা পরবর্তী ভর্তির দিন জানতে চাইলে কর্তৃপক্ষ কিছুই জানাতে পারেননি।

কলেজ কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, যে সমস্ত দাবিতে ছাত্র সংসদ বিক্ষোভ দেখাচ্ছে, তা ভিত্তিহীন। এমনকী এই বিক্ষোভের পিছনে তৃণমূল ছাত্র সংগঠনই যে রয়েছে, তা পরিষ্কার। যদিও সংসদের ইউনিট সভাপতি প্রত্যয় গুপ্ত জানান, এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। তিনি জানান, ১৪ দফা দাবিতে তাঁরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। কলেজের ‘রেক্টর’ পদটি অবৈধ বলে মনে করছে ওই ছাত্র সংগঠন। তাই পদটি অবলুপ্তির দাবি তুলেছে ছাত্র সংসদ। পাশাপাশি কলেজের ফি বৃদ্ধির বিরোধিতাও করছেন তাঁরা। অবশ্য পোশাকের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পরেও তাদের ১৪ দফা দাবির মধ্যে পোশাক সংক্রান্ত নির্দেশিকা কী ভাবে জায়গা পেল, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। কলেজের শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ, মূলত রেক্টরকে সরানোই বিক্ষোভকারীদের আসল উদ্দেশ্য ছিল। তবে এ বিষয়ে অবশ্য মুখ খুলতে নারাজ সংসদের ইউনিট সভাপতি।

ছাত্র সংসদ মূলত ছাত্রদের হয়েই সওয়াল করে। কিন্তু এই বিক্ষোভের জেরে প্রত্যক্ষ ভাবেই হয়রান হলেন নতুন পড়ুয়ারা। তাই এই বিক্ষোভকে কী ভাবে দেখছে অন্যান্য ছাত্র সংগঠনগুলি?

ছাত্র পরিষদের সভাপতি আশুতোষ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ছাত্র আন্দোলন ছাত্রছাত্রীদের জন্যই। তাই তার মাত্রা ও ভঙ্গিমা এমন হওয়া প্রয়োজন, যাতে তারা বিপদে না পড়ে।’’ আর এসএফআই-এর রাজ্য সভাপতি মধুজা সেন রায় বলেন, ‘‘নতুন কলেজে আসা পড়ুয়াদের কতটা সহযোগিতা করা যায়— এটাই লক্ষ্য হওয়া উচিত ছাত্র সংগঠনগুলির। এ ভাবে অশান্তির পরিবেশ তৈরি করা একেবারেই কাম্য নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE