খানাখন্দের ঠেলায় গতি হারিয়েছে ই এম বাইপাস। শহরের লাইফলাইন ওই রাস্তায় এখন পদে পদে বিপদ। একটু অসতর্ক হয়ে গাড়ি চালালেই দুর্ঘটনা নিশ্চিত। আর কয়েক পশলা বৃষ্টি হলে তো কথাই নেই। কোথায় যে জলের নীচে বিশাল গর্ত লুকিয়ে রয়েছে, তা বোঝা ভার।
চিংড়িঘাটা থেকে হাডকো মোড় পর্যন্ত বাইপাসের অংশটিতে রাস্তা নিয়ে তেমন কোনও অভিযোগ নেই। কিন্তু চিংড়িঘাটা থেকে দক্ষিণে কামালগাজি পর্যন্ত কিছু কিছু জায়গায় রাস্তা বলে কিছু নেই বললেই চলে। ওই অংশে বাইপাসের উপরে তৈরি হচ্ছে দু’টি উড়ালপুল। তা ছাড়া গড়িয়া-দমদম বিমানবন্দর মেট্রোর কাজ চলছে একটা বড় অংশ জুড়ে। রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম রাস্তার এই হালের পুরো দায় চাপিয়েছেন মেট্রোর উপরে।
কামালগাজিতে ই এম বাইপাসের কানেক্টরের উপরে যে উড়ালপুল তৈরির কাজ চলছে, সেখানে রাস্তা প্রায় নেই বললেই চলে। বিরাট বিরাট খানাখন্দে ভরা। বৃষ্টি হলে তাতে জল জমে আরও বেহাল দশা হয়। ওই রাস্তা দিয়ে গাড়ি চালানো এখন দুঃস্বপ্নের মতো। ফলে ওই রাস্তায় পর্যাপ্ত আলো থাকা সত্ত্বেও রাতে কোনও চালক আর ওই পথে ঢুকতেই চান না। অথচ, দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা থেকে কলকাতায় দ্রুত যাতায়াতের জন্যই তৈরি হয়েছিল ইএম বাইপাস। কিন্তু সেই রাস্তার এখন এমন দশা যে, ওখান দিয়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কোনও গাড়িই কার্যত যেতে পারছে না।
অনেকটা এক অবস্থা পার্ক সার্কাস কানেক্টরের উত্তর দিকের বাইপাসের। সেখানে পরমা উড়ালপুলের কাজ যত দিন না শেষ হবে, তত দিন এই ভোগান্তি চলবেই বলে জানিয়েছেন কেএমডিএ-কর্তারা। রাজ্যের নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “উড়ালপুল তৈরির জন্য বড় বড় যন্ত্রপাতি এসেছে, তাতে রাস্তার কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। বর্ষার জন্য আমরা অসুবিধায় পড়েছি। তবে পুজোর মধ্যেই বাইপাসের সর্বত্র রাস্তা ঠিক করে ফেলা হবে।”
বাইপাসের অবস্থা এতটা খারাপ হলেও এতদিন কিন্তু তা নজরে পড়েনি কেএমডিএ কিংবা মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষের। মঙ্গলবার রুবি মোড়ের কাছে রাস্তা বসে গিয়ে ব্যাপক যানজটের পরে টনক নড়ে রাজ্যের নগরোন্নয়ন দফতরের। নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে সে দিনই দেখা করেছিলেন মেট্রো রেলের কর্তারা। ঠিক হয়েছিল কী ভাবে ই এম বাইপাসকে সচল করা যায়, তা রাস্তা পরিদর্শনের পরেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সেই মতো আজ, শুক্রবার রুবি মোড়ের রাস্তা যৌথ পরিদর্শন করবেন মেট্রো রেল এবং কেএমডিএ কর্তারা। রেলের তরফে বলা হয়েছে, মেট্রোর কাজের জন্য কোথাও রাস্তার ক্ষতি হলে তারাই তা মেরামত করে দেবে। বৃষ্টির জন্য মেরামতির কাজ ব্যাহত হচ্ছে বলেও জানিয়েছে মেট্রো রেল।
ছবি: শৌভিক দে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy