Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

জামায় দুটো বোতাম বসানোরও উপায় নেই

রবিবারের আগুনে যা হয়ে গেল তাতে আমার প্রায় লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। দোকান পুড়ে ছাই। মানুষের দিয়ে যাওয়া কোনও জামা-কাপড় আস্ত নেই।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সনৎকুমার সাহা (গোরাবাজারের ব্যবসায়ী)
শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:২৫
Share: Save:

আমার একটা সূচ পর্যন্ত বাঁচেনি যে জামায় দুটো বোতাম বসিয়ে কুড়িটা টাকা রোজগার করব। রবিবার রাতে এমন সর্বনাশা আগুন গ্রাস করেছিল আমাদের বাজার যে অনেকের মতোই আমার দোকানেরও কণামাত্র জিনিস রক্ষা পায়নি।
৩৫ বছর এই গোরাবাজারে সেলাই মেশিন নিয়ে সেলাইয়ের কাজ করছি। দৈনন্দিন রোজগার। তাতেই সংসার চলে যায়। খুব বেশি চহিদাও নেই। বলতে গেলে আমি গরিব মানুষই। মাসে হাজার দশেক টাকা সংসারের খরচ জোগার করতে পারলেই আমাদের চলে যায়। কিন্তু রবিবারের আগুনে যা হয়ে গেল তাতে আমার প্রায় লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। দোকান পুড়ে ছাই। মানুষের দিয়ে যাওয়া কোনও জামা-কাপড় আস্ত নেই। সেলাই মেশিনটা পুড়ে খাক হয়ে গিয়েছে।

শুধু কী তাই! রোজগারের কিছু টাকা বাঁচিয়ে দোকানেই জমিয়ে রাখতাম। একটু জমলে ব্যাঙ্কে গিয়ে জমা দিতাম। গত কয়েক মাসে তিল তিল করে ২৭ হাজার টাকা জমিয়েছিলাম। রবিবারের আগুনে সেগুলোও ছাই হয়ে গিয়েছে। পোড়া দোকানটার দিকে তাকাতে পারছি না। সেই রাতে দোকানটা পুড়ে যাওয়ার পরে যখন দমকলকর্মীরা আমার কাছে চাবি নিয়ে শাটার খুললেন, দেখলাম ভিতরে শুধু কালো ছাই উড়ে বেড়াচ্ছে। এখন এই দোকান নতুন করে চালু করতে গেলে প্রচুর টাকা লাগবে। সব জিনিস কেনার পরে, দোকান বানাতে হবে।

কোথা থেকে পাব পুঁজি? বছরখানেক আগেও বাজারে এক বার আগুন লেগেছিল। তখন কোনও ভাবে বেঁচে গিয়েছিলাম। আর এ বারের আগুন একেবারে পথে বসিয়ে দিয়ে গেল। কবে বাজার খুলবে তাও বুঝতে পারছি না। কী ভাবে আবার নতুন করে শুরু করব তাও জানি না। অথচ এই গোরাবাজারকে ঘিরেই জীবন-সংসার, বেঁচে থাকা। দেখি সকলে যে ভাবে লড়াই শুরু করবে, আমাকেও তাই করতে হবে। এখন ঈশ্বরই ভরসা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Gorabazar fire Kolkata কলকাতা
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE