Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

ফাঁকা আসন নিয়ে চিন্তা প্রেসিডেন্সি প্রাক্তনীদের

বিজয়া সম্মিলনী উপলক্ষে আয়োজিত এ দিনের সভায় সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পলা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন তোলেন— এমন বলা হচ্ছে, প্রেসিডেন্সির মান অত্যন্ত উঁচু বলে ৫০ শতাংশের বেশি ভর্তি নেওয়া যাচ্ছে না।

ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০১৭ ০২:৩৩
Share: Save:

প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন প্রাক্তনীরা। বহিরঙ্গ ঝকঝকে হয়ে উঠছে, অথচ ফাঁকা থাকছে আসন। শনিবার প্রাক্তনী সংসদের এক আলোচনা সভায় ফুটে বেরোল এমন নানা উদ্বেগ।

বিজয়া সম্মিলনী উপলক্ষে আয়োজিত এ দিনের সভায় সংস্কৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পলা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন তোলেন— এমন বলা হচ্ছে, প্রেসিডেন্সির মান অত্যন্ত উঁচু বলে ৫০ শতাংশের বেশি ভর্তি নেওয়া যাচ্ছে না। তা হলে হার্ভার্ড কী করে ৯৮% আসন পূরণ করে? অথবা ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯৭.০৬% আসনে ভর্তি নেওয়া হয় কী ভাবে?

কিছু দিন আগেই প্রেসিডেন্সি থেকে ইতিহাস নিয়ে পাশ করে যাওয়া সোহেল আবদি মনে করছেন, ‘‘প্রেসিডেন্সিতে যদি ৫০% আসনে ছাত্র ভর্তি না হয়, তা হলে অক্সফোর্ড-হার্ভার্ডের মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রেসিডেন্সির পড়ুয়াদের যাওয়া অনেক কমে যাবে।’’ প্রেসিডেন্সির পরিবেশের যে বদল ঘটেছে তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন আইনজীবী অরুণাভ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘প্রেসিডেন্সি এখন প্রেসিডেন্সি জেলে পরিণত হয়েছে। কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া ঢুকতেই পারবেন না।’’ বিদেশ থেকে শিক্ষক নিয়োগের পরেও তাঁদের বেশির ভাগের চলে যাওয়ার বিষয়টিকে কটাক্ষ করেন তিনি।

সংস্কারের নামে প্রেসিডেন্সির ঐতিহ্য নষ্টের অভিযোগ তোলেন প্রসার ভারতীর প্রাক্তন সিইও জহর সরকার। পোর্টিকোর রূপের বদল, মূল গেট সরিয়ে নেওয়ার মতো বিষয়গুলির উল্লেখ করেন তিনি। বলেন, ‘‘অযোগ্যতাকে মানিয়ে নেওয়া গেলেও সংবেদনহীনতার সঙ্গে চলা মুশকিল।’’ প্রেসিডেন্সির এমেরিটাস অধ্যাপক প্রশান্ত রায় মনে করছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসনে হৃদয়হীনতার ছাপ রয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘আত্মসম্মান নষ্টের ভয়ে বহু ক্ষেত্রেই শিক্ষকেরা নীরব। অজানা ভয়ে পড়ুয়ারও চুপ থাকে।’’ সামগ্রিক বদলের জন্য প্রাক্তনী সংসদের যে বিশেষ ভূমিকা রয়েছে, তা মনে করান ২০১৫ সালে প্রেসিডেন্সি থেকে পাশ করা সাত্যকী মজুমদার। সভার শেষে প্রাক্তনী সংসদের সভাপতি জয়ন্ত মিত্র জানান, ফাঁকা আসনে ছাত্র ভর্তি, মেধা অন্যত্র চলে যাওয়া— এই সব বিষয়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব নিয়ে তাঁরা শিক্ষামন্ত্রীর কাছে যাবেন।

আলোচনা চলাকালীন ক্যান্টিনের প্রমোদদাকে ফেরানোর দাবিতে প্রাক্তনীদের সক্রিয় হওয়ার দাবি জানান শ্রোতা হিসেবে উপস্থিত প্রাক্তনী অপালা শেঠ। শ্রোতার আসনে ছিলেন ১৯৫৬ ব্যাচের ছাত্রী নবনীতা দেবসেনও। সভা শেষে নবনীতাদেবী বলেন, ‘‘প্রেসিডেন্সির সঙ্গে আমাদের প্রাণের টান। প্রেসিডেন্সি আজ আর আগের সম্মানের জায়গায় নেই। তাকে সেই জায়গায় ফিরিয়ে আনা দরকার।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE