Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

জঞ্জাল, আরশোলায় নাজেহাল নিত্যযাত্রীরা

রাত তখন সাড়ে দশটা। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-খড়্গপুর শাখার একটি লোকাল ট্রেনে হাতে গোনা কয়েক জন যাত্রী। ট্রেনের জানালার পাশে বসে ছিলেন এক ব্যক্তি। হঠাৎই ধড়ফড়িয়ে লাফিয়ে উঠে গোঁজা জামা টেনে বের করে কী যেন একটা ঝা়ড়তে লাগলেন। কিছু ক্ষণ পরেই জামার ভিতর থেকে বেরিয়ে এল একটি আরশোলা। মাটিতে পড়া মাত্রই সেটিকে থেতলে দিলেন ওই ব্যক্তি।

জমে আবর্জনা। —নিজস্ব চিত্র।

জমে আবর্জনা। —নিজস্ব চিত্র।

সুপ্রিয় তরফদার
শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৫ ০০:২৭
Share: Save:

রাত তখন সাড়ে দশটা। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-খড়্গপুর শাখার একটি লোকাল ট্রেনে হাতে গোনা কয়েক জন যাত্রী। ট্রেনের জানালার পাশে বসে ছিলেন এক ব্যক্তি। হঠাৎই ধড়ফড়িয়ে লাফিয়ে উঠে গোঁজা জামা টেনে বের করে কী যেন একটা ঝা়ড়তে লাগলেন। কিছু ক্ষণ পরেই জামার ভিতর থেকে বেরিয়ে এল একটি আরশোলা। মাটিতে পড়া মাত্রই সেটিকে থেতলে দিলেন ওই ব্যক্তি।

যাত্রীরা জানান, দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া-খড়্গপুর শাখায় রাতের ট্রেনে এটা খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। শুধু আরশোলা নয়, চারপাশে যত্রতত্র ছড়িয়ে থাকে নোংরা আবর্জনা। সেখানেই কার্যত সংসার পেতে বসেছে আরশোলার দল। সিটের তলায়, দরজার ফাঁকে সর্বত্রই তাদের বিচরণ ভূমি। নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, ট্রেনের কামরায় থাকা নোংরা আবর্জনার কারণেই আরশোলার উৎপাত।

কেন্দ্রে মোদী সরকার আসার পরে শুরু হয়েছে স্বচ্ছ ভারত মিশন। দেশের সর্বত্র পরিচ্ছন্নতার ডাক দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রেলও ঘটা করে স্বচ্ছ ভারত মিশনে যোগ দিয়েছিল। তবুও রেলের এই অবস্থায় বিরক্ত, ক্ষুব্ধ নিত্যযাত্রীরা। তাঁদের অভিযোগ, ট্রেনের কামরায় সিটের নীচে, জানালার পাশে বা দরজার ফাঁকে সর্বত্র একই ছবি। যদিও এর জন্য যাত্রীদের একাংশকেও দায়ী বলে মানেন নিত্যযাত্রীরা। যেমন, হকারদের থেকে খাবার কিনে উচ্ছিষ্ট ট্রেনেই যত্রতত্র ফেলেন। পাশাপাশি ঠিকমতো ট্রেনের কামরাও পরিষ্কার করা হয় না বলে অভিযোগ যাত্রীদের। রাতের দিকে ট্রেনের কামরায় বেশি নোংরা থাকলেও দিনের প্রায় সব সময়ই কামরা অপরিষ্কার থাকে। পড়ে থাকে থার্মোকলের থালা, ডাবের খোল, কাগজ থেকে শুরু করে প্লাস্টিকের নানা ধরনের জিনিস।

রেলের নিয়ম অনুসারে রাতে ট্রেনগুলিকে কারশে়ডে পাঠাতে হয়। সেখানেই ট্রেনের কামরাগুলি পরিষ্কার হওয়ার কথা। কিন্তু যাত্রীদের অভিযোগ, কামরাগুলি ঠিকমতো পরিষ্কার হয় না। শুধু আরশোলা নয়, মাঝেমধ্যেই ইঁদুরেরও দেখা মেলে ট্রেনের কামরায়। এক নিত্যযাত্রী বলেন, ‘‘ট্রেনের কামরা সব সময়ে পরিষ্কার রাখার জন্যে অবিলম্বে ঝাড়ুদার নিয়োগ করতে হবে। তা হলে জঞ্জাল সাফ হবে।’’ অন্য এক নিত্যযাত্রী বলেন ‘‘যাত্রীদেরও দোষ রয়েছে। যাত্রীদের একাংশ খাবার খেয়ে সেই কাগজ বা থার্মোকলের পাত্র ট্রেনের কামরার মধ্যেই ফেলেন।’’

দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘‘সারাদিন ট্রেন চালু থাকে। ট্রেন চলার সময়ে যাত্রীরা থাকেন। ফলে তখন তো আর পরিষ্কার করা যায় না। এক মাত্র রাতেই শেষ ট্রেন এলে পরিষ্কার করা হয়। কিন্তু ট্রেনের কামরাকে পরিষ্কার রাখতে হলে যাত্রীদেরও সচেতন হতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

train Garbage cocorose modi rail
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE