Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

মেয়েকে খুঁজে চলেছেন আচমকা স্মৃতি হারানো ট্রাম্প

এক অ্যাটেন্ড্যান্টের হাত ধরে হাসপাতালের ছ’তলার করিডরে হেঁটে বেড়াতে বেড়াতে ইতিউতি কাউকে খুঁজছিলেন ট্রাম্প। কাকে খুঁজছেন? হাসপাতালের এক কর্তা বললেন, ‘‘মেয়ে ক্যাটরিনাকে।’’ কোথায় তিনি?

হাসপাতালে ট্রাম্প। নিজস্ব চিত্র

হাসপাতালে ট্রাম্প। নিজস্ব চিত্র

সুনন্দ ঘোষ
শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০১৭ ১২:১৫
Share: Save:

এক অ্যাটেন্ড্যান্টের হাত ধরে হাসপাতালের ছ’তলার করিডরে হেঁটে বেড়াতে বেড়াতে ইতিউতি কাউকে খুঁজছিলেন ট্রাম্প। কাকে খুঁজছেন? হাসপাতালের এক কর্তা বললেন, ‘‘মেয়ে ক্যাটরিনাকে।’’ কোথায় তিনি?

জানা গেল, জার্মানির কোলন শহরে থাকেন ক্যাটরিনা। তবু হাসপাতালের করিডরেই মেয়েকে খুঁজে বেড়াচ্ছেন তিনি। তাঁর হিসেব গুলিয়ে গিয়েছে। কলকাতাকেই মনে হচ্ছে কোলন।

ত্রিশ্চিয়ান ট্রাম্পকে (৭৩) রবিবার কলকাতায় নামিয়ে চলে গিয়েছে ইউরোপ উইংসের বিমান। জানা গিয়েছিল, মাঝ আকাশে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন ট্রাম্প। সাড়া দিচ্ছিলেন না। কিন্তু সোমবার হাসপাতালে জার্মান দূতাবাসের অফিসার মাইকেল বুশিঙ্গার বলেন, ‘‘জেনেছি, বিমানের শৌচাগারে ঢুকে বেরোচ্ছিলেন না ট্রাম্প। জোর করে বার করতেই হইচই করেন। তাঁর স্মৃতিভ্রংশ হয়েছে।’’

জার্মান দূতাবাস ট্রাম্পের ইতিহাস বার করেছে। কোলনে স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে থাকতেন ট্রাম্প। ২০ বছর আগে বিবাহ বিচ্ছেদ হয় তাঁর। ১৫ বছর ধরে তাইল্যান্ডে বান্ধবীর সঙ্গে থাকছিলেন ওই বৃদ্ধ। মাইকেলের ধারণা, আচমকা স্মৃতিভ্রংশ হওয়ায় ব্যাঙ্ককের বান্ধবী ট্রাম্পের দায়িত্ব নিতে চাননি।

মাইকেল বলেন, ‘‘পাকাপাকি ভাবে জার্মানি ফিরছিলেন ট্রাম্প। কারণ, একমাত্র মেয়ে ক্যাটরিনা। কিন্তু এখন ওঁর যা অবস্থা দেখছি, তাতে ওঁকে একা বিমানে পাঠানো যাবে না। মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। মেয়ে এলে তাঁর সঙ্গেই যাবে।’’ এ দিন সকালেই ফোনে ট্রাম্পের প্রাক্তন স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন মাইকেল। তিনি জানান, ২২ বছর আগে এক বার হৃদ্‌রোগ হয় ও সে বার স্টেন্ট বসে বুকে। শুধু এটুকুই জানাতে পেরেছেন তিনি। শারীরিক ভাবে আপাত সুস্থ ট্রাম্প। সমস্যা স্মৃতি নিয়ে।

বিপাকে পড়েছেন চার্নক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আশঙ্কা, যে কোনও সময়ে হিংস্র হয়ে উঠতে পারেন ট্রাম্প। বিকেল থেকে জিনিসপত্র ছুড়তে শুরু করেছেন তিনি। আলাদা ঘরে রাখা হয়েছে তাঁকে। কিন্তু ছ’তলার সেই ঘরের কাচের জানলা ভেঙে যে তিনি ঝাঁপ দেবেন না, এমন নিশ্চয়তা দিতে পারছেন না চিকিৎসকেরাও। আবার জেনারেল ওয়ার্ডে তিনি থাকলে অন্য রোগীদের সমস্যা হতে পারে। তাঁর জন্য আপাতত এক জন অ্যাটেন্ড্যান্ট ঠিক করা হলেও এক টানা ২৪ ঘণ্টার জন্য তাঁকে রাখাও সম্ভব নয়। ট্রাম্পের চিকিৎসার খরচই বা কে বহন করবেন, তাও ঠিক হয়নি।

করিডরে কিছুক্ষণ মেয়েকে খুঁজে ট্রাম্প ঘরে ঢুকে যাওয়ার পরে ফলের রস খেতে শুরু করেন। কী করতে চান এখন? প্রশ্ন শুনে ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে বলেন, ‘‘কফি খাব। ক্যাপুচিনো।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

German passenger Christian Trump Dementia
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE