গুলির দাগ পার্ক স্ট্রিটের কলিন লেনের দেওয়ালে। বৃহস্পতিবার স্বাতী চক্রবর্তীর তোলা ছবি।
এন্টালির পরে এ বার মধ্য কলকাতার কলিন লেন! বুধবারের পরে বৃহস্পতিবারের রাত! শহরে ফের প্রকাশ্যে গুলি চলল। আহত হলেন এক যুবক। প্রায় একই সময়ে সোদপুর স্টেশনে বোমা ফেটে দুই যুবক জখম হয়েছেন।
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাত ৯টা নাগাদ পার্ক স্ট্রিট থানা এলাকার কলিন লেনে একটি ক্লাবের সামনে বসে ছিলেন কয়েক জন যুবক। আচমকাই ফ্রি স্কুল স্ট্রিটের দিক থেকে ৭-৮ জন দুষ্কৃতী এসে ওই যুবকদের দিকে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে। দিলওয়ার খান ওরফে বাবর নামে এক যুবকের পেট ছুঁয়ে বেরিয়ে যায় একটি গুলি। তার পরেই দুষ্কৃতীরা কলিন লেন ধরে পালিয়ে যায় বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।
পার্ক স্ট্রিটের কলিন লেনের মতো জনবহুল এলাকায় গুলির ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশ এসে বাবরকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। ঘটনাস্থলে কিছু গুলির খোল পাওয়া গিয়েছে। তবে ঠিক কত রাউন্ড গুলি ছোড়া হয়েছে, পুলিশ তা জানাতে পারেনি। বুধবার রাতে গুলি চলেছিল এন্টালিতে। তাতে এক যুবক আহত হন। তাতে কেউ ধরা পড়েনি।
কলিন লেনে এ দিন রাতে গুলি চলল কেন? কারা চালাল গুলি?
ঠিকঠাক কারণ জানাতে পারেনি পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্যেও ধরা পড়ছে মতভেদ। এক দল বাসিন্দার অভিযোগ, এলাকায় দুষ্কৃতী হিসেবে পরিচিত লালু ও সাবিরের দলই গুলি চালিয়েছে। গাঁজার ব্যবসা করত সাবিরের দল। বাবর এবং এলাকার লোকেরা তার প্রতিবাদ করাতেই সাবিরেরা গুলি চালিয়েছে। বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, এলাকার এক মহিলাকে কটূক্তিকে কেন্দ্র করে বুধবার রাতেই দু’পক্ষের মধ্যে ঝামেলা বাধে। তার জেরেই এ দিন গুলি চালানোর ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের বক্তব্য, আহত বাবরের নামেও তাদের খাতায় একাধিক অভিযোগ রয়েছে। তদন্ত চলছে।
কলিন লেনে যখন গুলি চলছে, প্রায় সেই সময়েই সোদপুরে বোমা ফেটে জখম হন দুই যুবক। পুলিশ জানায়, আহতদের নাম সৌম্যজিৎ চক্রবর্তী ও সুরজিৎ দে। সৌম্যজিতের বাড়ি বেলঘরিয়ায় আর সুরজিৎ ঘোলার বাসিন্দা।
পুলিশি সূত্রের খবর, রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ সোদপুর রেল স্টেশনের চার নম্বর প্লাটফর্মের একটি দোকানে ঠান্ডা পানীয় খাচ্ছিলেন সৌম্যজিৎ ও সুরজিৎ। হঠাৎই ওই দোকানের ত্রিপলের চালের উপরে কিছু পড়ার শব্দ পান সৌম্যজিৎ। পরমুহূর্তেই দু’টো জিনিস গড়িয়ে পড়ে ওই দুই যুবকের পায়ের সামনে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই সেগুলো ফেটে যায়। বোঝা যায়, উপর থেকে পড়া দু’টি জিনিসই আসলে বোমা। গুরুতর আহত হন দুই যুবকই। পুলিশ তাঁদের পানিহাটি হাসপাতালে নিয়ে যায়। দু’জনের শরীরেই স্প্লিন্টার ঢুকে গিয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। বোমার ঘায়ে আশপাশের কয়েকটি দোকানের কাচ ভেঙেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই প্লাটফর্মের উপরেই সোদপুরের উড়ালপুল। সেখান থেকেই বোমা দু’টি প্ল্যাটফর্মের উপরে এসে পড়েছে। উড়ালপুল দিয়ে বোমা নিয়ে যেতে যেতে কোনও ভাবে কয়েকটি নীচে পড়ে গিয়েছে, নাকি ওই দুই যুবক বা অন্য কাউকে তাক করে সেগুলো ছোড়া হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy