এখনও কাটেনি আতঙ্ক। আশিসের সঙ্গে তাঁর মেয়ে অনুসৃতা। রবিবার, বাগুইআটিতে। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য
টাকা আদায়ের উদ্দেশ্যে সাতসকালে বাগুইআটি এলাকার দশদ্রোণের প্রান্তিক আবাসে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে বাড়িতে ঢুকে পড়ল এক ব্যক্তি! বাড়ির মালিক পরবর্তী ঘটনাক্রমের যে বিবরণ দিলেন তা রীতিমতো নাটকীয়। যদিও সেই নাটকীয় বিবরণ যাচাইয়ের প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছেন পুলিশ আধিকারিকদের একাংশ।
প্রান্তিক আবাসের চারতলা বাড়িতে দুই ভাই আশিস দলপতি এবং অরুণ দলপতির পরিবার থাকে। অরুণের দাবি, রবিবার সকাল পৌনে ৭টা নাগাদ তিনি প্রাতর্ভ্রমণে বেরোনোর পাঁচ মিনিট পরে বেলের আওয়াজ শুনে দরজা খুলতে নীচে নামেন আশিস। সদর দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে ঘরে ঢুকে শেখ আসগর নামের এক ব্যক্তি ছেলের চিকিৎসার জন্য দু’লক্ষ টাকা দাবি করে বলে অভিযোগ। আশিস বলেন, ‘‘ব্যাগ থেকে প্রেসক্রিপশন দেখানোর নামে আগ্নেয়াস্ত্র বার করে আমার বুকে ঠেকিয়ে দেয়! ভয় পেয়ে বললাম, ‘টাকা আনতে তো উপরে যেতে হবে।’ এ কথা শুনে একটু অন্যমনস্ক হতেই বন্দুকের নলের মুখ ঘুরিয়ে ডান হাত দেওয়ালে চেপে রাখলাম। কিন্তু তখন সে বাঁ পকেট থেকে ক্ষুর বার করে গলায় ধরল।’’ এর পর ওই অবস্থাতেই ভাইয়ের স্ত্রী চৈতালিকে ডাকেন বলে দাবি আশিসের। তিনতলার জানলা থেকে প্রতিবেশীদের খবর দেন চৈতালি। একই সঙ্গে ছেলেকে বলেন, অরুণকে ফোন করে খবর দিতে।
আশিসের দাবি, মেয়ে অনুসৃতার ক্ষতি করার হুমকি দিলে এক ঝটকায় আসগরকে সরিয়ে উপরে ওঠেন তিনি। চৈতালি বলেন, ‘‘তিনতলা থেকে দেখি দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করে সেজদার পিছনেই উঠে আসছে ছেলেটি।’’ দোতলায় উঠে সাত বছরের অনুসৃতাকে ঘরে ঢুকিয়ে দরজা বন্ধ করে দেন আশিস। এর পর চৈতালিকে পেয়ে আসগর তাঁর চুলের মুঠি ধরে বলে অভিযোগ। আশিসও তখন আসগরের উপরে ঝাঁপিয়ে পড়েন বলে দাবি। এর পরে দু’জনে মিলে অভিযুক্তকে বারান্দার দিকে ঠেলে নিয়ে যান। সেখান থেকে অভিযুক্তের হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র এবং ক্ষুর নীচে ফেলে দেন তাঁরা। তত ক্ষণে প্রতিবেশীদের নিয়ে বাড়ির বাইরে জড়ো হয়েছেন অরুণ। স্থানীয়দের সাহায্যে আসগরকে ধরে ফেলেন তিনি। পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার আগে আসগরকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।
স্থানীয় সূত্রের খবর, নারায়ণপুরের বাসিন্দা আসগর এক সময় অরুণের ভ্যান চালাতেন। সেই সুবাদে দীর্ঘদিন টাকা পাওনা ছিল আসগরের। অরুণ অবশ্য বলেন, ‘‘আমার কোনও ভ্যান নেই। ছেলেটিকেও চিনি না।’’ স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর স্বাতী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কারণ যা-ই হোক। তা বলে এক জনের বাড়িতে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ঢুকে পড়বে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy