সেই ফাটল। — নিজস্ব চিত্র
জিটি রোডের উপরে প্রায় ৬০ ফুট লম্বা ফাটল দেখা দেওয়ায় বৃহস্পতিবার ফের আতঙ্ক ছড়াল হাওড়ার শিবপুরে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক দিন আগে ওই ব্যস্ত রাস্তায় প্রথম ফাটল দেখা যায় শিবপুর বাজারের কাছে নির্মীয়মাণ একটি ১৬ তলা আবাসনের পাশে।
শিবপুর বাজারের কাছে জিটি রোডে ওই ১৬ তলা আবাসন তৈরির কাজ চলছিল গত চার বছর ধরে। ২০১৫ সালের শেষ দিকে আবাসনের সীমানা পাঁচিল ঘেঁষে একটা দেড়তলা সমান ভূগর্ভস্থ জলাধার তৈরির সময় বড়সড় ধস নামে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তখন এলাকায় তীব্র উত্তেজনা ছড়ায়। অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান মানুষ। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, আবাসন তৈরির সময়ে যন্ত্রের কম্পনে আশপাশের বাড়িতে ফাটল ধরে গিয়েছে। একটি বাড়ি হেলেও পড়েছে। রাস্তাতেও ফাটল ধরেছে। ঘটনার পরে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সেই ধস সারিয়ে ব্যস্ত রাস্তায় যান চলাচলের ব্যবস্থা করেন হাওড়া পুরসভা ও পূর্ত দফতরের ইঞ্জিনিয়াররা। অনুমতি না নিয়ে ভূগর্ভস্থ জলাধার করার অভিযোগে হাওড়া পুরসভা সে সময়ে নোটিস ঝুলিয়ে ওই কাজ বন্ধ করে দেয়।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুরসভা কাজ বন্ধ করার কিছু দিন পর থেকেই ফের ওই জলাধার তৈরির কাজ শুরু হয়ে যায়। কিন্তু তাতে পুরসভা আর কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। আর সে কারণেই জিটি রোডে ফের ফাটল ধরে ধস নামার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা গুরপ্রীত সিংহের অভিযোগ, ‘‘পুরসভাকে বারবার জানিয়েও লাভ হয়নি। এখন যে ভাবে রাস্তায় ফাটল ধরেছে, আমরা আশঙ্কা করছি বড় কোনও দুর্ঘটনা ঘটবে।’’ একই অভিযোগ জিটি রোডের পাশে এক ওষুধের দোকানের মালিক অমর চৌধুরীর। তিনি বলেন, ‘‘শুধু রাস্তায় ফাটল নয়, গোটা এলাকার মাটি অনেকটাই বসে গিয়েছে। পুরসভা বা পূর্ত দফতর এত দিন ব্যবস্থা নেয়নি কেন, সেটাই প্রশ্ন।’’
এ ব্যাপারে জেলা পূর্ত দফতরের এগ্জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার শমীজিৎ মাইতি বলেন, ‘‘জিটি রোডের পাশে ওই ভাবে ভূগর্ভস্থ জলাধার করার আগে আবাসন কতৃর্পক্ষ আমাদের কোনও অনুমতি নেয়নি। পুরসভা যদি অনুমতি দেয়, তবেই রাস্তায় ফাটল ধরলে তা সারাবার দায় পুরসভার।’’
হাওড়া পুরসভার মেয়র রথীন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘জলাধার তৈরির কাজ বন্ধ করার পরে কী করে ফের শুরু হল, তা আমরা খোঁজ নিয়ে দেখছি। তবে আমরা কোনও অনুমতি দিইনি। কাগজপত্র খতিয়ে দেখে ওই আবাসন কতৃর্পক্ষের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেব।’’ যদিও আবাসন কতৃর্পক্ষের দাবি, পুরসভার সমস্ত অনুমতি নিয়েই তাঁরা কাজ শুরু করেছেন। সংস্থার তরফে নিশীথ ঝুনঝুনওয়ালা বলেন, ‘‘আমাদের সমস্ত কাগজপত্র রয়েছে। তবে আমাদের কাজের জন্য ফের রাস্তায় ফাটল ধরেছে কি না, তা আমরা নিশ্চই খতিয়ে দেখব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy