আতঙ্ক: ভেঙে পড়া বাড়িটি। মঙ্গলবার, বড়বাজারে। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল।
বাড়ি ভেঙে পড়ে ফের বড়সড় ক্ষয়ক্ষতির থেকে রেহাই পেল শহর।
মাসখানেক আগে বাড়ি ভেঙে দু’জন বেঘোরে মারা গিয়েছিলেন তালতলায়। মঙ্গলবার, স্বাধীনতা দিবসের দুপুরে ফের একটি পুরনো বাড়ি ধসে যেতে দেখল বড়বাজারের অপরিসর গলি। বেলা দু’টো নাগাদ আচমকাই ভেঙে পড়ে ৬৫ নম্বর বড়তলা স্ট্রিটের চারতলা বাড়িটি। তবে এ দিন কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
বিকেলে উল্টো দিকের বাড়ির বারান্দায় দাঁড়িয়ে চৌকিদার পরমেশ্বর মণ্ডল বলছিলেন, ‘‘স্বাধীনতা দিবস তাই রক্ষে! কাজের দিনে এ বাড়িতে কয়েকশো লোক গিজগিজ করে। তখন বাড়ি ভাঙলে কী বিপদ হতো কে বলতে পারে!’’ ভেঙে যাওয়া বাড়ির মুখোমুখি ২৬ নম্বর বড়তলা স্ট্রিটের বাড়িটায় সোনার কাজ হয়। বিহার, ঝাড়খণ্ড, মহারাষ্ট্র থেকে কারিগরের দল পড়ে থেকে কাজ করেন। সোনার গয়নার কিছু শোরুমও আছেন, সেখানে। বাস্তবিক কাজের দিনে দুর্ঘটনা ঘটলে, ভিড়ে ঠাসা গলিতে প্রাণহানির সম্ভাবনা ছিল বিলক্ষণ।
আরও পড়ুন: মণ্ডপে মশা ঠেকাতে পুর উদ্যোগ
ওই বাড়ির আর এক পাহারাদার আনন্দী যাদব এ দিন বলছিলেন, গলিতে স্থানীয় ফল বিক্রেতার থেকে সবেদা কিনে খাচ্ছিলেন তিনি। তখনই একটা পাথরের চাঙড় খসে পড়ল। ফলওয়ালা ও আনন্দী— দু’জনেই দু’দিকে ছিটকে যান। মহারাষ্ট্র থেকে কাজ করতে আসা সোনার দোকানের মজুরেরা বলছিলেন, মুহূর্তে চার দিক ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। ইট-পাথর-সিমেন্টের টুকরো বৃষ্টির মতো খসে পড়তে থাকে।
পুলিশ অবশ্য এত বড় দুর্ঘটনার পরে এখনও কারও বিরুদ্ধে কোনও মামলা দায়ের করেনি। লালবাজারের সেন্ট্রাল ডিভিশনের এক পুলিশ কর্তার কথায়, ‘‘বাড়ির মালিক কে, খুঁটিয়ে দেখছি। গাফিলতি বা দায়িত্বজ্ঞানহীনতার দিকগুলি উড়িয়ে দিচ্ছি না। শীঘ্রই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’’ স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রের খবর, ভেঙে-পড়া বাড়িটির মালিকানা নিয়ে কয়েক জন ভাইয়ের মধ্যে টানাপড়েন ছিল। অনেক দিন বাড়িটা পড়েছিল বিপজ্জনক দশায়। বাড়ির মালিকদের আত্মীয় এক ব্যক্তি একতলায় থাকতেন। এ ছাড়া, বড়বাজারে কর্মরত আরও চার-পাঁচজন বাড়িটায় থাকতেন। দুর্ঘটনার সময়ে তাঁরা কেউ ছিলেন না এটাই বাঁচোয়া।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িটার অর্ধেকই ভেঙে পড়েছে। প্রকাণ্ড হাঁ মুখ গুহার মতো ভাঙাচোরা বাড়িটা দাঁডিয়ে আছে ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy